আজ খবর ডেস্ক: অবিরাম বর্ষণে ভাসছে আসাম (Assam), ত্রিপুরা (Tripura) সহ উত্তর পূর্বের একাংশ। ইতিমধ্যেই বন্যা পরিস্থিতির জেরে আসামে আরও ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর সংখ্যা ৫৪তে পৌঁছেছে।

আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা (Himanta Biswa Sharma) শনিবার বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী মোদি তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন এবং কেন্দ্র থেকে সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন। বন্যা পরিস্থিতির কারণে ২৮টি জেলার ১৮.৯৪ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।


এদিকে জলে ভাসছে ত্রিপুরাও। করুণ অবস্থা “স্মার্ট সিটি”(Smart City) আগরতলা’র (Agartala)। শুক্রবার সকাল থেকে একটানা বৃষ্টির ফলে আগরতলা শহর ও শহরতলী সহ ত্রিপুরার বিভিন্ন এলাকা জলমগ্ন। জল বাড়ছে হাওড়া গোমতী সহ বিভিন্ন নদীতে। আগরতলা শহরের প্রতিটি এলাকায় জল এতটাই জমে রয়েছে যে যান চলাচল বন্ধ।

আসামের হোজাই, নলবাড়ি, বাজালি, ধুবরি, কামরূপ, কোকরাঝাড় এবং সোনিতপুর জেলা থেকে মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ বছর বন্যা ও ভূমিধসে রাজ্যে এখন পর্যন্ত ৫৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন। ২,৯৩০টি গ্রাম এখনও পর্যন্ত জলের তলায় । টানা বর্ষণে বড়োলিয়া নদীসহ জেলার অন্যান্য প্রধান নদ-নদীর জলস্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। এদিকে, আসামের কামরুপ জেলার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে বলে জানিয়েছে রাজ্য প্রশাসন।


অন্যদিকে আগরতলায় শিবনগর, বনমালীপুর, কৃষ্ণনগর, রামনগর সহ শহরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল জলমগ্ন। আবহাওয়া দপ্তর থেকে সতর্কবার্তা জারি করে বলা হয়েছে শনি ও রবিবার দিনভর ভারী বৃষ্টি হবে ত্রিপুরার বিস্তীর্ণ এলাকায়। ত্রাণ ও উদ্ধার কাজের জন্য এনটিআরএফ (NTRF), এসডিআরএফ (SDRF) সহ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত স্বেচ্ছাসেবীদের প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য প্রশাসন।

আসামের বন্যা কবলিত জেলাগুলোর ৪৩,৩৩৮.৩৯ হেক্টর ফসলি জমি জলের তলায়। বন্যা ও ভূমিধসের পরিস্থিতির মধ্যে, বর্তমানে জেলা প্রশাসন কর্তৃক স্থাপিত ৩৭৩টি ত্রাণ শিবিরে ১,০৮,১০৪ জন বন্যাকবলিত মানুষ আশ্রয় নিচ্ছেন। এর মধ্যে শুধুমাত্র বাজালি জেলায় ৩.৫৫ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তারপরে দাররাং-এ ২.৯লক্ষ, গোয়ালপাড়ায় ১.৮৪ লক্ষ , বরপেটাতে ১.৬৯লক্ষ, নলবাড়িতে ১.২৩ লক্ষ, কামরূপে ১.১৯ লক্ষ এবং হোজাই জেলায় ১.০৫ লক্ষ মানুষ বিপদের সম্মুখীন হয়েছেন।

সম্প্রতি ত্রিপুরায় মুখ্যমন্ত্রী বদল করেছে বিজেপি (BJP)। বিপ্লব দেব এর জায়গায় নতুন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা। নতুন মুখ্যমন্ত্রীর বিধানসভা কেন্দ্রের বিভিন্ন এলাকা থেকে লাগাতার সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন আমজনতা। রাস্তায় জমে থাকা বৃষ্টির জল বাড়ীর ভেতর ঢুকে গেছে। জুতার বাক্সের পাশে কোনওরকমে ভাত রান্না হচ্ছে।

প্রশাসন বলছে, সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত পশ্চিম ত্রিপুরা। সেখানে গত ২৪ঘন্টায় ১৫৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। প্রায় ২০০০ মানুষকে ইতিমধ্যেই নিজের নিজের বাড়ি থেকে সরিয়ে ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *