আজ খবর ডেস্ক: ত্রিপুরার রাজনীতিতে আচমকাই চাঞ্চল্য! মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন বিপ্লব কুমার দেব (Biplab Kumar Deb)।
প্রসঙ্গত গতকালই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের (Amit Shah) ডাকে দিল্লি (Delhi) গিয়েছিলেন বিপ্লব। শনিবার সকালে আগরতলা (Agartala) ফিরেই পদত্যাগের ঘোষণা করলেন। পদত্যাগপত্র (Resignation Letter) জমা দিলেন রাজ্যপালের কাছে।


রাজভবন থেকে বেরিয়ে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় বিপ্লব দেব বলেন, “দল সবার ওপরে। আমি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) নেতৃত্বে এবং নির্দেশে দলের জন্য কাজ করেছি। আমি ত্রিপুরার জনগণের প্রতি ন্যায় বিচার করার চেষ্টা করেছি। দলের রাজ্য ইউনিট এবং মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে আমি দলের শান্তি, উন্নয়ন এবং রাজ্য কে কোভিড সংকট থেকে বের করে আনার চেষ্টা করেছি।”

মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে বিপ্লব দেবের হঠাৎ এই ইস্তফায় শনিবার দুপুরে কার্যত হইচই পড়ে গিয়েছে আগরতলায়। বিপ্লবের ইস্তফার পর শনিবার বিকেল ৫ টা নাগাদ বিজেপি পরিষদীয় দলের বৈঠক ডাকা হয়েছে। ওই বৈঠকে নতুন নেতা নির্বাচন করা হবে।


এই প্রসঙ্গে মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বিপ্লব দেব আরও জানিয়েছেন, “প্রত্যেক কিছুর-ই একটা সময় সীমা থাকে। আমরা সেই সময় সীমার মধ্যেই কাজ করি। আমাকে যেখানেই পাঠানো হোক না কেন, সেটা মুখ্যমন্ত্রী হোক বা অন্য যে কোনও পদ, বিপ্লব দেব সব জায়গায় ফিট হতে পারেন”।

বিজেপির বিধায়কদের বৈঠকে রাজ্যের নতুন মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচন করা হবে। শনিবার সন্ধের মধ্যেই রাজ্যের নতুন মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করা হবে।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ভূপিন্দর যাদব এবং বিজেপির সাধারণ সম্পাদক বিনোদ তাওড়ে’কে বিজেপির (BJP) পরিষদীয় দলের বৈঠকের জন্য কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক করা হয়েছে।
দলের একটি সূত্রের মতে, নতুন মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন মানিক সাহা। যদিও তিনি বিধায়ক নন। ত্রিপুরা বিজেপির সভাপতি। ফলে তাঁকে ছ’মাসের মধ্যে উপনির্বাচনে জিতে আসতে হবে। আবার একটি মহল বলছে, জনজাতি ভোট টানতে উপমুখ্যমন্ত্রী যিষ্ণু দেববর্মাকে মুখ্যমন্ত্রী করতে পারে বিজেপি।

বিপ্লব কুমার দেবের পদত্যাগের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে, সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস (AITC) টুইট (Tweet) করেছে, “ত্রিপুরায় হাজার হাজার লোককে হতাশ করে দেওয়া মুখ্যমন্ত্রীকে বিদায় এবং শুভ পরিত্রাণ! যথেষ্ট ক্ষতি হয়েছে। এমনকি বিজেপির শীর্ষ কর্তারাও ওনার অক্ষমতায় বিরক্ত। বিজেপির কর্মী-সমর্থকরাও এই রাজ্যে টিএমসি যা সংগঠন তৈরি করেছে তাতে বিচলিত ও চিন্তিত। পরিবর্তন অনিবার্য।”

প্রসঙ্গত, বিপ্লব দেবের পদত্যাগের পর থেকেই গোটা ত্রিপুরা জুড়ে প্রশ্ন উঠেছে হঠাৎ কেন এই সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি? এমনকি গেরুয়া শিবিরের একটি অংশ বলছে, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশে পদত্যাগ করলেন বিপ্লব দেব।
মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে বিপ্লবের একের পর এক মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। দলের মধ্যেও তাঁর বিরুদ্ধে বহু নেতা অসন্তুষ্ট। এহেন পরিস্থিতিতে বিপ্লব একবার গণভোটের পর্যন্ত ডাক দিয়ে দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, তিনি মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন কিনা তা গণভোটে স্থির হবে।
বিপ্লবের সেই ঘোষণা শুনে রীতিমত ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন অমিত শাহ। বিপ্লবকে ফোন করে ধমক দিয়েছিলেন বলেও খবর রটে জয় সর্বত্র। ফলে সে যাত্রায় গণভোট থেকে পিছিয়ে এসেছিলেন বিপ্লব।


আগামী বছর ত্রিপুরায় বিধানসভা নির্বাচন। অনেকের মতে, বিপ্লবের কারণে যে প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা (Anti Incumbency) তৈরি হচ্ছিল, তা মোকাবিলা করতেই সম্ভবত তাঁকে সরানো হয়েছে। আবার ত্রিপুরায় জনজাতি ভোট ফ্যাক্টর। সেখানে নতুন করে মাথা তুলেছে তিপ্রা মোথা। ফলে সব মিলিয়ে বিপ্লবের ইস্তফা জমিয়ে দিল ত্রিপুরার রাজনীতি।
তবে আপাতত ৬০ আসনের ত্রিপুরা বিধানসভায় ১৬ জন (একজন সম্প্রতি মারা গিয়েছেন) বিধায়ক নিয়ে প্রধান বিরোধীদল সিপিআইএম (CPIM)।

ডা: মানিক সাহা

এইমাত্র পাওয়া খবর অনুযায়ী, পদত্যাগ করলেন প্রদেশ বিজেপি সভাপতি, ডা: মানিক সাহা। ত্রিপুরা বিজেপির তরফে, ডা: মানিক সাহার নাম রাজ্যের নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ঘোষনা করা হল।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *