আজ খবর ডেস্ক:
অনলাইন পরীক্ষা মানেই ধরে নেওয়া হয় বাড়িতে বসে বই দেখে উত্তর লিখেছে ছাত্রছাত্রীরা। না হলে বাইরে থেকে এসেছে সাহায্য। কিন্তু রাজ্যের মৌলানা আবুল কালাম আজাদ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (MAKAUT) এমন উপায় আবিষ্কার করেছে, যাতে অনলাইনে পরীক্ষা দিলেও টোকাটুকি সম্ভব নয়। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (artificial intelligence) ব্যবহারে সেই উদ্ভাবন ম্যাকাউটকে এনে দিল আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি।

চলতি বছরের ই-অ্যাসেসমেন্ট আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছে ম্যাকাউট। ভারত-সহ পৃথিবীর নানা দেশ থেকে ৪৫ টি মনোনয়নের তালিকা থেকে চূড়ান্ত তিনটি মনোনয়নকে বেছে নেন বিশেষজ্ঞরা। তার মধ্যে সেরার পুরস্কার জিতে নেয় রাজ্যের প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। গত ২১ জুন ফল ঘোষিত হয় লন্ডনে।

‘বেস্ট সাম্যাটিভ অ্যাসেসমেন্ট প্রজেক্ট পুরস্কার ২০২২’ পাওয়ার পর ম্যাকাউটের উপাচার্য অধ্যাপক সৈকত মৈত্র জানিয়েছেন, “আমরা আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্স ব্যবহার করে ফাইনাল পরীক্ষা নিয়েছি। বাড়িতে বসে অনলাইনে পরীক্ষা দিলেও কোনও ছাত্রছাত্রী অসৎ উপায় অবলম্বন করতে পারেনি। সেই কারণেই এই পুরস্কার। আমরা গর্বিত। পাশাপাশি আরও বেশি করে প্রযুক্তি নির্ভর পরীক্ষা ব্যবস্থা রূপায়নের অঙ্গীকার করছি। এই পুরস্কার দেশের অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকেও উৎসাহ দেবে।” অস্ট্রেলিয়াসহ বেশ কয়েকটি দেশের আন্তর্জাতিক বিচারকরা এই প্রযুক্তির বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

অধ্যাপক সৈকত মৈত্র

গত দুই বছর ধরে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ভিত্তিক প্রক্টরড পদ্ধতি ব্যবহার করে অনলাইন পরীক্ষা পরিচালনা করছে ম্যাকাউট। এই পদ্ধতির বিশেষত্ব হল, পরীক্ষার সময় অন্য কেউ ঘরে উপস্থিত থাকলে এবং পরীক্ষার্থীকে সাহায্য করলে সহজেই ধরা পড়বে। এমনকি যদি পরীক্ষার্থী কোন বই বা অন্য কোন নোটসের দিকে মাথা ঘুরিয়ে দেখে লেখে, তবে এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিশেষ প্রযুক্তিটিতে তা ধরা পরে যাবে। অসৎ উপায় অবলম্বন করলে, এই প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রথমে পরীক্ষার্থীকে সতর্ক করা হবে, তারপরে প্রয়োজনে স্ক্রিন থেকে টুকলি করা প্রশ্ন-উত্তর স্বয়ংক্রিয় ভাবেই মুছে যাবে।

শুভাশিস দত্ত

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, শুভাশিস দত্ত বলেন, ” মাত্র ছয় মাসের মধ্যে আমরা এই পদ্ধতিটি তৈরি করেছি এবং এটি বাস্তবায়ন শুরু করেছি। দুবছর ধরে একই পদ্ধতিতে পরীক্ষা চলছে। শিক্ষার্থীরা যাতে বঞ্চিত না হয় সেজন্য বিজ্ঞানসম্মতভাবে প্রশ্নপত্রও তৈরি করা হয়। অনেক সময় শিক্ষকের দেওয়া নম্বর ভিন্ন হয়। আমাদের প্রশ্নে সেটা সম্ভব নয়।” প্রসঙ্গত, চলতি বছরে ১ লক্ষ ৬০ হাজার স্নাতক পড়ুয়া এই প্রযুক্তির মাধ্যমে ম্যাকাউটে ফাইনাল পরীক্ষা দিয়েছে।

সকল শিক্ষক-শিক্ষিকাকে ধন্যবাদ জানানোর পাশাপাশি তিনি আরও বলেন যে, বিশ্ববিদ্যালয় শুধু পরীক্ষায় নয়, পঠনপাঠনেও প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়িয়েছে। এইভাবে, MAKAUT শিক্ষার মান উন্নয়নে তার নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *