আজ খবর ডেস্ক: দীর্ঘদিনের আইন। যার সাহায্যে “গণতন্ত্রের কণ্ঠ রোধের” (Suppression Of Democracy) অভিযোগ উঠেছে বারবার। বিভিন্ন সময় এই আইনের সাহায্যে রাজ্য বা কেন্দ্রীয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে, কোন ব্যক্তি বা সমষ্টি প্রতিবাদ করতে গেলেই এই আইনের আওতায় আনা হয়েছে।
একাধিকবার সরব হয়েছেন বিভিন্ন বুদ্ধিজীবী (Intellectual), সমাজকর্মীরা (Social Activist)।
ফৌজদারি দণ্ডবিধির (IPC 124 A) “রাষ্ট্রদ্রোহ” (Sedition Law) নিয়ে ঐতিহাসিক নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)।


প্রধান বিচারপতি এনভি রামান্নার (NV Ramanna) বেঞ্চ জানিয়েছে, এই ধারার প্রয়োজনীয়তা খতিয়ে দেখার কাজ চলাকালীন সেটির প্রয়োগ স্থগিত থাকবে। প্রধান বিচারপতি, এনভি রামান্না, বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি হিমা কোহলির  সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই রায় দিয়েছে।


অর্থাৎ কারও বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগে মামলা করতে হলে এই ধারাটি প্রয়োগ করা যাবে না পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত। শুধু তাই নয়, ওই ধারায় বিচারাধীন মামলাগুলিতেও সরকার এই সময়ের মধ্যে কোনও পদক্ষেপ করতে পারবে না, বলেছে শীর্ষ আদালত।

এমনকি “রাষ্ট্রদ্রোহ” আইনে যে সমস্ত মামলা রুজু হয়েছে, তার প্রেক্ষিতে কাউকে আপাতত গ্রেপ্তার করতে পারবে না কেন্দ্র অথবা রাজ্য সরকার। এছাড়া, “রাষ্ট্রদ্রোহ” আইনে যাঁরা জেলে বন্দি রয়েছেন, তাঁরাও জামিনের (Bail) জন্য আবেদন করতে পারবেন। জানাল সুপ্রিম কোর্ট।
এই নির্দেশ অবিলম্বে কেন্দ্রীয় সরকার ও বিভিন্ন রাজ্য সরকারকে জানাতে হবে। শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, প্রয়োজনীয় বিজ্ঞপ্তি জারি করে পুলিশ ও নিরাপত্তা এজেন্সিগুলিকেও জানিয়ে দিতে হবে।

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রীয় সরকারকে পুনর্বিবেচনা না হওয়া পর্যন্ত রাষ্ট্রদ্রোহ আইন স্থগিত রাখা হবে কিনা তা জানতে চায়।
রাষ্ট্রদ্রোহ আইন নিয়ে প্রশ্নের মুখে সুপ্রিম কোর্টে নতুন হলফনামা জমা করে কেন্দ্র। তাতে জানানো হয়, “রাষ্ট্রদ্রোহ” আইন পুনর্বিবেচনা করা হবে। হলফনামায় কেন্দ্র এও জানায়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) এই আইন বিলোপের পক্ষে।
যতদিন না পুনর্বিবেচনার কাজ শেষ হয়, ততদিন পর্যন্ত এই আইনে কোনও মামলা রুজু হবে কিনা, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন সংশ্লিষ্ট এলাকার ঊর্ধ্বতন পুলিশ আধিকারিক। এরপরই রাষ্ট্রদ্রোহ আইন আপাতত স্থগিত রাখার নির্দেশ দেয় প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।

শীর্ষ আদালতে কেন্দ্র এও জানায়, স্বাধীনতার ৭৫ বছরে “আজাদি কা অমৃত মহোৎসব” চলছে।
এই সময়ে ব্রিটিশ সরকারের তৈরি করা এই আইন বিলোপ জরুরি। তাই ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২৪(এ) ধারার পুনরায় পরীক্ষা ও পুনর্বিবেচনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কোন্দ্র।
যদিও ওয়াকিবহাল মহল মনে করিয়ে দিচ্ছে অতীতে সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্র জানিয়েছিল, “রাষ্ট্রদ্রোহ” আইন বাতিলে তাদের সায় নেই। তবে প্রয়োগের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট নির্দেশিকা প্রয়োজন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *