সায়েদুল ইসলাম মন্টু, অস্ট্রেলিয়া:
অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে বড় শহর সিডনিতে তৃতীয়বারের মতো বন্যা দেখা দিয়েছে। সতর্কতা হিসেবে ৫০ হাজার মানুষকে শহর থেকে সরিয়ে নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

গত চার দিনে সিডনিতে (Sydney) প্রায় আট মাসের সমপরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে। এতে অনেক এলাকা প্লাবিত হয়েছে। রাস্তাঘাট বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। অনেক বাড়িঘর জলের নিচে তলিয়ে গেছে। হাজার হাজার বাড়ি বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে।

বর্তমান জরুরি অবস্থার জন্য গ্রেটার সিডনি জুড়ে শতাধিক মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার আদেশ জারি করেছে কর্তৃপক্ষ।
অস্ট্রেলিয়ার বেশ কয়েকটি বড় নদীতে জল বাড়ছে। এসব নদীর আশপাশের ৫০টি এলাকার মানুষকে নিরাপদ জায়গায় সরে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।
নিউ সাউথ ওয়েলসের (New South Wales) কিছু এলাকায় গত চার দিনে ৮০০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। আবহাওয়া অফিস বলেছে, গ্রেটার লন্ডনে এক বছরে যত বৃষ্টিপাত হয়, তার থেকে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে।

নিউ সাউথ ওয়েলসের ইমার্জেন্সি সার্ভিস মন্ত্রী স্টিফানি কুক (Stephanie Anne Cooke) বলেছেন, ‘জরুরি অবস্থা এখনও তুলে নেওয়া হয়নি।’
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তন এবং লা নিনা (La Nina) আবহাওয়ার কারণে বন্যা পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে।

এদিকে ইতালির (Italy) উত্তরাঞ্চলে ৭০ বছরের মধ্যে সব থেকে ভয়াবহ খরা দেখা দিয়েছে। দুর্যোগ মোকাবিলায় পো নদীর আশপাশে পাঁচটি অঞ্চলে জরুরি অবস্থা জারি করেছে ইতালি সরকার।

প্রসঙ্গত, ইতালির দীর্ঘতম নদী পো। এর দৈর্ঘ্য ৬৫০ কিলোমিটারেরও বেশি। এ নদীর আশপাশের অঞ্চলে ইতালির স্মরণকালের ভয়াবহ খরা (drought) দেখা দিয়েছে।


বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের খবর, খরা মোকাবিলায় এমিলিয়া-রোমাগনা, ফ্রিউলি-ভেনেজিয়া গিউলিয়া, লোমবার্ডি, পাইডমন্ট এবং ভেনেটো অঞ্চলে ৩৬ দশমিক ৫ মিলিয়ন ইউরো বরাদ্দ করা হবে।
ইতালির এগ্রিকালচারাল ইউনিয়ন কোল্ডিরেত্তি জানিয়েছে, খরার কারণে ইতালির ৩০ শতাংশেরও বেশি কৃষি উৎপাদন হুমকির মুখে পড়েছে।


বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অস্বাভাবিক গরম আবহাওয়া এবং পুরো শীতকাল ও বসন্তকালজুড়ে বৃষ্টি কম হওয়ায় ইতালিতে ভয়াবহ খরা দেখা দিয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় বেশ কয়েকটি পৌরসভা ইতিমধ্যেই জলের রেশনিং ঘোষণা করেছে।

পো নদীর আশপাশের কৃষকেরা বলছেন, সমুদ্রের লবণাক্ত জল নদীতে মিশে ফসল নষ্ট করছে। এদিকে এ সপ্তাহের শেষের দিকে উত্তর ইতালির আল্পস পাহাড়ে একটি হিমবাহ ধসে পড়ে অন্তত সাতজন মারা গেছেন।

ইতালির প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাঘি (Mario Draghi) বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তন ও বিশ্বব্যাপী উষ্ণতার কারণে এসব দুর্যোগ দেখা দিচ্ছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *