আজ খবর ডেস্ক:
২০১৯ সালে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন আদতে পেশায় আইনজীবী জগদীপ ধনখড় (Jagdeep Dhankhar)।
রাজনৈতিক মহলের পর্যবেক্ষণ, প্রথম থেকেই রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে খুব একটা বনিবনা ছিল না এই রাজ্যপালের। তুলনায় গেরুয়া শিবিরের সঙ্গে তাঁর হৃদ্যতা বেশি ছিল।
Shri Jagdeep Dhankhar Ji has excellent knowledge of our Constitution. He is also well-versed with legislative affairs. I am sure that he will be an outstanding Chair in the Rajya Sabha & guide the proceedings of the House with the aim of furthering national progress. @jdhankhar1 pic.twitter.com/Ibfsp1fgDt
— Narendra Modi (@narendramodi) July 16, 2022
অবশ্য এর প্রমাণও পাওয়া গিয়েছে হাতেনাতে। রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আচার্য পদ থেকে “সরানো”, বিধানসভায় অধিবেশন আরম্ভের পূর্ব ভাষণ, অথবা রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি। কার্যক্ষেত্রে দেখা দিয়েছে বারবারই রাজ্যপালের সঙ্গে সংঘাত তৈরি হয়েছে তৃণমূল নেতৃত্বের।
অন্যদিকে প্রতিটি ক্ষেত্রেই বিরোধী বিজেপি বিধায়কদের আস্থা ও ভরসার জায়গা ছিলেন তিনি। বিভিন্ন বিষয়ে একাধিকবার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) কে সঙ্গে বিধায়কদের নিয়ে রাজভবনে যেতে দেখা গিয়েছে।
রাজনৈতিক মহলকে কার্যত কিঞ্চিৎ চমকে দিয়েই শনিবার বিজেপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় গণতান্ত্রিক জোট (NDA) ভারতের উপরাষ্ট্রপতি পদের প্রার্থী হিসাবে বাংলার রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের নাম ঘোষণা করল।
শনিবার দিল্লিতে অনুষ্ঠিত বিজেপির (BJP) সংসদীয় বোর্ডের বৈঠকের পরে বিজেপি প্রধান জেপি নাড্ডা (JP Nadda) এই ঘোষণা করেন।
জগদীপ ধনখড় বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালের পদে রয়েছেন।
নাড্ডা বলেন, ধনখড় হলেন একজন “কিষাণ পুত্র” (কৃষকের পুত্র) যিনি নিজেকে “জনগণের গভর্নর” হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
প্রসঙ্গত চলতি সপ্তাহের শুরুতে দার্জিলিঙে ছিলেন রাজ্যপাল। সেখান থেকে ফিরেই দিল্লি যান তিনি। শুক্রবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর (Amit Shah) সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়।
আর তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) সঙ্গে একান্ত বৈঠক করেন। যা
বাংলার রাজ্যপালের এভাবে দেশের দুই শীর্ষ পদাধিকারীর সঙ্গে উপর্যুপরি বৈঠকের পরেই জল্পনা শুরু হয়, বিজেপির উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসেবে দেখা যেতে পারে তাঁকে।
যদিও বেশ কয়েকদিন ধরেই সংখ্যালঘু নেতা মুখতার আব্বাস নকভিকে উপরাষ্ট্রপতি পদের প্রার্থী করার কথা শোনা যাচ্ছিল।
এই গুঞ্জন আর ও ছড়িয়েছিল, যখন তিনি নিজের রাজ্য সভার সাংসদ হিসেবে মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু দপ্তরের মন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগ করেন। কার্যক্ষেত্রে দেখা গেল, ইন্ডিয়া শিবির থেকে উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসেবে বাংলার রাজ্যপালের নাম ঘোষণা করা হল।
দ্রৌপদী মুর্মুকে রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী করে আদিবাসী সমাজের প্রতিনিধিকে দেশের সর্বোচ্চ সাংবিধানিক পদে বসানোর বার্তা দিয়েছে গেরুয়া শিবির। গুঞ্জন ছিল, উপরাষ্ট্রপতি পদে কোনও সংখ্যালঘু মুখকে প্রার্থী করতে পারে তারা।
তবে দার্জিলিং রাজভবনে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) এবং আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা (Himanta Biswa Sarma) সঙ্গে বাংলার রাজ্যপালের বৈঠক ঘিরে গত কয়েক দিন ধরেই একটা অন্যরকম রাজনৈতিক জল্পনা চলছিল।
তবে এদিন এনডিএ শিবিরের তরফে জগদীপ ধনখড়ের নাম উপরাষ্ট্রপতি পদের জন্য ঘোষণা হওয়ার পর থেকে রাজনৈতিক মহলের নতুন প্রশ্ন, ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের আগে বঙ্গের রাজ্যপাল পদে কি সংখ্যালঘু কোনও মুখ আনতে চাইছে বিজেপি?