আজ খবর ডেস্ক: রাজ্যে ফের ঊর্ধ্বমুখী করোনা সংক্রমণ। বিষয়টি নিয়ে সতর্ক স্বাস্থ্যভবন। রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তর থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ৫৩ জন। বর্তমানে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ২০ লক্ষ ১৯ হাজার ৬৮৬ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাকে হারিয়ে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৩৯ জন। যা রবিবারের তুলনায় বেশ কিছুটা বেশি। এখনও পর্যন্ত করোনাজয়ীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১৯ লক্ষ ৯৮ হাজার ৬৯।

জেলাগুলিতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে, সেখানে আরও বেশি সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। করোনা আক্রান্তদের তথ্য নিয়মিত স্বাস্থ্য দপ্তরকে পাঠানোর জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কোনও রকম উপসর্গ ছাড়াই রাজ্যের কোথাও করোনা ঘাপটি মেরে রয়েছে কি না, তা জানতে অতিমারির তৃতীয় ঢেউয়ের আগে থেকে ‘সেন্টিনেল সার্ভেল্যান্স’ শুরু করেছিল স্বাস্থ্য দফতর।

গত সোমবার স্বাস্থ্যভবনে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করেন স্বাস্থ্যসচিব। চলতি মাসের ১ থেকে ৩ তারিখ পর্যন্ত চলা সেই সমীক্ষার রিপোর্ট সম্প্রতি প্রকাশ পেয়েছে। তাতেই দেখা যাচ্ছে, গত ১৮-২০ মে পর্যন্ত করা সমীক্ষার তুলনায় এ বারে কয়েকটি জেলায় পজ়িটিভিটি রেট বৃদ্ধি পেয়েছে।
পাশাপাশি, রাজ্যের পাঁচ জেলায় বিশেষ নজর রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্যভবন৷ এই পাঁচটি জেলা হল পশ্চিম বর্ধমান, পূর্ব মেদিনীপুর, নন্দীগ্রাম, উত্তর ২৪ পরগণা এবং বসিরহাট।কারণ, এই পাঁচটি জেলায় সংক্রমণের হার রাজ্যের অন্য জেলাগুলির থেকে কিছুটা বেশি।

এক স্বাস্থ্য আধিকারিকের কথায়, ‘‘উপসর্গহীন থেকে করোনাভাইরাস কোন এলাকায় কতটা প্রভাব ফেলছে, সে সম্পর্কে ধারণা পেতেই দ্বিতীয় ঢেউয়ের পরে সেন্টিনেল সমীক্ষা শুরু হয়েছিল।’’

গত ১ জুন থেকে ৩ জুন পর্যন্ত সমীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী রাজ্যের চার জেলায় সংক্রমণের হার রয়েছে ০.৫-১.০ শতাংশের মধ্যে ৷ পরিসখ্যান বলছে, পশ্চিম বর্ধমানে ০.৫ শতাংশ, পূর্ব মেদিনীপুরে ০.৭৩ শতাংশ, স্বাস্থ্যজেলা নন্দীগ্রামে ০.৭৮ শতাংশ এবং উত্তর ২৪ পরগণায় সংক্রমণের হার ছিল ০.৯৯ শতাংশ।

রাজ্যের ২৮টি জেলার মেডিক্যাল কলেজ কিংবা জেলা ও মহকুমা স্তরেরহাসপাতালের স্ত্রী-রোগ এবং সাধারণ শল্য চিকিৎসা বিভাগে ভর্তি হওয়া রোগী, যাঁদের কোনও রকমের উপসর্গ নেই, তাঁদের উপরেই নির্দিষ্ট সময়কালে এই সমীক্ষা করা হয়। প্রতিটি হাসপাতাল থেকে ৪০০টি করে নমুনা সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। সেখানে ২৮টি হাসপাতাল মিলিয়ে ১০,৯৯৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় মোট ২৭ জনের করোনা রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে।

এদিকে, জুনের গোড়া থেকেই সারা দেশে ফের চোখ রাঙাতে শুরু করেছে করোনা ভাইরাস। উত্তরোত্তর বাড়ছিল আক্রান্তের সংখ্যা। আর দ্বিতীয় সপ্তাহে, সাম্প্রতিককালের মধ্যে সবচেয়ে বাড়ল সংক্রমণ।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের দেওয়া পরিসংখ্যান বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে কোভিড পজিটিভ হয়েছে ৪৫১৮ জন। সুস্থ ব্যক্তির সংখ্যা ২৭৭৯। এ নিয়ে দেশে মোট করোনার কবল থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৪ কোটি ২৬ লক্ষ ৩০ হাজার ৮৫২, শতকরা হিসেবে ৯৮.৭৩ শতাংশ। এই মুহূর্তে অ্যাকটিভ করোনা রোগীর সংখ্যা ২৫,৭৮২। রবিবার যা ছিল ২৩ হাজারের সামান্য বেশি। মৃত্যুর হার ১.২২ শতাংশ।

দেশের একাধিক রাজ্যে কোভিডগ্রাফ উর্ধ্বমুখী হওয়ায়, বিভিন্ন রাজ্য ফের কোভিডবিধি চালু করার কথা ভাবছে। কর্ণাটক ফের মাস্ক ব্যবহার ফিরিয়ে আনার কথা ভাবছে। মুখ্যমন্ত্রী বাসভরাজ বোমাই ইঙ্গিত করেছেন যে, কয়েক দিনের মধ্যেই কোভিড ১৯ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ফের মাস্কবিধি চালু করার সিদ্ধান্ত নিতে পারে সরকার। তবে তিনি বলেছেন যে এ ব্যাপারে কোনও অপ্রয়োজনীয় আতঙ্ক বা উদ্বেগের প্রয়োজন নেই।


অপরদিকে, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী, উদ্ধব ঠাকরেও রাজ্যবাসীকে প্রয়োজনীয় কোভিডবিধি মেনে চলার নির্দেশ দিয়েছেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *