আজ খবর ডেস্ক: মৃত্যু চিরন্তন। যে কোনও বয়সে যে কারও মৃত্যু হতে পারে। তারপরও যারা পরিণত বয়স পর্যন্ত বেঁচে থাকেন তাঁদের জীবন নিয়ে নানা ধরণের চিন্তা ভাবনা থেকে যায়। জীবনের শেষ প্রান্তে পৌঁছে হিসেব মেলানোর একটা প্রবণতা তৈরি হয় মানুষের মনে। কী পেলাম, আর কী হারালাম? সেই ভাবনাগুলো তুলে ধরা হল এখানে।


মনোবিদদের মতে, মূলত ৬০ এর পর থেকেই নানান ধরনের ভাবনা মানুষের মনে চলতে থাকে। তার একটা বড় কারণ, এই বয়সের পর থেকে পৃথিবীজুড়ে অধিকাংশ মানুষ অবসরকালীন জীবন (Retired Life) কাটান। কাজের ব্যস্ততা কমে যাওয়ায় অনেকটা সময় উদ্বৃত্ত হয় নানান ধরনের ভাবনা চিন্তার জন্য।

১) অনেকেই একজন ভাল ছেলে, মেয়ে, স্বামী, স্ত্রী, সন্তান না হওয়ার জন্য অনুতাপ করেন। ফলস্বরূপ তাঁরা ভেতর ভেতর কষ্টে ভুগতে থাকেন। আপনার বন্ধুরা যত আপনই হোক না কেন, পরিবার হল আপনার একতার জায়গা। যেখানে কেউ সচরাচর আপনার ক্ষতি করবে না।
ব্যস্ত জীবনে মানুষ সারাদিন কাজ আর অর্থের পেছনে ছোটে। এতে পারিবারিক সান্নিধ্য থেকে দূরে সরে যেতে হয় অনেক সময়। এ জন্য পরিবারের সদস্যদের গুরুত্ব দিন।

২) সারা জীবন টাকা রোজগার করলেন, কিন্তু নিজের শখের কাজে ওই টাকা ব্যয় করতে পারলেন না । তাতে শেষ বয়সে গিয়ে আফসোস করলেও লাভ হয় না।

৩) বেশিরভাগ মানুষই জীবন সায়াহ্নে এসেভাবেন, যদি নিজের ইচ্ছা মত জীবনটা কাটাতে পারতাম! বেশিরভাগ মানুষই জীবনের স্বপ্নগুলো পূরণ করতে পারেন না। মৃত্যুর কাছাকাছি এসে তখন বারবারই সেইসব স্বপ্নের কথা মনে হয়।

৪) অনেকে নিজের আবেগ দমিয়ে রাখেন পরিবারে শান্তি বজায় রাখার জন্য। এ কারণে তারা যাকে যা বলতে চান বা প্রকাশ করতে চান তা কখনও করতে পারেন না। এতে তাঁদের অনেক শারীরিক ও মানসিক অসুস্থতাও তৈরি হয়।
জীবনের শেষ প্রান্তে এসে তাই অনেকের মনে হয়, যদি নিজের অনুভূতিগুলো প্রকাশ করার সাহস থাকত!

৫) অনেকে আছেন , যাঁরা জীবনে ঝুঁকি নিতে চান না। কিন্তু ঝুঁকি না নিলে শেষমেশ অনেক কিছুই মিস হয়ে যায় জীবন থেকে। এ জন্য রিস্ক নিয়েই কাজ করা উচিত। আপনি ব্যর্থ হলে তা থেকেই আপনাকে শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। এমন যেন না হয় যে এর জন্য ভবিষ্যতে আপনাকে আফসোস করতে হচ্ছে।

৬) মৃত্যুর কাছাকাছি এসে পুরনো বন্ধুদের জন্য মন কেমন করাটা খুব স্বাভাবিক একটি ঘটনা। কারও কারও মনে হয়, দিনের পর দিন বন্ধুদের সময় দেওয়া হয়নি ব্যস্ততার কারণে। অথচ তারা কতবার কতভাবে ডেকেছে। সেই নস্টালজিয়া থেকে অনুতাপ বোধ তৈরি হয়।
বহু ক্ষেত্রে দেখা যায়, শেষ বয়সে পৌঁছে স্বামী বা স্ত্রীর প্রতি অপরাধবোধ তৈরি হওয়ার একটি প্রবণতা। এমন ও হতে পারে, জীবনসঙ্গী তখন আর বেঁচে নেই। তখন সেই অনুভূতি আর ও কষ্টকর।

তবে চিকিৎসকদের মতে, উপরের এই ভাবনাগুলো তাদেরই হয় যাদের তুলনামূলকভাবে আর্থিক স্বাচ্ছন্দ রয়েছে।
“দিন আনি দিন খাই” পরিবারে এ ধরণের ভাবনা আসলে কষ্টকল্পনা, বলছেন মনোবিদরা।
তবে কমবেশি সকলেই এক বিষয়ে সহ, নিজের জীবন নিজের ইচ্ছে অনুযায়ী বাঁচাটাই আসল। এতে ভবিষ্যতে পরিতাপ কম হয়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *