সাইদুল ইসলাম মন্টু
বিশেষ প্রতিবেদন:

চট্টগ্রামের(Chittagong) সীতাকুন্ডের কন্টেনার ডিপোতে(Container Depot) আগুনে দগ্ধ হয়েছেন ৪০০র বেশি মানুষ। জীবন্ত পুড়ে মারা গেছেন ৫১ জন(এই প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত)। মৃতের সংখ্যা প্রতি মুহূর্তে বাড়ছে। আহতদের মধ্যে অনেকেই অত্যন্ত আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন। আগুন নেভানোর জন্য ফায়ার সার্ভিসের ২৪ টি ইউনিট কাজ করছে(প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত)।


আহতদের মধ্যে ১৯ জনকে চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের এক উদ্ধারকারী দলের কর্মকর্তা বলেন, “যেভাবে বিস্ফোরণ হচ্ছে তাতে ভিতরে থাকা সম্ভব নয়। আগুনের গতি এতোই বেশি যে কতক্ষনে তা সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব তা সঠিক বলা যাচ্ছে না।”

প্রাথমিকভাবে কেমিক্যাল কন্টেইনার(Chemical Container) থেকে আগুন লাগার ঘটনা সামনে এসেছে। উপরন্তু, জলের সমস্যা বড় আকার নিয়েছে। ফলে বেগ পেতে হচ্ছে আগুন নেভাতে। রাত ২ টোর পরে জলের সমস্যা আরও বাড়ে। এরপর ভোর ৪ টের দিকে ফের বিস্ফোরণের আওয়াজ পাওয়া যায়।

যে হাসপাতালে দগ্ধ ও আহতরা চিকিৎসাধীন সেখানে আইসিইউ(ICU) বেডের সংখ্যা মাত্র ১৯। এরপর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের আইসিইউতে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে রাতের বেলাই ডাক্তার হাসান শাহারিয়ার কবীর হাসপাতাল পরিদর্শন করেছেন।

পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার রাত ৮টার দিকে বিএম কন্টেইনার ডিপোর লোডিং পয়েন্টের ভেতরে আগুন দেখা যায়। কুমিরা ফায়ার সার্ভিসের ৩টি ইউনিটের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রথমে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন।
রাত পৌনে ১১টার দিকে এক কন্টেইনার থেকে অন্য কন্টেইনারে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। একটি কন্টেনারে রাসায়নিক থাকায় বিকট শব্দে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, স্থানীয় শ্রমিকসহ অনেকে হতাহত হন।


চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের বিএম কনটেনার ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এতট ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতির মুল কারন, বিএম টার্মিনালের কিছু কন্টেনারে রপ্তানির জন্য হাইড্রোজেন পার অক্সাইড রাখা হয়েছিল।

হাইড্রোজেন পার অক্সাইড নানান বানিজ্যিক ব্যবহার ছাড়াও হাইলি কনসেন্ট্রেটেড H2O2 এভিয়েশন ইন্ডাস্ট্রিতে অক্সিডাইজার হিসেবে ব্যবহৃত হয়৷
যেমন রকেট উৎক্ষেপনের জন্য থ্রাষ্ট(Thrust) তৈরীতেও হাইড্রোজেন পার অক্সাইড ব্যবহার করা হয়।


ডিপোর কিছু কন্টেনারে হাইড্রোজেন পার অক্সাইড রাখার বিষয়টা বিএম টার্মিনাল কর্তৃপক্ষ ফায়ার সার্ভিসকে হয়ত সময় মত অবহিত করেনি। আপাতত এমনটাই ধারণা করা হচ্ছে।
অথবা অবহিত করে থাকলেও ফায়ার সার্ভিসের ফায়ার ফাইটারদের ফায়ার সায়েন্স সম্পর্কে সম্যক নলেজ না থাকার জন্যই হয়ত এরকম বিধ্বংসী আগুন নেভানোর জন্য এত কাছ থেকে কাজ করতে গিয়েছিল তাও শুধুমাত্র জল দিয়ে!

ওয়াকিবহাল মহলের মতে, সেই সময় দরকার ছিল কুইক ইভাকুয়েশন(Quick Evacuation) ।
তারপর অন্য কোনও উপায়ে আগুন আয়ত্তে আনার দরকার ছিল।
কেমিক্যাল হ্যাজার্ড(Chemical Hazard) ছাড়াও এ ধরণের

বিষ্ফোরণের শক ওয়েভজনিত(Shock Wave) এফেক্টে আশেপাশে অনেক ক্যাজুয়ালিটি ঘটার রিস্ক থাকে এবং এ ক্ষেত্রে সেটাই হয়েছে। যার কারনে ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে।
গোটা বাংলাদেশ জুড়ে সাধারণ মানুষের মনে একটাই প্রশ্ন, “আমরা কবে সচেতন হব”?

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *