আজ খবর ডেস্ক: তিনি নেই! নাকি এখনও আছেন? অগণিত ভক্তের বুকে শুধু নয়, যেন প্রতি মুহূর্তে কানে তাঁর কণ্ঠের অনুরণন চলছে।
কে বলে আমাদের সকলের প্রিয় KK আজ নেই?
চলতি বছরের মে মাসে KK মারা যান। শেষ অনুষ্ঠান করে গিয়েছেন কলকাতারই নজরুল মঞ্চে। কন্ঠের জাদুতে, অমোঘ গায়কীতে বেশ কয়েক হাজার দর্শককে মাত করে মঞ্চ ছেড়েছিলেন তিনি। আর তার মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছিলেন।


কিন্তু আমরাই যেখানে মানতে পারিনি তাঁর মৃত্যু, সেখানে পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা মেনে নেবেন কী করে? তাই স্মৃতিতে ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি নিজের প্যাশন (passion) দিয়ে আরেকবার তাঁকে জীবনে ফিরিয়ে আনলেন জ্যোতি কৃষ্ণ (Jyothy Lakshmi Krishna)।

KK-র স্ত্রী জ্যোতি কৃষ্ণ পেশা এবং নেশায় চিত্রশিল্পী। এবার এঁকেছেন KK আর তাঁর একটি ছবি। শেয়ার করেছেন সমাজ মাধ্যমে।
KK ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে তাঁর কর্মজীবন শুরু করার জন্য মুম্বাই চলে যাওয়ার আগে বিয়ে করেছিলেন। ১৯৯১সালে শৈশবের প্রেমিকা জ্যোতি লক্ষ্মী কৃষ্ণকে।


যেন একটা মিষ্টি বলিউডি রং কম (RomCom), যার শেষটা ঠিক “হ্যাপি এন্ডিং” হল না।
দুজনের প্রথম দেখা হয়েছিল, যখন KK ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়তেন।

কিশোরী জ্যোতি কে প্রথম শুনিয়েছিলেন কিশোর কুমারের গান। পরে একটি সাক্ষাৎকারে KK বলেছিলেন, “আমার স্ত্রী জ্যোতি কে এই গানটি শুনিয়েছিলাম। ম্যায়নে উসকো পটায়া থা তো ইয়েহি গান গায়া থা (আমি মুগ্ধ করেছিলাম)। আমার মনে আছে আমি প্রতি বছর আমার কলোনির বার্ষিক অনুষ্ঠানে এই গানটি গাইতাম। “
গান গাওয়ার সময় তিনি জ্যোতির দিকে তাকিয়ে থাকতেন? একথা জানতে চাইলে কে কে যোগ করেন, “আমরা তখন এই ধরনের কাজ করতে পারতাম না। বাবা-মা সামনে থাকতেন। আমরা এতটা সরাসরি হতে পারিনি। গান গাওয়ার সময় প্রায় ছুটি করে জ্যোতির দিকে তাকাতাম।”
তাঁদের কিশোরকালের প্রেম সম্পর্কে বলতে গিয়ে নস্টালজিক KK বলেছিলেন, “তখন আমার অনুভূতি সম্পর্কে জ্যোতি জানতো। আমরা খুব ছোট ছিলাম, সম্ভবত ষষ্ঠ বা সপ্তম শ্রেণিতে পড়ি। যখন আমি আমার অনুভূতি বুঝতে পেরেছিলাম, তখন আমি স্বীকার করেছিলাম এবং তাকে বলেছিলাম ‘জীবনে আমার সঙ্গী হিসাবে তোমার থাকা দরকার”।

দেবানন্দ অভিনীত “গাইড” (Guide) ছবির গান ‘তেরে মেরে সপনে আব এক হি রং হ্যায়’ ছিল তাঁদের বিয়ের পর প্রথম সন্ধায় নববধূর জন্য গাওয়া গান। “
KK র মৃত্যুর পর দুজনের একটি ছবি এঁকেছেন জ্যোতি কৃষ্ণ। সমাজ মাধ্যমে সেই ছবি শেয়ার করার পাশাপাশি তিনি লিখেছেন, তিনি মিস করছেন স্বামীকে। “আবার আঁকার চেষ্টা করছি। মিস ইউ সুইটহার্ট।”


একজন ভক্ত তাঁর পোস্টে মন্তব্য করেছেন, “KK সবসময় আমাদের হৃদয়ে এবং আপনার চিত্রগুলিতে বেঁচে থাকবেন।” আরেকজন লিখেছেন, “সত্যিকারের ভালবাসা কখনও মরে না। শক্ত থেকো জ্যোতি।”
জ্যোতি’র প্রশংসা করে, অপর একজন লিখেছেন, “আপনার জন্য সমস্ত ভালবাসা ম্যাম… আমি যা সংগ্রহ করেছি, আমি অনুমান করছি যে শুরু থেকে তার পিছনে আপনি ছাড়া KK থাকবে না। আমরা তোমাদের উভয়ের জন্য ঈশ্বরের কাছে কৃতজ্ঞ। তিনি সঙ্গীতের মাধ্যমে বেঁচে থাকবেন।”

সেভাবে দেখতে গেলে, সঙ্গীতে আনুষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ নেননি KK। কিন্তু গুলজার পরিচালিত ১৯৯৬ সালের “মাচিস” ফিল্মে গান গাওয়ার পরে ৯০ এবং ২০০০, গোটা দু দশকেরও বেশি সময় জুড়ে বলিউড ছবির অন্যতম জনপ্রিয় গায়ক ছিলেন তিনি।
পরে তিনি হিন্দি, তামিল, তেলেগু, কন্নড় এবং বাংলা সহ বেশ কয়েকটি ভাষায় গান রেকর্ড করেন। তাঁর গাওয়া গান এখন ও চার্ট বাস্টারের হিট তালিকায়। তবে জ্যোতি কৃষ্ণ’র আঁকা এই ছবি যেন নতুন করে ভক্তদের কাছে ফিরিয়ে দিল KK কে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *