আজ খবর ডেস্ক: প্রতি বছর ১৪ই জুন বিশ্ব রক্তদাতা দিবস পালিত হয় । ব্লাড ট্রান্সফিউশিন পন্থার জনক অস্ট্রিয়ান বায়োলজিস্ট ও ফিজিশিয়ান ল্যান্ডস্টেইনার।
তিনিই প্রথম আবিষ্কার করেছিলেন ব্লাড গ্রুপ সিস্টেম (Blood Group System)। যার কারণে তিনি ১৯৩০ সালে নোবেল পুরস্কার পান। তাঁর জন্মদিনটিকে স্মরণ করে বিশ্বব্যাপী এই দিনে বিশ্ব রক্তদাতা দিবস পালন করা হয়।


রক্তদানের বেশ কয়েকটি সুবিধা রয়েছে। চিকিৎসকদের মতে, রক্তদান করলে ক্যান্সার এড়িয়ে চলা যায়, লিভার সুস্থ থাকে ,ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে, রক্ত সঞ্চালন ভাল থাকে এবং শরীরে ক্যালরির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।

রক্তদান মহৎ কাজ, একথা সবাই জানেন । কিন্তু ক’জন সাহস করে এই কাজে এগিয়ে আসতে পারেন? প্রায়ই দেখা যায় বিভিন্ন সংস্থা, ক্লাব কিংবা ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়। একটু রক্ত বাঁচাতে পারে মানুষের জীবন। হাসি ফোটাতে পারে গোটা একটি পরিবারের মুখে। প্রতি বছর জুন মাসের ১৪ তারিখ তাদের জন্য উৎসর্গীকৃত, যারা বিনামূল্যে নিঃস্বার্থভাবে রক্তদান করতে এগিয়ে আসেন।


রক্তদানের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে জড়িয়ে রয়েছে মানবিকতার দিকটি। মানবিকতা বোধ কে সম্মান জানাতেই প্রতি বছর পালন করা হয় বিশ্ব রক্তদাতা দিবস।
এই দিবসের সূচনা ২০০৪ সাল থেকে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এই দিনটিকে সারা বিশ্বব্যাপী রক্তদাতাদের সম্মান জানানোর জন্য বেছে নিয়েছে।

৫৮তম ওয়ার্ল্ড হেলথ অ্যাসেম্বলিতে (World Health Assembly) সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, আন্তর্জাতিক ভাবে এই দিনটি পালন করা হবে।


রক্ত মানুষের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান যা কোষে প্রয়োজনীয় পুষ্টি এবং অক্সিজেন পরিবহণ করে।
রক্ত বা প্লেটলেট দান করার জন্য একজন দাতাকে অবশ্যই সুস্থ থাকতে হবে, ওজন কমপক্ষে ৪৫ কেজি হতে হবে এবং বয়স ১৮ থেকে ৬৫ বছরের মধ্যে হতে হবে।


রক্তদানের আগে এবং পরে কিছু বিষয় বিবেচনায় রাখা উচিত;

১) রক্তদানের আগের রাতে পরিপূর্ণ ঘুমাতে হবে ।
২) আয়রন সমৃদ্ধ খাবার সহ পর্যাপ্ত খাবার খেতে হবে কারণ এগুলো হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে।
৩) রক্ত ​​দেওয়ার আগে নিশ্চিত হয়ে নিন যে আপনি পর্যাপ্ত জল পান করছেন কী না ।
৪) নিশ্চিত করতে হবে যে আপনার কমপক্ষে ৭২ ঘন্টার মধ্যে জ্বর বা ফ্লু হয়নি।
৫) রক্ত ​​দেওয়ার অন্তত দুই ঘণ্টা আগে ধূমপান করবেন না।
৬) রক্তদানের আগে অ্যালকোহল খাবেন না।
৭) রক্তদাতাদের জন্য সবচেয়ে সাম্প্রতিক যোগ্যতার শর্ত পর্যালোচনা করতে হবে । রক্ত গ্রহণকারী রোগীকে সুরক্ষিত রাখতে রক্ত দাতার চিকিৎসা সংক্রান্ত ইতিহাস জেনে নেওয়া উচিত ।

রক্তদানের পর আপনার শরীরকে পূর্ণ করার জন্য পরবর্তী ২৪ ঘন্টার জন্য সুষম খাবার খেতে হবে। পেট খালি রাখা চলবে না। পরবর্তী ২৪ থেকে ৪৮ ঘন্টার জন্য তরল খাবার খেতে হবে কারণ রক্তদানের পরে শরীরের তরল পুনরুদ্ধার করতে প্রায় ২৪ ঘন্টা সময় লাগে।
প্রায় পাঁচ ঘণ্টার জন্য, যে হাত থেকে রক্ত দেওয়া হয়েছে, সেই হাত দিয়ে ভারী জিনিস তুলবেন না।
বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবেন না। রক্ত দেওয়ার পর চার ঘণ্টা ধূমপান এবং ২৪ ঘণ্টা অ্যালকোহল এড়িয়ে চলতে হবে।

ত্বকের ফুসকুড়ি এড়াতে, সাবান এবং জল দিয়ে ব্যান্ডেজের চারপাশের জায়গাটি পরিষ্কার করুন। দিনের বাকি সময়ে শারীরিক পরিশ্রম এড়াতে চেষ্টা করুন। যদি সূঁচের জায়গা থেকে রক্তপাত শুরু হয়, তাহলে চাপ প্রয়োগ করুন এবং আপনার হাতটি ৫থেকে ১০ মিনিটের জন্য বা রক্তপাত বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত সোজা রাখুন।
আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। সুষম খাদ্য আপনাকে ভবিষ্যতে নিয়মিত রক্তদাতা হতে সাহায্য করবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *