আজ খবর ডেস্ক: রাজ্যজুড়ে বিস্তর জল ঘোলা হয়েছিল শিক্ষক নিয়োগ (SSC) নিয়ে। আদালতের নির্দেশে দুর্নীতির তদন্ত ভাব দেওয়া হয়েছিল সিবিআইকে (CBI)। জানা গেছে, মঙ্গলবার এই বিষয়ে প্রথম পর্যায়ের তদন্ত রিপোর্ট কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) জমা করেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা।


গত শুনানিতে সিবিআইয়ের কাছে তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চেয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। সিবিআইয়ের তরফে বলা হয়, আদালতের নজরদারিতে সিবিআইয়ের ৬ সদস্যের বিশেষ তদন্তকারী দল (SIT) গোটা ঘটনার তদন্ত করছে। বেশ কিছু তথ্য তাঁদের হাতে এসেছে। এরপরই আদালত জানায়, নথি সহ তদন্তের অগ্রগতি সংক্রান্ত যাবতীয় রিপোর্ট মঙ্গলবারের মধ্যে সিবিআই কে জমা করতে হবে। সেই মতো এদিন সকালেই মুখ বন্ধ খামে রিপোর্ট জমা করে সিবিআই।
প্রাথমিক দুর্নীতি মামলায় শুনানি শেষ হল। তবে আপাতত রায়দান স্থগিত থাকবে। বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের ডিভিশন বেঞ্চে শেষ হল শুনানি। প্রাথমিক দুর্নীতি মামলায় নিজেদের তদন্ত রিপোর্ট পেশ করল সিবিআই।
চলতি সপ্তাহের শুক্রবার পর্যন্ত বক্তব্য জমা দিতে পারবে সব পক্ষ। নিজের নিজের বক্তব্য লিখিত আকারে জমা দিতে পারবে মামলার সঙ্গে যুক্ত সব পক্ষ।

প্রসঙ্গত, প্রাথমিকে নিয়োগ (Primary TET) দুর্নীতিতে গত ১৩ই জুন সিবিআই (CBI) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সেই নির্দেশের ঠিক ৩৬ দিনের মাথায়, মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টে প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট জমা দিল সিবিআই।
২০১৬ সালের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে বেনিয়মের অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে। মূল অভিযোগ ছিল, সুপ্রিয় সরকার নামে এক ব্যক্তি অতিরিক্ত মেধা তালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও চাকরি পেয়েছেন যোগ্যদের বঞ্চিত করে। অভিযোগ ছিল, বিশেষ সুবিধা পাইয়ে দেওয়া হয়েছে তাঁকে। পরে তাঁর নাম মূল মেধা তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল বলে আদালতে অভিযোগ জানানো হয়েছিল।

শুনানি শুরু হওয়ার পর আদালত নির্দেশ দিয়েছিল, অবিলম্বে নিয়োগ হওয়া ২৬৯ জন শিক্ষকের বেতন বন্ধ করতে হবে। পাশাপাশি তাঁরা যাতে কোনও ভাবেই স্কুলের মধ্যে ঢুকতে না পারেন সংশ্লিষ্ট ডিআইকে তা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
বস্তুত, এই ৩৬ দিনে প্রাথমিকে নিয়োগ তদন্তে বিস্তর তোলপাড় হয়েছে। পর্ষদের সভাপতি পদ থেকে মানিক ভট্টাচার্যকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁকে নিজাম প্যালেসে ডেকে জেরা করার পাশাপাশি তৃণমূল বিধায়কের যাদবপুরের ফ্ল্যাটেও হানা দিয়েছিল সিবিআই।
পর্ষদের সচিব রত্না চক্রবর্তীর বাড়িতে গিয়েও তদন্ত করেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা।

প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছে। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছিলেন সিবিআইকে। কারণ ওয়াকিবহাল মহলের মতে, যে সমস্ত অভিযোগ জমা পড়েছিল তার অধিকাংশই ছিল শাসকদলের নেতা, মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে। রাজ্য গোয়েন্দা সংস্থা যাতে চাপে পড়ে তদন্ত না করে সেই কারণেই কেন্দ্রীয় এজেন্সির হাতে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

জরুরি ভিত্তিতে বিজ্ঞপ্তি জারি করে পর্ষদ। সেই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে ৪২,৯৪৯ জন শিক্ষক নিয়োগের বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছে সিবিআই। তাই জরুরি ভিত্তিতে এক্সেল শিট-এ ৪২,৯৪৯ জন শিক্ষককেই তাঁদের নিয়োগ সংক্রান্ত নথি পর্ষদকে পাঠাতে হবে। শিক্ষকদের নথি সংগ্রহ করে তা সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
তারপরেই তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট এবং তদন্ত সংক্রান্ত যাবতীয় নথি আদালতের হাতে সমর্পণ করল সিবিআই। হিসাব মত আর ও তিনদিন সময় আছে এই মামলার সঙ্গে যুক্ত অন্যান্য পক্ষের হাতে। শুক্রবারের পরে সবদিক খতিয়ে দেখে ফের নির্দেশ দেবে কলকাতা হাইকোর্ট।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *