আজ খবর ডেস্ক: বদল আসন্ন! হয়ত আগামী কাল। অর্থাৎ যুব সম্মেলনের (Youth Conference) শেষ পর্বে, রবিবার বিকেলে কি নতুন চমক? নতুন সম্পাদক? আপাতত সেই প্রশ্ন আবর্তিত হচ্ছে “দিয়েগো মারাদোনা”(EZCC) নগরের আনাচে-কানাচে।
ইতিমধ্যেই ডিওয়াইএফআই (DYFI) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের তরফে জমা দেওয়া হয়েছে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট। শনিবার সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে একদিকে যখন আলোচনা, সেমিনার চলছে, অন্যদিকে আমন্ত্রিত সদস্যদের মধ্যে চলছে জোর জল্পনা।

২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল নির্মম তথ্য তুলে দিয়েছিল বাম (Left) দলগুলোর হাতে। এই মুহূর্তে রাজ্য বিধানসভায় একমাত্র নওশাদ সিদ্দিকী (Naushad Siddiqui), বাম সমর্থিত বিধায়ক।
সংগঠনের খারাপ অবস্থাতেই মাস খানেক আগে সম্পন্ন হয়েছে সিপিএমের (CPIM) রাজ্য সম্মেলন। সূর্যকান্ত মিশ্র’র জায়গায় নয়া রাজ্য সম্পাদক হয়েছেন মহম্মদ সেলিম (Md. Salim)। আলিমুদ্দিন প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনের অন্দরে খবর, মূল দলের সদস্যসংখ্যা কমলেও যুব সিপিএমের সদস্যসংখ্যা কিছুটা হলেও বেড়েছে।


সর্বশেষ হিসেবে দেখা যাচ্ছে, রাজ্যে ডিওয়াইএফআইয়ের সদস্যসংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৫০ হাজার। সিপিএমের তরফে তাই আগামী দিনে ছাত্র-যুব’দের সামনে রেখেই নতুন লড়াইয়ের প্রস্তুতি চলছে।
যুব সংগঠনের সর্বভারতীয় মুখ হিসেবে এই রাজ্য থেকেই বেছে নেওয়া হতে চলেছে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক কে। যদিও এই মুহূর্তে ডিওয়াইএফআইয়ের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন এক বঙ্গ তনয় অভয় মুখোপাধ্যায়।

কিন্তু সবকিছু ঠিকঠাক চললে আগামীকাল অর্থাৎ রবিবার ডিওয়াইএফআই এর নতুন সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হিসেবে বেছে নেওয়া হতে পারে দক্ষিণ ২৪ পরগণার যুবনেতা হিমঘ্নরাজ ভট্টাচার্য (Himaghnaraj Bhattacharya) কে। এই মুহূর্তে তিনি ডিওয়াইএফআইয়ের কেন্দ্রীয় সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য।

হিমঘ্নরাজ ভট্টাচার্য

আগামী দিনে কীভাবে এগোবে সিপিএমের যুব আন্দোলন? তা নিয়ে আলোচনা। ডিওয়াইএফআইয়ের একাদশতম সর্বভারতীয় সম্মেলনে দেশ-বিদেশ থেকে যোগ দিয়েছেন পাঁচ শতাধিক প্রতিনিধি। বাম যুব সংগঠনের দাবি, গত তিন বছরে দেশে সদস্যসংখ্যা বেড়েছে ৪ লক্ষ।
বিধাননগরে সম্মেলনের জন্য যে সাংগঠনিক রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে, তার হিসেব অনুযায়ী ২০২১-২২ সালে ডিওয়াইএফআইয়ের সদস্যসংখ্যা প্রায় ৫০ হাজার বেড়েছে। আগের বছর (২০২০-২১) অবশ্য সদস্যসংখ্যা বেড়েছিল আরও বেশি, প্রায় এক লক্ষ। তবে কোভিড পরিস্থিতির কারণে বন্ধ ছিল সাংগঠনিক যাবতীয় কর্মসূচি।

শুক্রবার অর্থাৎ সম্মেলনের প্রথম দিনেই সংগঠনের প্রাক্তন রাজ্যসম্পাদক এবং রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের কাছ থেকে এসেছে বিশেষ বার্তা।
১১তম সারা ভারত সম্মলনের উদ্বোধনী মঞ্চে পড়ে শোনানো হল বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের বার্তা।
তাঁর বার্তা, “দেশ একটা ভয়ানক অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। জনবিরোধী যে সরকার চলছে তা প্রতিহত করতে পারে একমাত্র বামপন্থী আন্দোলন। সেই লক্ষ্যে অবিচল থেকে সমস্ত প্রতিকূলতা অগ্রাহ্য করে পশ্চিমবঙ্গের DYFI কর্মীরা রাজ্যের সর্বত্র প্রতিদিন আন্দোলন সংগঠিত করছেন। তাঁদের সংগ্রামকে আমার আন্তরিক অভিনন্দন এবং DYFI-এর এই সম্মেলনের সমস্ত সদস্যবৃন্দকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই।”

উল্লেখ্য শুক্রবার সল্টলেকের EZCC ভবনে শুরু হয়েছে DYFI-এর ১১তম সারা ভারত সম্মেলন। বিভিন্ন রাজ্য থেকে CPIM যুব সংগঠনের নেতৃত্ব এবং প্রতিনিধিরা এই সম্মেলনে যোগদান করেছেন। পতাকা উত্তোলন করে এই সম্মলনের উদ্বোধন করেন DYFI-এর সর্বভারতীয় সভাপতি মহম্মদ রিয়াজ। ডিওয়াইএফআইয়ের একাদশ সর্বভারতীয় সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক সূচনা করেছেন পি শশীকুমার।

উদ্বোধনী-পর্বে বক্তা ছিলেন অভ্যর্থনা কমিটির চেয়ারম্যান ও অভিনেতা সব্যসাচী চক্রবর্তী, যুব সংগঠনের প্রথম সর্বভারতীয় সম্পাদক তথা বর্তমান কৃষক সভার নেতা হান্নান মোল্লা, সিটুর সাধারণ সম্পাদক তপন সেন, মহিলা সমিতির সাধারণ সম্পাদক মারিয়ম ধওয়েলে, এসএফআইয়ের সাধারণ সম্পাদক ময়ূখ বিশ্বাসেরা। স্বাগত ভাষণ দেন অভিনেতা সব্যসাচী চক্রবর্তী তাঁর ‘বামপন্থী ছিলাম, আছি, থাকব’ মন্তব্য ইতিমধ্যেই নেটপাড়ায় ভাইরাল। বিশেষ নজর কেড়েছেন রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের (Minakshi Mukherjee) বক্তব্যও।
ছাত্র-যুব’দের সামনে রেখেই আগামী দিনে আন্দোলনের পরিকল্পনা নিচ্ছে সিপিআইএম।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *