আজ খবর ডেস্ক: আক্রমণের ঝাঁঝ বেড়েছে। মুখের কথা আরও “অশ্লীল”, মন্তব্য “বিতর্ক” বাড়ানোর জন্য যথেষ্ট, প্রধানমন্ত্রী (Prime Minister) থেকে মুখ্যমন্ত্রী (Chief Minister), প্রকাশ্যে “গালি গালাজ” (Slang) করলেন সবাইকে।


গতকালই বিতর্কিত ইউটিউবার (Youtuber) রোদ্দুর রায়ের (Roddur Roy) বিরুদ্ধে একাধিক থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের (AITC) তরফে।
সমাজ মাধ্যমে (Social Media) মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) বিরুদ্ধে ‘অপমানজনক পোস্ট’ করার অভিযোগ উঠেছে রোদ্দুর রায়ের বিরুদ্ধে।

লালবাজার (Lalbazar) ও পাটুলি (Patuli) থানায় এই সংক্রান্ত একাধিক অভিযোগ দায়ের করেছেন নিজেদের “তৃণমূল কর্মী” পরিচয় দেওয়া কয়েকজন।

GD কপি


নিজেকে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ কর্মী হিসেবে দাবি করে অরিত্র সাহা নামে এক ব্যক্তি পাটুলি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। যেহেতু এটি সাইবার ক্রাইমে’র (Cyber Crime) আওতায় পড়ে, তাই পাটুলি থানার পাশাপাশি আলাদা করে লালবাজারের সাইবার ক্রাইম বিভাগে অভিযোগ নথিভুক্ত করা হয়।
অভিযোগ পত্রে ওই তৃণমূল কর্মীর বক্তব্য, ইউটিউবার রোদ্দুর রায়ের পোস্টে রাজ্যের নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রীর সম্মানহানি হয়েছে।


প্রায় একই অভিযোগ দায়ের হয়েছে লালবাজরে ও। নিজেকে তৃণমূল কর্মী পরিচয় দেওয়া বিজয় বন্দ্যোপাধ্যায় নামে একজন দায়ের করেছেন। দু’টি অভিযোগেই প্রকাশ্যে মুখ্যমন্ত্রী সম্বন্ধে কুকথা ব্যবহারের জন্য অভিযুক্ত ইউটিউবারের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে।

আর এই ঘটনা ঘটার পর থেকেই সমাজ মাধ্যমে দফায় দফায় পোস্ট করে চলেছেন রোদ্দুর রায়। “কবিতা বিতান”(Kabita Bitan) গ্রন্থে মমতার লেখা কবিতার আদলে একের পর এক কবিতা লিখে চলেছেন রোদ্দুর। সিরিজের নাম দিয়েছেন “ব্লোজব ছড়া”!
সেখানে দেখা যাচ্ছে, ইতিমধ্যে ৩৩টির ও বেশি ছড়া লিখে চলেছেন তিনি। তবে সেখানে কার্যত “কু’কথা”র বন্যা বইয়ে দিয়েছেন রোদ্দুর রায়। যেসব শব্দ সেখানে তিনি ব্যবহার করেছেন, ঠাট্টা বা ইয়ার্কির ছলে সেসব ঘনিষ্ঠ মহলে সাধারণত ব্যবহার করা হয়।
কোনও ভিডিওতে গান গেয়েছেন “বল বল বল বা.. নাগরিক, সময় কে-জীবন কে ভালবেসে কী পেলে”?


কোনও ভিডিওতে আবার বলছেন, ” বোকা… প্রধানমন্ত্রী, গা…. মুখ্যমন্ত্রী”! কোথাও আবার বলছেন, তাঁর মত নিতান্ত সাধারণ নাগরিক খবরের শিরোনামে, সবাই তাঁকে খুঁজছে সেটাই বেশ মজা পাছেনটিনি।
ভিডিও বার্তায় নিজেই নিজেকে বললেন, “শুঁটিয়ে লাল করে দেব, নোংরামি বের করে দেব, দিদি’র নামে এসব”?
যা থেকে স্পষ্ট, আদতে তাঁর সম্পর্কে তৃণমূল কর্মীদের বক্তব্য নিজেই শোনাচ্ছেন রোদ্দুর রায়।
শেষে বলছেন, “ফাঁসি হোক অথবা জেল/ এই চর্চা চলতে থাকবে”।

প্রসঙ্গত, নিজের ইউটিউব চ্যানেল এবং ফেসবুকে (Facebook) নিজের পেজে অতীতে বহুবার “বিতর্কিত” মন্তব্য করেছেন রোদ্দুর। তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগও দায়ের হয়েছে।
বছর খানেক আগে দোলের দিন জোড়াসাঁকো রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কিছু ছাত্র ছাত্রী যেভাবে রবীন্দ্রসঙ্গীতের প্যারোডি (Parody) নিজেদের পিঠে লিখে প্রদর্শন করেছিলেন, সেটিও রোদ্দুর রায় তৈরি করেছিলেন বলে জানা গেছে।


সমাজের বহু মানুষ মনে করেন, রোদ্দুরের অদ্ভুত বাচনভঙ্গি এবং বক্তব্য আকৃষ্ট হচ্ছে যুবসমাজের একটা বড় অংশ। এমনকি বেশ কয়েকজনের অভিযোগ, রোদ্দুর রায়ের বক্তব্যে প্রভাবিত হয়ে “বিকৃতি”র পথে যাচ্ছে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু পড়ুয়া। এবার তাই অনেকেই চাইছেন, এই ইউটিউবারের বিরুদ্ধে অন্তত একটা ব্যবস্থা নেওয়া হোক। অডিও।

রোদ্দুর-অনুরাগীরা এসব নিয়ে মোটেও ভাবিত নন। বরং তাঁদের অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করায় রোদ্দুর রায়ের নামে পুলিশে যে অভিযোগ দায়ের হয়েছে তা আসলে “গণতন্ত্রের কণ্ঠরোধ”।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *