আজ খবর ডেস্ক: কলকাতার বউবাজারে আবার ফিরল আতঙ্ক। মেট্রোর কাজে বাড়িতে ফাটলের পুনরাবৃত্তি হল। আড়াই বছর পর নতুন করে বউবাজার এলাকার একাধিক বাড়িতে ফাটল দেখা দিল।
সূত্রের খবর, গত বুধবার বিকেলের পর দুর্গাপিতুরি লেনের ১০টির বেশি বাড়িতে নতুন করে দেখা দিয়েছে ফাটল। ভিটে হারায় প্রায় ২৮টি পরিবার। বউবাজারের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এদিন সকালে ঘটনাস্থলে যান কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য এদিনই মেট্রো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে বসবে কলকাতা পুরসভা। ঘটনাস্থল ঘুরে দেখে জানিয়েছেন মেয়র। ২০১৯-এর গাফিলতির পরিণাম এই ফাটল, মেট্রো কর্তৃপক্ষকে দুষে মন্তব্য মেয়রের। পুলিশ ইতিমধ্যেই ওই এলাকা থেকে ৮২ জনকে হোটেলে সরিয়েছে।
হোটেলেই তাদের থাকা-খাওয়ার বন্দোবস্ত করেছে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, যারা দু’তিন বছর আগে বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন, তারা এখনও নিজের ভিটেয় ফিরতে পারেনি৷ তাই এবার আর নিজেদের বাড়ি ছেড়ে বেরোতে নারাজ স্থানীয় বাসিন্দারা৷
ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন এলাকার কাউন্সিলর বিশ্বরূপ দে৷ এলাকায় গিয়ে ক্ষোভের মুখে পড়েন স্থানীয় বিধায়ক নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়ও৷
মেট্রো সূত্রে খবর, ওই অংশে সুড়ঙ্গ তৈরির কাজ শেষ৷ বর্তমানে সুড়ঙ্গে কংক্রিট ঢালাইয়ের কাজ চলছে৷ পাশাপাশি উর্বি ও চান্ডি নামে দু’টি টানেল বোরিং মেশিনকে বিভিন্ন অংশে খন্ডিত করে মাটির নীচ থেকে তোলার কাজ চলছে৷
বিশেষজ্ঞদের মতে, গত দু’দিনে শহরে প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে যথেষ্ট পরিমাণে বেড়েছে ভূগর্ভস্থ একুইফারে (aquifer) জলের পরিমাণ। এর ফলে ফাটল ধরতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
তবে, ফাটল ধরার কারণ নিয়ে কিছু বলেনি মেট্রো রেলের আধিকারিকরা। ২০১৯-এর ফাটল ধরার ঘটনার পর মেট্রোর সুড়ঙ্গে ২৪ ঘণ্টা ক্যামেরা বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। যাতে সুড়ঙ্গের নীচে কোনও বিপর্যয় দেখা দিলে তা ক্যামেরায় ধরা পড়ে। এখন সেই ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এদিকে বাসিন্দারা বলছেন যে, শুধু বাড়ি নয়, রাস্তাতেও ফাটল দেখা গেছে। ফাটল দেখা যাওয়ার পর অনেকক্ষণ পর্যন্ত মেট্রোর আধিকারিকদের দেখা মেলেনি। পরে তাঁরা এসে এলাকা ঘুরে দেখেন। পরিচয়পত্র নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন। তবে কোথায় নিয়ে যাওয়া হবে সে নিয়ে কিছু বলা হয়নি বলে তাদের দাবি।
বাড়িঘর ভেঙে পড়বে কিনা সে নিয়েও আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। কান্নায় ভেঙে পড়েছেন অনেকে। স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রশ্ন, ‘প্রাণ ভয়ে আমরা রাস্তায় নেমে এসেছি৷ কিন্তু কার ভরসায় কোথায় যাব?’