আজ খবর ডেস্ক: গাঁটে গাঁটে যন্ত্রণা? পা ফুলছে? হাঁটা চলায় কষ্ট? ইউরিক অ্যাসিডে ভুগছেন না তো!
সাধারণত শরীরের প্রয়োজনের অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিড (Uric Acid) কিডনি বের করে দেয়। এবার শরীরে প্রয়োজনের অধিক ইউরিক অ্যাসিড জমতে শুরু করলে কিডনিই প্রথম ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই সাবধান করছেন চিকিৎসকরা।


এবার প্রশ্ন হল, ইউরিক অ্যাসিড বাড়ে কেন?
চিকিৎসকদের মতে ইউরিক অ্যাসিড বৃদ্ধির মূল কারণ হল মেটাবলিক ডিজঅর্ডার (Metabolic Disorder)। অর্থাৎ ইউরিক অ্যাসিড হল বিপাকজনিত সমস্যা। এক্ষেত্রে আমাদের ভুল জীবনযাপন (Lifestyle) ও খাদ্যাভ্যাস (Diet) এই রোগের ক্ষেত্রে সবথেকে বেশি দায়ী।

এদিকে ইউরিক অ্যাসিড থেকে বাঁচতে একেক জন একেক নিয়ম মানেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে নিজেরাই তৈরি করে নেন সেই নিয়ম।
যেমন, কেউ টমেটো খান না। কেউ মটন(Mutton) পাতে নিতে চান না। অনেকে আবার নিমন্ত্রণ বাড়ি গিয়ে শুকনো মুখে ঘুরে বেড়ান। এর উত্তর কিন্তু একটাই— ইউরিক অ্যাসিড আছে।
রক্তে ইউরিক অ্যাসিড বৃদ্ধির ফলে হাইপারুরিসেমিয়া হতে পারে। অর্থাৎ ইউরিক অ্যাসিড ক্রিস্টাল তৈরি হতে পারে, যা জয়েন্টগুলোতে জমা হয় এবং গাউট হতে পারে। কখনও কখনও এগুলো কিডনিতে গিয়ে পাথর তৈরি করতে পারে।ইউরিক অ্যাসিড তৈরি হয় যখন শরীরে পিউরিন নামক রাসায়নিক ভেঙ্গে যায়। যদিও ইউরিক অ্যাসিড রক্তে দ্রবীভূত হয়ে প্রস্রাবের সঙ্গে কিডনি দিয়ে যায়, কিন্তু অনেক সময় তা বের হতে না পেরে রক্তে জমা হতে থাকে।

বাড়তি ইউরিক অ্যাসিড অস্থিসন্ধি ও মূত্রনালীতে থিতিয়ে পড়ে সমস্যার সৃষ্টি করে। আর এই থিতিয়ে পড়া ইউরিক অ্যাসিড ক্রিস্টালের আকার নেয়। এটি গাঁটে ব্যথা ও প্রস্রাবের সংক্রমণ ডেকে আনে। যদিও ইউরিক অ্যাসিডের জন্য অনেক ওষুধ এবং চিকিৎসা পাওয়া যায়, তবে আপনি আপনার খাদ্যতালিকায় কিছু ফল অন্তর্ভুক্ত করে স্বাভাবিকভাবেই এর মাত্রা কমাতে পারেন। দেখে নিন সেগুলি কী কী…

১) অ্যাভোকাডো: আপনি যদি ইউরিক অ্যাসিড কমাতে চান, তাহলে আপনার খাদ্যতালিকায় অ্যাভোকাডো অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। এটি এমনই একটি সুপারফুড, যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের কাজ করে। অ্যাভোকাডোতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই রয়েছে, যা ত্বকে জ্বালাপোড়া কমায়। যা গাউট ফ্লেয়ার প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে।

২) চেরি: NCBI-তে প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুসারে, চেরিতে অ্যান্থোসায়ানিন থাকায় গাঢ় বেগুনি-লাল রঙের হয়। এই ছোট ফলটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ভান্ডার, যা শরীরের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও এটি ভিটামিনের একটি ভালো উৎস।


৩) আঙুর, কমলা, আনারস এবং স্ট্রবেরির মতো সাইট্রাস ফল: ভিটামিন সি সমৃদ্ধ, যা আপনার ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমায় এবং গাউটের ঝুঁকি প্রতিরোধে সাহায্য করে। কিন্তু আপনি যদি আপনার বাতের জন্য ‘কোলচিসিন’ ওষুধ খান, তবে বাতাবিলেবু খাবেন না। এটি আপনার ওষুধের কার্যকারিতা কমাতে পারে।

৪) কলা: যদি ইউরিক অ্যাসিডের কারণে আপনার গাউট হয়ে থাকে, তাহলে প্রতিদিন একটি কলা খেলে আপনার রক্তে ইউরিক অ্যাসিড কম হতে পারে।
কলায় স্বাভাবিকভাবেই পিউরিনের পরিমাণ কম থাকে।
আবার একটি গবেষণায় দেখা গেছে, আপেলে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে, যা ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। ফাইবার রক্ত প্রবাহে ইউরিক অ্যাসিড শোষণ করে এবং আপনার শরীর থেকে অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিড দূর করে। এছাড়াও, আপেল অ্যাসিড সমৃদ্ধ যা শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের প্রভাবকে নিরপেক্ষ করে।
অতএব, চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে সেই মত খাওয়াদাওয়া করুন। রোজকার খাদ্যতালিকা থেকে সব কিছু বাদ দেওয়ার মোটেও দরকার নেই।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *