আজ খবর ডেস্ক:
১৮ই জুলাই। একদিকে দেশের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। অন্যদিকে এদিন থেকেই সংসদে (Parliament) শুরু হবে চলতি বছরের বাদল অধিবেশন (Monsoon Session of Parliament)।
চমক কার্যত সেখানেই। এই অধিবেশন থেকেই সাংসদদের (Member of Parliament) জন্য তৈরি হচ্ছে নয়া ভাষা বিধি (Code of Language)। প্রকাশিত হতে চলেছে একটি পুস্তিকা, যেখানে নিষিদ্ধ করা হয়েছে, ‘জুমলাবাজি’, ‘কোভিড স্প্রেডার’, ‘খুন সে ক্ষেতি’ (রক্ত দিয়ে চাষ), ‘স্নুপগেট’-এর মত কিছু শব্দবন্ধের ব্যবহার।


এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো প্রতিবাদে সরব হয়েছে।
উল্লেখ্য , এর মধ্যে একাধিক শব্দ ও শব্দবন্ধ অতীতে বিরোধীরা প্রয়োগ করেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) বিরুদ্ধে।
বিরোধীদের অভিযোগ, এ বার আইনসভার অন্দরেও সমালোচনার কণ্ঠরোধ করতে চাইছে মোদি সরকার।

লোকসভা এবং রাজ্যসভা অধিবেশন চলাকালীন বেশ কিছু শব্দের প্রয়োগের ওপর এহেন নিষেধাজ্ঞা বস্তুত স্বাধীন ভারতে এই প্রথম। অবশ্যই ২০৭৫ থেকে ১৯৭৭ এর জরুরি অবস্থা (Emergency) বাদ দিয়ে। অন্তত এমনটাই বলছেন অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের সদস্যরা।
বুধবার প্রকাশিত ‘অসংসদীয় শব্দের’ (Unparliamentary Wotds) তালিকায় রয়েছে, ‘লজ্জাজনক’, ‘নির্যাতন’, ‘বিশ্বাসঘাতকতা’, ‘নাটক’, ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’, ‘অযোগ্য’ ‘ভণ্ডামি’র মত বেশ কিছু শব্দ। সংসদের অধিবেশনে ‘নৈরাজ্যবাদী’, ‘শকুনি’, ‘স্বৈরাচারী’, ‘খালিস্তানি’, ‘বিনাশপুরুষ’, ‘জয়চাঁদ’ (পৃথ্বীরাজ চৌহানের বিরুদ্ধে মহম্মদ ঘোরিকে মদত দেওয়া কনৌজের রাজা), ‘তানাশাহি’-র মত শব্দের প্রয়োগও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

ইতিমধ্যেই সাংসদদের মুখে ‘লাগাম পরাতে’ নরেন্দ্র মোদি সরকারের উদ্যোগের বিরোধিতা করেছে তৃণমূল কংগ্রেস (AITC)।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) দলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন (Derek O’Brien) আলাদা করে টুইট (Tweet) করেছেন।


সেখানে ডেরেক লিখেছেন, “আগামী কয়েক দিনের মধ্যে অধিবেশন শুরু হবে। সাংসদদের ওপর জারি করা হল তামাশার নির্দেশিকা। এখন, সংসদে বক্তৃতা দেওয়ার সময় আমাদের এই মৌলিক শব্দগুলি ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না। আমি লজ্জিত। ‘অপব্যবহার’, ‘বিশ্বাসঘাতকতা’, ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’, ‘ভণ্ডামি’, ‘অযোগ্য’— আমি এই সব শব্দ ব্যবহার করব। আমাকে সাসপেন্ড করুন। গণতন্ত্রের জন্য লড়াই চালিয়ে যাব।”

তৃণমূলের লোকসভা সাংসদ, মহুয়া মৈত্রও (Mohua Moitra) টুইটে সরব হয়েছেন এই ইস্যুতে।

লোকসভার সচিবালয়ের তরফে প্রকাশিত ‘অংসসদীয় শব্দের’ তালিকা নিয়ে এবার সংসদের বাদল অধিবেশন চলাকালীন রাস্তায় নামতে পারে বিরোধীরা। বিভিন্ন অবিজেপি রাজনৈতিক দলগুলো এই নিয়ে আলাপ-আলোচনা শুরু করে দিয়েছে বলেই জানা যাচ্ছে।


এর মধ্যে যেমন “জুমলা বাজ” শব্দটি। সংসদে প্রথম ব্যবহার করেছিলেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi)। যা পরবর্তীকালে অন্যান্য অনেক রাজনৈতিক দল নরেন্দ্র মোদির সরকারকে বোঝাতে ব্যবহার করেছে।
বিরোধীদের বক্তব্য, সমস্ত অপ্রিয় শব্দ বক্তৃতা থেকে বাদ দেওয়া হলে সেক্ষেত্রে সরকার বিরোধী বক্তব্য রাখার কোনও মানেই হয় না।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *