আজ খবর ডেস্ক:
পঞ্চায়েত ভোটের আগে ঢেলে সাজাতে হবে দলের সংগঠন। আর তাই গত কয়েক মাস ধরে একাধিক কর্মসূচি নিয়েছে সিপিআইএম (CPIM)। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি (SSC Scam), কয়লা (Coal Smuggling) ও গরু পাচার কান্ড (Cattle Smuggling) কে সামনে রেখে কখনও “চোর ধরো জেল ভরো” আবার কখনও “পাহারায় পাবলিক” এরকম নানান কর্মসূচি চলছে রাজ্যজুড়ে।


বুধবার বর্ধমানের (Bardhaman) কার্জন গেট চত্বর কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নিল সিপিএমের একটি কর্মসূচি ঘিরে। পুলিশ (Police) কর্মীদের সঙ্গে বাম নেতা কর্মীদের সংঘর্ষে কার্যত উত্তাল হয়ে ওঠে বর্ধমান শহর।

“চোর ধরো, জেল ভরো” স্লোগান দিয়ে এদিন বর্ধমানের দুটি জায়গায় সভা করে সিপিএম। বড় নীলপুর মোড়ের সভায় ভাষণ দেন দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম (Md.Selim)। স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় আরেকটি সমাবেশ হয়। তারপর জেলাশাসকের অফিসের দিকে শুরু হয় মিছিল।
ঠিক এরকম ভাবেই গত সপ্তাহে তমলুকে জেলাশাসকের দপ্তর অভিযান কে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে উঠেছিল পূর্ব মেদিনীপুরের ওই জেলা সদর। সেই কর্মসূচির নেতৃত্বে ছিলেন সিপিআইএম কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী (Sujan Chakraborty)।
বুধবার সকাল থেকেই কার্জন গেটের সামনে বিরাট loব্যারিকেড করে রেখেছিল পুলিশ। কার্জন গেট চত্বরে মিছিল পৌঁছতেই শুরু হয় উত্তেজনা। কয়েকশো বাম সমর্থক পুলিশের ব্যারিকেড ভাঙতে থাকে। বিক্ষিপ্তভাবে কেউ কেউ বাঁশ, লাঠি দিয়ে বাসস্ট্যান্ডে লাগানো মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) ছবি দেওয়া বিভিন্ন হোর্ডিং ভাঙতে এগিয়ে যায়।

বিশ্ব বাংলার লোগো উপড়ে ফেলেন সিপিএম কর্মীরা। পাশাপাশি, পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোড়ার অভিযোগও উঠেছে তাঁদের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় দু’পক্ষেরই বেশ কয়েক জন জখম হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য অনুসারে, পরপর তিনটি ব্যারিকেড ভেঙে দেন সিপিএম সমর্থকরা। এরপরেই পুলিশ লাঠি চালাতে শুরু করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ফাটানো হয় কাঁদানে গ্যাসের শেলও।
বুধবার পূর্ব বর্ধমান জেলা সিপিএমের ডাকে জেলাশাসকের দপ্তরের সামনে “আইন অমান্য” কর্মসূচি শুরু হয় বিকেলে। দুপুর থেকেই জেলাশাসকের দপ্তর ও তার সংলগ্ন এলাকায় পুলিশ মোতায়েন ছিল।
সিপিএমের তরফে অভিযোগ, পুলিশ বিনা প্ররোচনায় তাঁদের ওপর নির্ভচারে লাঠিচার্জ করেছে।


পাল্টা পুলিশের বক্তব্য, পুলিশ কর্মীদের লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুঁড়তে শুরু করেন সিপিএম কর্মীরা। পুলিশ পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে জলকামান ও কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে।
কিন্তু তাতেও সিপিএমকর্মীরা থামেননি। তাঁরা কার্জন গেটের বিশ্ব বাংলার লোগো উপড়ে ফেলেন। আর এই ঘটনা ঘিরে আবারও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

এদিনের সভায় দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম সিপিএম কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘লুট হলে, ধর্ষণ হলে এ রাজ্যের পুলিশকে খুঁজে পাওয়া যায় না। ১৯৫৯ সালে হাজার হাজার মানুষ খাদ্যের দাবিতে সমবেত হন। পুলিশ লাঠি পিটিয়ে ৮৪ জন মানুষকে খুন করে। প্রত্যেক বছর আমরা শহিদদের স্মরণ করি। কিন্তু গুন্ডা-পুলিশ নামিয়ে আমাদের দমানো যায়নি। শুভেন্দু অধিকারী কম দুর্নীতিগ্রস্ত নন। মুখ্যমন্ত্রী তালিকা করে নাম বলে দিয়েছেন। উনি যতই বিশ্ব বাংলার ঢাক পেটান না কেন, ওই ঢাক ফেটে গিয়েছে। আজ রাজ্যকে বাঁচাতে লাল ঝান্ডা আবার রাস্তায় নেমেছে।’’

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *