আজ খবর ডেস্ক: পূর্ব ইউক্রেনের (Ukraine) সিভিয়ারোডোনেটস্কে (Sievierodonetsk) চলছে লাগাতার অবরোধ। বিচ্ছিন্নতাবাদীদের কার্যত “মুক্তাঞ্চল” হয়ে উঠেছে এই এলাকা।


মূলত ডনবাস ও তার আশপাশের অঞ্চলে আগামীতে কী হবে? এই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে স্থানীয়দের মনে।
ভিডিও ভাষণে, ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি ভলোদিমির জেলেনস্কি বুধবার বলেন, সেভেরোডোনেটস্কে লড়াই এই যুদ্ধের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে রয়ে গেছে। ফলে ডনবাসের ভাগ্য ঝুলে রয়েছে।

ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘন্টার মধ্যে ডনবাসের প্রায় ২০টি শহরে রাশিয়া গোলাবর্ষণ করেছে। এতে ৪জন নিহত হয়েছে এবং সেনারা ৩১ জন রাশিয়ান সৈন্যকে হত্যা করেছে। ইউক্রেনীয় যোদ্ধারা বুধবার শহরের উপকণ্ঠে ফিরে এসেছে এবং যতদিন সম্ভব লড়াই চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
এড়কে, মস্কো নাকি তাদের দখলে থাকা এলাকাগুলোতে ইউক্রেনের সেনা বাহিনীকে ঘেরাও করার চেষ্টা করেছে। অভিযোগ ইউক্রেনীয় সেনাদের একাংশের।

ইউক্রেন এখনও সেভেরোডোনেটস্কের যমজ শহর (Twin City) লিসিচানস্ক কে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে রাশিয়ান বাহিনী ওই এলাকার প্রায় সমস্ত আবাসিক ভবন ধ্বংস করেছে।
স্থানীয় সূত্রে বলা হচ্ছে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে যুদ্ধ শুরুর আগে ডনবাসের প্রায় এক তৃতীয়াংশ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দখলে ছিল।
তুমুল গোলাগুলি বর্ষণের ফলে ইউক্রেনের লুহানস্ক প্রদেশের শহরটি বোমা বিধ্বস্ত বর্জ্যভূমিতে পরিণত হয়েছে।

লুহানস্কের আঞ্চলিক গভর্নর সেরহি গাইদাই বলেছেন, শহরের কেন্দ্রস্থল ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।
বুধবার গভীর রাতে ইউক্রেনীয় টেলিভিশনকে গাইদাই বলেন, “আমাদের যোদ্ধারা সেভেরোডোনেটস্ক শিল্পাঞ্চলে আছে। কিন্তু যুদ্ধ শুধু শিল্পাঞ্চলেই নয়, পুরো সেভেরোদোনেটস্ক শহরেও চলছে,” ।
গাইদাই আরও বলেন, ইউক্রেনীয় বাহিনী এখনও ডোনেটস নদীর পশ্চিম তীরে লিসিচানস্কের সমস্ত নিয়ন্ত্রণ কায়েম রেখেছে ।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কিয়েভের (Kyiv) রাষ্ট্রদূত সংবাদ মাধ্যম সিএনএন’কে (CNN) বলেন, লুহানস্ক এবং দোনেৎস্কে ইউক্রেনীয় সৈন্যের সংখ্যা অনেক বেশি ছিল। রাশিয়া এখন লুহানস্কের ৯৮ শতাংশের বেশি নিয়ন্ত্রণ করছে।
সেভেরোডোনেটস্কের পশ্চিমে, ইউক্রেনের হাতে থাকা প্রধান শহরগুলির মধ্যে
ডনবাসে ছোট বাচ্চাদের সঙ্গে মিলে মহিলারা ও সাহায্য সংগ্রহের জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন। অন্যান্য বাসিন্দারা সেসময় শহর জুড়ে জল সংগ্রহ করছিলেন।

বেশিরভাগ বাসিন্দা পালিয়ে গেছেন, তবে কর্তৃপক্ষ বলছে এই মুহূর্তে প্রায় ২৪ হাজার মানুষ শহরে রয়েছেন।
উত্তরে রাশিয়ান বাহিনীর গোলাগুলির আঘাতে বুধবার বাসিন্দারা বেসমেন্টে আশ্রয় নিয়েছিল।
এক বাসিন্দা বলেন , “আমাদের ওপরে দিনরাতে গোলাবর্ষণ হচ্ছে। আমরা প্রায় সব সময় বেসমেন্টে থাকি। অ্যাপার্টমেন্টটি কাছে, আমরা দিনের বেলা সেখানে দৌড়াই। রাতে আমরা এখানে থাকি।”


প্রসঙ্গত, ইউক্রেন বিশ্বের বৃহত্তম শস্য রপ্তানিকারকদের মধ্যে একটি। পশ্চিমের দেশগুলি রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের কৃষ্ণ সাগর এবং আজভ সাগর বন্দর অবরোধ করে বিশ্বব্যাপী দুর্ভিক্ষের ঝুঁকি তৈরি করার জন্য দায়ী করেছে।
এদিকে মস্কো বলছে, খাদ্য সংকটের জন্য পশ্চিমি দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞা দায়ী। তুরস্ক ইউক্রেনের ব্ল্যাক সি বন্দর উন্মুক্ত করার জন্য আলোচনা করার চেষ্টা করছে।
ক্রেমলিন রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিনকে উদ্ধৃত করে বলেছে, রাশিয়ার শস্য বাজারে পৌঁছানোর জন্য পশ্চিমি দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞাগুলি প্রত্যাহার করতে হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *