আজ খবর ডেস্ক: সন্তান বুদ্ধিমান হোক, তা আর কোন মা-বাবা না চান? জানেন কি, শিশুর জন্মের পর থেকেই তার নানা স্বভাব ও অভ্যাসই বলে দিতে পারে সে আদৌ বুদ্ধিমান হবে কি না। সন্তানের নানা কাজকর্মের দিকে একটু খেয়াল করলেই বুঝবেন তার মধ্যে বুদ্ধিমান হয়ে ওঠার কোনও লক্ষণ আছে কি না।

১) আপনার বাচ্চা যদি গল্প শোনার সময় শব্দ ও বইয়ের প্রতি আকৃষ্ট হয়, ১৪ মাস বয়সেই বাক্য তৈরি করতে শিখে যায়, তাহলে বুঝতে হবে আপনার শিশুটির মধ্যে প্রতিভা রয়েছে। কিছু কিছু বাচ্চা আবার অভিভাবকদের মৌখিক নির্দেশ সহজে পালন করতে বা বুঝতে পারে। শিশুমনরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, এক বছরের আশপাশে পৌঁছলে তবেই শিশু দু’-একটা শব্দ বলতে শেখে, দেড় বছরের মাথায় তা আরও স্পষ্ট হয়।

২) যদি আপনার সন্তানের মধ্যে কথা বলতে শেখার প্রবণতা আরও তাড়াতাড়ি আসে, তা হলে বুঝতে হবে সন্তান বুদ্ধিমান। তার শেখার ক্ষমতা অন্যদের চেয়ে বেশি সক্রিয়।

৩) অচেনা কারও সঙ্গে শিশু কি সহজেই মানিয়ে নিতে পারে? যদি তেমন হয়, তা হলে যোগাযোগ ও সম্পর্ক তৈরির ক্ষেত্রে আপনার সন্তান অনেকটা এগিয়ে।
৪) বাড়িতে পোষ্য থাকলে তার প্রতিও শিশুর ব্যবহার লক্ষ্য রাখুন। এতে শিশুর সাহস ও মানসিক বিকাশের পরিমাপ বোঝা যায়।

৫) বুদ্ধিমান বাচ্চাদের মধ্যে প্রবল আবেগপ্রবণতা থাকে। এরা ইতিবাচক ও নেতিবাচক ধারণা অনুভব করতে পারে।

৬) খুব একগুঁয়ে হওয়া যেমন সমস্যার, তেমনই শিশুর একটু-আধটু জেদ থাকাকে ইতিবাচক হিসাবেই দেখছেন চিকিৎসকরা।
তাঁদের মতে, কোনও বিষয়ে একেবারেই একগুঁয়ে না হলে শিশুর নিজস্ব বিচার ক্ষমতা ও দৃঢ়তা তৈরি হয় না। অন্যান্য শিশুদের থেকে কিছুটা এগিয়ে থাকে জিনিয়াস বাচ্চারা। অন্য সমবয়সি বাচ্চাদের তুলনায় নিজের সার্বিক বিকাশের স্তরটি আগে পেরিয়ে যায় এই বাচ্চারা।

৭) সময়ের আগে বসতে, হাঁটতে, বলতে, ধরতে বা কিছু তুলতে শিখে গেলে বুঝতে হবে যে অন্যান্যদের তুলনায় আপনার সন্তান এগিয়ে রয়েছে। বাবা-মা যদি ভিন্ন ভাষাভাষী হয়ে থাকেন, তাহলে সন্তানের সঙ্গে নানান ভাষায় কথা বলুন।
একাধিক ভাষার জ্ঞান রয়েছে এমন মা-বাবার সন্তান আইকিউ টেস্টে ভালো ফল করে।
ঠিক সেভাবেই, ভাল স্মৃতিশক্তিও বাচ্চাদের প্রতিভার অন্যতম লক্ষণ। এটিও তাদের বুদ্ধিমত্তার মাপকাঠি।

৮) কথায় কথায় প্রশ্ন করে সন্তান উত্যক্ত করে আপনাকে? সব বিষয়েই কী-কেন-কী ভাবে— এ সব প্রশ্ন লেগেই থাকে সন্তানের মুখে? তা হলে বিরক্ত না হয়ে আনন্দিত হওয়া উচিত। কৌতূহলী শিশু মানেই, ধরে নেওয়া হয় তার বুদ্ধি অন্যদের চেয়ে বেশি।

৯) কিছু পেলে তা খুলে তার কল-কব্জা বার করে ফেলার প্রবণতা আছে শিশুর? জিনিসের যত্ন জানে না ভেবে এতে বিরক্ত হবেন না, সাধারণত, এরা কৌতূহলী হয়। নিজেই বুঝতে চেষ্টা করে জিনিসের ভিতরে আরও কী কী আছে। আপাত দৃষ্টিতে তা অযত্ন বলে মনে হলেও এটি আদতে শিশুর জানতে চাওয়ার লক্ষণ।

তবে চিকিৎসকরা বলেন, এগুলো হল প্রাথমিক লক্ষণ। যেমন চোখে চোখ রেখে কথা বলতে না পারলে (eye contact), অথবা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত না করলে (Reaction) বুঝে নিতে হবে সেই শিশুর কিছু সমস্যা আছে। বহু ক্ষেত্রেই তা পরবর্তী সময়ে অটিজমের (Autism) দিকে যেতে পারে।
সেইসঙ্গে চিকিৎসকরা বলছেন, সন্তানের হাতে মোবাইল ধরিয়ে না দিয়ে বাবা-মা এবং বাড়ির সদস্যদের উচিত তার সঙ্গে অনেকক্ষণ ধরে কথা বলা। খেলাধুলা করা। এতে আখেরে আপনার বাচ্চারই উপকার হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *