আজ খবর ডেস্ক: এই প্রজন্ম কি বই পড়ে? গত বেশ কয়েক বছর ধরেই যে কোনও সাহিত্য উৎসব অথবা বইমেলার আলোচনায় এটি একটি অত্যন্ত পরিচিত প্রশ্ন। বহু সেমিনারে আলোচনার বিষয় হিসেবে বেছে নেওয়া হয় এই ইস্যু।


একথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে টেলিভিশন থেকে ইন্টারনেট আমরা যত আধুনিকতার দিকে এগোচ্ছি, বই পড়ার অভ্যাস কমছে।
বহু প্রকাশক এমন অভিযোগ ও করে থাকেন, একমাত্র বইমেলার সময় বই বিক্রি হয়। বাকি সারা বছর কলকাতার বহুল পরিচিত কলেজস্ট্রিটের বই পড়াতেও আর তেমন আগ্রহীর দেখা মেলে না।
তবে এই যুগেও কি আর বইপ্রেমী নেই? তরুণ প্রজন্মের মধ্যেও এমন অনেকেই আছেন যারা নিয়মিত বাংলা বই এবং বিদেশি সাহিত্য নিয়ে চর্চা করেন। বই পড়েন, কবিতা লেখেন, গান লেখেন।

পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম প্রান্তিক জেলা আলিপুরদুয়ার (Alipurduar)।
শহর কলকাতা থেকে অনেকটাই দূরে। অ্যামাজন (Amazon) বা ফ্লিপকার্টের (Flipkart) সুবিধা ও সেভাবে মেলে না। অর্থাৎ হঠাৎ কোনও বই পড়ার ইচ্ছে হলে অথবা নিছক পড়াশোনার ক্ষেত্রে রেফারেন্সের প্রয়োজন হলেও সেই বই এখানে পাওয়া যায় না।
এই জেলার বাসিন্দারা বলেন, একটা বইয়ের জন্য কলকাতা ছুটতে হয়। তবে এবার সুখবর। যেন কোনও যাদুকরের হাতের ছোঁয়ায় চাইলেই মিলবে বই।


আর তাও এমন আধুনিক ঝাঁ চকচকে মোড়কে, প্রথমে বিশ্বাস করতে পারেননি এই জেলার মানুষ।

শপিং মল। যেখানে এক ছাদের তলায় সবকিছুই পাওয়া যায়।সেই ভাবনা থেকেই তৈরি হচ্ছে বইয়ের শপিং মল (Shopping Mall)। স্থানীয় মানুষের বইয়ের চাহিদা মেটাতে তিনতলা জুড়ে বইয়ের সম্ভার।
আলিপুরদুয়ারের ফায়ার ব্রিগেডের উল্টো দিকে তৈরি হচ্ছে বইয়ের শপিং মল। নাম, “বই মহল”। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন প্রকাশনী সংস্থার সঙ্গে কথা হয়েছে। এখানে বই পাঠাবেন তাঁরা।

প্রতীকী ছবি


আক্ষরিক অর্থেই এক ছাদের তলায় সব রকমের বই মিলবে। বইমহলের প্রচার শুরু হয়ে গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে। কারণ উত্তরবঙ্গে এভাবে এক জায়গায় সব রকমের বইয়ের সম্ভার কোথাও নেই। আলিপুরদুয়ার শহরে এই তিনতলা বইমহলে ছোট থেকে শুরু করে সবার জন্য সব রকমের বই রয়েছে।

এই “বই মহল” তৈরির নেপথ্যে রয়েছেন এক বই প্রেমী। তাঁর নাম ডঃ পার্থ সাহা। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে তিনি জানিয়েছেন,
“এখানে এক ছাদের তলায় থাকবে বইয়ের সম্ভার। সাহিত্য থেকে রেফারেন্স বই সবই মিলবে এই বইয়ের শপিংমলে।


দুঃস্থ ছাত্রদের পড়াশোনায় যাতে কোনও প্রতিবন্ধকতা না আসে তার জন্য পাশে থাকবে বই মহল।এছাড়াও বছরে দুঃস্থ ৩ জন ছাত্রের দায়িত্ব নেবে বইমহল। উত্তরের সাহিত্যেকদের সম্মান দেবে বইমহল।”
আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন এখনও হয় নি। তবে তার আগেই এই নয় বিপণিতে উপচে পড়ছে ভিড়।
শপিংমলের মত একটি ব্যাগ হাতে নিয়ে পছন্দের বই তুলে নিচ্ছেন অনেকেই।

প্রতীকী ছবি

উত্তরবঙ্গ বরাবর বাংলা সাহিত‍্যের উর্বর ভূমি। সমরেশ মজুমদারের “উত্তরাধিকার”, “কালবেলা”, “কালপুরুষ”, দেবেশ রায়ের “তিস্তা পারের বৃত্তান্ত” অথবা তিলোত্তমা মজুমদারের “স্বর্গের শেষ প্রান্তে”। পটভূমি হিসেবে ঘুরেফিরে এসেছে উত্তরবঙ্গ। তাই উত্তরবঙ্গের এক প্রান্তের এই জেলায় এহেন উদ্যোগ নিঃসন্দেহে তাক লাগানো।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *