আজ খবর ডেস্ক: বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই বঙ্গ বিজেপিতে ক্ষোভ-বিক্ষোভ বাড়ছিল। মুকুল রায়(Mukul Roy), রাজীব ব্যানার্জি (Rajib Banerjee), সব্যসাচী দত্ত (Sabyasachi Dutta) সহ অনেকেই ফিরে এসেছেন পুরনো দল তৃণমূলে।


অর্জুন সিংয়ের পরে সেই লাইনে পরবর্তী নাম কাদের? শুধুমাত্র বঙ্গ বিজেপি নয়, রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে ও সেই নিয়ে চলছে জোর জল্পনা। এর মধ্যেই তৃণমূল থেকে একসময় বিজেপিতে যাওয়া দুই নেতা এদিন সকাল থেকে পরপর বোমা ফাটিয়েছেন।

২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের আগে অর্জুনের মতই তৃণমূল কংগ্রেস (AITC) ছেড়ে বিজেপিতে (BJP) নাম লিখিয়েছিলেন অনুপম হাজরা(Anupam Hazra) এবং সৌমিত্র খাঁ(Saumitra Khan)।
বোলপুরের (Bolpur) সাংসদ ছিলেন অনুপম। বিষ্ণুপুরের (Bishnupur) সাংসদ ছিলেন সৌমিত্র। অনুপম এখন আর সাংসদ নেই। তবে গত বেশ কয়েক মাস ধরেই সমাজ মাধ্যমে তাঁর একের পর এক পোস্ট নজর কেড়েছে। যেখানে দেখা গিয়েছে, বিভিন্ন ইস্যুতে তিনি সরাসরি বিজেপির সমালোচনা করছেন।

এরপরই রাজনৈতিক মহলে চর্চা শুরু হয়েছিল, অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে ঝামেলা মিটিয়ে পুরনো দল তৃণমূল কংগ্রেসে ফের ফিরে আসছেন অনুপম হাজরা। এখন যখন গরু পাচার, ভোট-পরবর্তী হিংসা সহ নানান ইস্যুতে বারবার বীরভূমের তৃণমূল কংগ্রেস জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল কে সিবিআই জেরার সম্মুখীন হতে হচ্ছে, সেসময় অনুপম হাজরার বিজেপি’কে সমালোচনা করে পোস্ট যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
গতকাল অর্জুন তৃণমূল কংগ্রেসের যোগ দিয়েছেন। আর আজ সকালে অনুপম সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, “কেউ দল ছাড়লেন এতে কোনো ক্ষতি হবে না, বা গুরুত্ব দিতে নারাজ বলে নিজেদের সান্তনা না দিয়ে ক্ষতি যে কিছুটা হয়ে গেল সেটা মানতে শেখা দরকার….”।

অন্যদিকে সেদিন দুপুরেই সাংবাদিক সম্মেলন করেন সৌমিত্র খাঁ। গতবছর জানুয়ারি মাসে রাঢ়বঙ্গকে নিয়ে পৃথক রাজ্যের ইঙ্গিত দিয়ে বিতর্ক তৈরি করেছিলেন বিষ্ণুপুরের সাংসদ।


সোমবার ফের প্রায় একই দাবি তুললেন তিনি । বললেন, জঙ্গলমহলকে নিয়ে পৃথক রাজ্য করতে হবে। তাঁর দাবি, রাঢ় বাংলাকে পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে রাখার কোনও মানে হয় না।
তিনি আরও বলেন, রাজ্যে ২৩ টি জেলা ভেঙে ৪৬ টি জেলা করা হলে কেন তাঁরা আলাদা জঙ্গলমহল রাজ্য চাইবেন না। কলকাতা যেভাবে জঙ্গলমহলকে সবদিক থেকে বঞ্চিত করে চলেছে তাতে তিনি জঙ্গলমহল রাজ্যের দাবির পক্ষে। এদিন বিজেপির বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে এভাবেই রাজ্যভাগের পক্ষে সওয়াল করলেন বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে তৃণমূলের তরফে বলা হয়, “এখন একটু গরম পড়েছে, আবার অর্জুন সিং জোর ধাক্কা দিয়েছেন, অন্যদিকে সুজাতা খাঁ অনেক যুক্তিসম্মত রাজনীতি করছেন। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে সৌমিত্র খাঁ কী প্রলাপ বকছেন তার জবাব দেওয়া বেশ কঠিন। এটা সুজাতা আরও ভালে বলতে পারবে। ও আলাদা রাজ্য চায় নাকি এখানে থাকতে চায়।”

প্রসঙ্গত দিন কয়েক আগেই বঙ্গ বিজেপি সম্পর্কে অর্জুন সিং(Arjun Singh) বলেছিলেন, এরা সব এসি ঘরে বসে বিবৃতি দেওয়া, ফেসবুকে রাজনীতি করা লোকজন। এদের সঙ্গে বাংলার মাটির ও সংস্কৃতির কোনও যোগাযোগ নেই।


এদিকে বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলার তৃণমূল কংগ্রেস চেয়ারম্যান শ্যামল সাঁতরা বলেন, “মাঝে মাঝেই ওঁর মাথায় বিকৃতি ঘটে ও খবরে আসার জন্য এই ধরনের বিবৃতি উনি দেন। মানুষের উন্নয়ন, রাজ্যের  উন্নয়ন, দেশের  উন্নয়নের দায়িত্ব পালন বিজেপির নেতারা করছেন না।”


তবে রাজনীতির কারবারিরা বলছেন, অর্জুনের পর আপাতত ৩ “বেসুরো” বিজেপিতে রয়েছেন। যাঁরা একসময় তৃণমূল ছেড়ে গেরুয়া শিবিরে এসেছিলেন। সৌমিত্র খাঁ, অনুপম হাজরা ছাড়াও আসানসোলের জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে নিয়ে জোর জল্পনা চলছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *