আজ খবর ডেস্ক: কাশ্মীরে ফের শুরু হয়েছে টার্গেট কিলিং। এই ঘটনা জনগণের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করেছে। এর বিরুদ্ধে সারাদেশে জায়গায় জায়গায় আওয়াজ উঠছে।

এদিকে, রবিবার আম আদমি পার্টি (AAP) দিল্লির যন্তর মন্তরে জন আক্রোশ সমাবেশ করে এবং প্রতিবাদ জানায়। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী, অরবিন্দ কেজরিওয়াল (Arvind Kejriwal) এবং উপ-মুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়া (Manish Sisodia) সমাবেশে বক্তব্য রাখতে বিক্ষোভস্থলে পৌঁছেছিলেন।

কেজরিওয়াল এবং সিসোদিয়ার পাশাপাশি, পরিবেশমন্ত্রী গোপাল রাই, সঞ্জয় সিং এবং অন্যান্য বিধায়করা জন আক্রোশ সমাবেশে অংশ নিয়েছিলেন। তাঁরা বিজেপির বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। সিসোদিয়া কাশ্মীরের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বিজেপিকে নিশানা করে দাবি করেন যে, এটি উপত্যকার ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপ পর্যায় হিসাবে বিবেচিত হবে। তিনি বলেন, আজকাল কাশ্মীরে আতঙ্কের পরিবেশ বিরাজ করছে।

একই সময়ে, বিক্ষোভে পৌঁছে সিএম কেজরিওয়াল বলেছেন যে কাশ্মীরে বিজেপি সরকার ব্যর্থ হয়েছে। ১৯৯০ এর কালো দিনগুলি ফিরে এসেছে। সরকারের কোনো পরিকল্পনা নেই। উপত্যকায় যখনই খুন হয়, খবর আসে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক ডেকেছেন। এই বৈঠক যথেষ্ট নয়, এখন পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। কাশ্মীর ব্যবস্থা চায়।

তিনি আরও বলেন, যখন কাশ্মীরি পণ্ডিতরা হত্যার প্রতিবাদ করতে চায়, তখন কাশ্মীরের বর্তমান বিজেপি সরকার তাদের প্রতিবাদ করতে দেয় না। সরকার যদি এমন আচরণ করে তাহলে জনগণের দুর্ভোগ দ্বিগুণ হয়। রাজ্যসভার সাংসদ সঞ্জয় সিং বলেন যে ১৯৯০ সালে কাশ্মীরে বিজেপি সমর্থিত সরকার ছিল এবং এখন পূর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠতার সাথে নরেন্দ্র মোদির সরকার রয়েছে, তারপরও কাশ্মীরি পণ্ডিতদের উপত্যকা ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছিল। ১৯৯০-এর দশক কাশ্মীরি পণ্ডিতদের দেশত্যাগও প্রত্যক্ষ করেছে।

এর আগে, শুক্রবার দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল বলেছিলেন যে কাশ্মীরের পরিস্থিতি “অত্যন্ত উদ্বেগজনক” এবং সেখানকার মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে তিনি আবেদন করছেন।

পাশাপাশি, কাশ্মীরে টার্গেট কিলিং নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে নিশানা করেছেন শিবসেনা, নেতা সঞ্জয় রাউত (Sanjay Raut)। তিনি বলেন, কাশ্মীর আবার জ্বলছে, সেখানকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা দিল্লিতে সিনেমার প্রচারে ব্যস্ত।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলিউড ফিল্ম ‘সম্রাট পৃথ্বীরাজ’-এর স্পেশাল স্ক্রিনিংয়ে যোগ দেওয়ার পরেই শিবসেনা নেতার এই তির্যক মন্তব্য এসেছে।

জানা গেছে, প্রাণহানির ভয়ে মানুষ উপত্যকা ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার জম্মু ও কাশ্মীরের কুলগাম জেলায় সন্ত্রাসবাদীদের গুলিতে বিজয় কুমার নামে এক ব্যাঙ্ক ম্যানেজার নিহত হন। অপর ঘটনায়, এই সপ্তাহের শুরুতে জম্মুর সাম্বা জেলার বাসিন্দা, ৩৬ বছর বয়সী হিন্দু শিক্ষিকা রজনী বালা, কুলগামের গোপালপোড়ার একটি সরকারি স্কুলে সন্ত্রাসবাদীদের গুলিতে নিহত হন।

এছাড়াও, গত মাসে কাশ্মীরি পণ্ডিত কর্মচারী, রাহুল ভাট সহ দুই অসামরিক নাগরিক এবং তিন অফ-ডিউটি ​​পুলিশ কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদীদের হাতে নিহত হয়েছিল৷

সন্ত্রাসের নজির আরও আছে। গত ২৪শে মে, পুলিশকর্মী সাইফুল্লাহ কাদরিকে, শ্রীনগরে তার বাসভবনের বাইরে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল এবং টিভি শিল্পী আমরীন ভাটকে দু’দিন পর বডগামে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল।

প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ গত শুক্রবার লেফটেন্যান্ট গভর্নর, মনোজ সিনহা এবং অন্যান্য শীর্ষ আধিকারিকদের সাথে জম্মু- কাশ্মীরের নিরাপত্তা নিয়ে একটি বৈঠক করেছেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *