আজ খবর ডেস্ক: আজভস্টালে (Azovstal) ভেঙে পড়ছে প্রতিরোধের শেষ দূর্গ। প্রবল রুশ হামলার মুখে মারিওপোলে আত্মসমর্পণ করেছে ৭০০ ইউক্রেনীয় সেনা। এমনটি দাবি করেছে রাশিয়া। এদিকে, কিয়েভে ফের দূতাবাস খুলেছে আমেরিকা। প্রায় দু’মাস ধরে চলা লড়াইয়ের পর গোটা মারিওপোল শহরই এখন রুশ বাহিনীর দখলে।

তবে শহরটির আজভস্টাল লৌহ ও ইস্পাত কেন্দ্রে ঘাঁটি গেড়ে লড়াই চালাচ্ছে ইউক্রেনীয় সেনার বিশেষ বাহিনী আজভ ব্যাটালিয়ন ও ৩৬ মেরিন ব্রিগেড। কিন্তু তাঁদের অধিকাংশই আহত। পানীয় জল, খাবার ও গোলাবারুদ দ্রুত ফুরিয়ে আসছে। ওই ইস্পাত কারখানার নিচে সোভিয়েত আমলে তৈরি সুড়ঙ্গে আশ্রয় নিয়েছেন বহু মানুষ।

আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, মারিওপোলে আটকে থাকা সৈনিকদের লড়াই থামানোর নির্দেশ দিয়েছে জেলেনস্কি সরকার। কিন্তু সংঘর্ষ থামছে না। বুধবার রুশপন্থী বিদ্রোহী বাহিনীর কমান্ডার ডেনিস পুশিলিন জানিয়েছেন, আজভস্টালে ইউক্রেনীয় ফৌজের কমান্ডাররা লুকিয়ে রয়েছেন।

এদিকে, ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ওলেকসান্দ্র মতুজায়নিক জানিয়েছেন, “মারিওপোলে আটকে থাকা সৈনিকদের উদ্ধারের কাজ চলছে। এর বেশি কিছু বলার অর্থ হচ্ছে ওই যোদ্ধাদের জীবন বিপন্ন করা।”

তবে মস্কোর তরফে নিরাপত্তার আশ্বাস মিললেও যুদ্ধবন্দি ইউক্রেনের জওয়ানেরা ঘরে না ফেরা পর্যন্ত স্বস্তি মিলছে না কিয়েভ প্রশাসনের। গত মঙ্গলবার কিয়েভ জানিয়েছে ২৫০ জন সৈনিক মারিওপোলে আত্মসমর্পণ করেছে। তবে এখনও সেখানে কতজন সেনা রয়েছে সেই বিষয়ে কিছু জানায়নি জেলেনস্কি (Zelensky) প্রশাসন।

এছাড়াও, রাশিয়া বুধবার জানিয়েছে যে তারা ইউক্রেনে একটি নতুন প্রজন্মের শক্তিশালী লেজার অস্ত্র ব্যবহার করছে।

রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিন (Vladimir Putin) ২০১৮ সালে একটি আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (ICBM), জলের নিচের পারমাণবিক ড্রোন, একটি সুপারসনিক অস্ত্র এবং একটি লেজার অস্ত্র উন্মোচন করেছিলেন।

ইউরি বরিসভ

নতুন লেজারের বিশেষত্ব সম্পর্কে খুব কমই জানা যায়। সামরিক উন্নয়নের দায়িত্বে থাকা রুশ উপ-প্রধানমন্ত্রী, ইউরি বরিসভ মস্কোতে একটি সম্মেলনে বলেছেন যে লেজার অস্ত্র, পেরেসভেট (Peresvet) ইতিমধ্যে ব্যাপকভাবে মোতায়েন করা হচ্ছে এবং এটি ভূপৃষ্ঠ থেকে ১৫০০ কিলোমিটার ওপর পর্যন্ত উপগ্রহকে অন্ধ করতে পারে।

পেরেসভেট

বরিসভ বলেছিলেন যে, ইতিমধ্যে পেরেসভেটের থেকে আরও শক্তিশালী সিস্টেম রয়েছে যা ড্রোন এবং অন্যান্য সরঞ্জাম পুড়িয়ে ফেলতে পারে। বরিসভ মঙ্গলবার একটি পরীক্ষার কথা উল্লেখ করেন যেখানে পাঁচ সেকেন্ডের মধ্যে ৫ কিলোমিটার দূরের একটি ড্রোনকে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

জাদিরা

ইউক্রেনে এই ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করা হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে বরিসভ বলেন: “হ্যাঁ। প্রথম প্রোটোটাইপগুলি ইতিমধ্যে সেখানে ব্যবহার করা হচ্ছে।” তিনি বলেন, অস্ত্রটির নাম ‘জাদিরা’ (Zadira)।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি উপহাস করে এই লেজার অস্ত্রের খবরকে অসত্য বলেছেন।

প্রসঙ্গত, লেজার অস্ত্র ব্যবহার করে উপগ্রহগুলিকে অন্ধ করে দেওয়া একসময় কল্পবিজ্ঞান কাহিনীর একটি অঙ্গ ছিল। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন এবং রাশিয়া বছরের পর বছর ধরে এই ধরনের অস্ত্রের রূপ নিয়ে কাজ করছে।
তাই, দুই তরফের দাবির মধ্যে কোনটা সত্যি, এখন সেটাই দেখার।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *