আজ খবর ডেস্ক: উল্লেখযোগ্য সাফল্য সেই ২০১৯ সালে। এক লাফে এই রাজ্য থেকে ১৮ জন সাংসদ পেয়েছিল গেরুয়া শিবির। কিন্তু তারপর থেকেই খরা। ২১এ ২০০ টার্গেট ছিল। ১০০ পেরোয় নি!
এখন বিজেপি ছেড়ে বিধায়ক, সাংসদ’দের তৃণমূলে আসা প্রায় রুটিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।


রাজ্য রাজনীতিতে পরবর্তী ভোট ২০২৩ এ। তবে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই মুহূর্তে সংগঠনের যা অবস্থা তাতে পঞ্চায়েত ভোটে লড়াই কঠিন বিজেপি’র(BJP)।
গেরুয়া শিবিরের একাংশ মনে করছে, ফের ২০২৪ লোকসভা নির্বাচন’কে “পাখির চোখ” করতে চাইছে শীর্ষ নেতৃত্ব।
তাই কি যুদ্ধের আগে “পঞ্চ পান্ডব” কে বেছে নেওয়া হল?
বলা ভাল, বেছে নিলেন অমিত শাহ (Amit Shah)?

অনেকদিন ধরেই বিজেপি অন্দরে আদি-নব্য সংঘাত চলছে। আদি অর্থাৎ রাহুল সিনহা(Rahul Sinha), দিলীপ ঘোষের(Dilip Ghosh) মত যাঁরা প্রথম থেকেই বিজেপিতে রয়েছেন। নব্য অর্থে প্রথমেই যে নাম মনে আসে তিনি হলেন শুভেন্দু অধিকারী(Suvendu Adhikari)। অবশ্য তৃণমূল থেকে একতা বিজেপিতে আশা বহু নেতাই এখন প্রত্যাবর্তন করেছেন পুরনো দলে। শুভেন্দু ছাড়া আর যাঁরা রয়েছেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম দুই সাংসদ অর্জুন সিং(Arjun Singh) এবং সৌমিত্র খাঁ(Saumitra Khan)।

দলে বা সংগঠনে কার গুরুত্ব বেশি? কার কথা শেষ কথা? এ নিয়েও বহুদিন ধরে দড়ি টানাটানি অব্যাহত। তবে এবার বিজেপি কর্মীদের একটা বড় অংশ বলছেন, দু’দিনের রাজ্য সফরে এসে বঙ্গ বিজেপির পঞ্চপান্ডব কে বেছে দিয়ে গেলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সেই সঙ্গে এই রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ব্যাটন কাদের হাতে থাকবে, প্রকারান্তরে সেটাও বুঝিয়ে দিয়ে গেলেন দলের নেতা কর্মীদের।

এক ঝলকে দেখে নেওয়া যাক সেই পঞ্চ পান্ডব কে। যাঁদের ওপর আস্থা রাখছেন মোদি থেকে শাহ, জেপি নাড্ডা Nadda) থেকে বিএল সন্তোষ(BL Santosh)।
১) শুভেন্দু অধিকারী: বর্তমানে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে আসেন। রাজ্যের প্রাক্তন পরিবহণমন্ত্রী। ২১এর নির্বাচনে নন্দীগ্রাম থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে হারানো শুভেন্দুর সবথেকে বড় প্লাস পয়েন্ট।


২) সুকান্ত মজুমদার: বর্তমানে বিজেপির রাজ্য সভাপতি। বালুরঘাটের সাংসদ। গেরুয়া শিবিরের অন্দরে দুটি কথা প্রচলিত সুকান্ত সম্পর্কে। প্রথমত, তিনি “শুভেন্দু অধিকারীর লোক”। দ্বিতীয়ত, একটু মুখচোরা, দিলীপ ঘোষের মত ডাকাবুকো নন।

৩) অমিতাভ চক্রবর্তী: বঙ্গ বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন)। রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের শুরুতে তিনি ছিলেন আর এস এস(RSS) – এ। ইতিমধ্যে যারা দল ছেড়েছেন তাদের অনেকেই দলে গুরুত্ব না পাওয়ার জন্য অমিতাভও কে দায়ী করেছেন। তবে তা নিয়ে বিন্দুমাত্র প্রতিক্রিয়া জানাননি এই প্রাক্তন আরএসএস প্রচারক।


৪) অমিত মালব্য: কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক। ২১ এর বিধানসভা ভোটের পর থেকে পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বে। অনেকেই বলেন, বিজেপির আইটি সেলের(IT Cell) সর্বভারতীয় প্রধান অমিত মালব্য কে কৈলাশ বিজয়বর্গীর স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছে।


৫) জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়: প্রাক্তন এই সাংবাদিক বর্তমানে বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক। একসময় আরএসএস করতেন।

গেরুয়া অন্দরে অবশ্য আলাদা আলাদা সমীকরণ এখনও চলছে। যেমন অমিতাভ চক্রবর্তী কে অপছন্দ দিলীপ ঘোষের। রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের বিরুদ্ধেও দলের ভেতর একটি গোষ্ঠী রয়েছে। আবার রাজ্যে পর্যবেক্ষকের দায়িত্বে থাকা অমিত মালব্য কে অনেকেই পছন্দ করছেন না।


অন্যদিকে শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে প্রধান অভিযোগ, অন্যের কথাকে গুরুত্ব না দিয়ে নিজের মত সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
তবে এতকিছুর পরেও, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব যে এই পাঁচ জনের ওপরেই ভরসা রাখছে শুক্রবার রাতে নিউটাউনের বৈঠকে কার্যত তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন অমিত শাহ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *