আজ খবর ডেস্ক:
বানভাসি বঙ্গে শনিবার সকাল থেকে কিছুটা স্বস্তি মিলেছে। দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় এদিন বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বৃষ্টি কমেছে। কিন্তু বিস্তীর্ণ এলাকা জলের তলায়। কোথাও আবার ১২ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বিদ্যুৎ নেই।
বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া গভীর নিম্নচাপ অতি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। তার প্রভাবে দক্ষিণবঙ্গ ও পশ্চিমাঞ্চলের একাধিক জেলায় শুক্রবার দুপুরের পর শুরু হয় প্রবল দুর্যোগ। অবিরাম চলতে থাকা বৃষ্টিতে ভিজেছে শহর থেকে শহরতলি। সারারাত ভারী বৃষ্টি হয়েছে কলকাতা, হাওড়া ও হুগলিতে।

উত্তর ২৪ পরগণা, দক্ষিণ ২৪ পরগণা, দুই মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রামেও প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে। এইসব জায়গায় শনিবার সকাল থেকেও আকাশের মুখ ভার। বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি বিভিন্ন জায়গায়। হাওয়া অফিস জানিয়েছে, আপাতত ঝাড়খণ্ডে সরে গেল অতি গভীর এই নিম্নচাপ। জামশেদপুর থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে আপাতত তার অবস্থান।
তবে বাংলা থেকে সরে গেলেও দুর্যোগ যে বাংলার বরাত থেকে পুরোপুরি কেটে যাচ্ছে এমনটা একেবারেই নয়। শনিবারও দিনভর দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে।
এদিন সকালেও দমকা হাওয়া বইতে দেখা গেছে। তবে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই হাওয়ার গতিও কমে আসবে। এদিনও মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। সমুদ্রের ধারে ঝোড়ো হাওয়া বইবে। তাই সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে উপকূলের জেলাগুলিকে।

ঝাড়খণ্ড (Jharkhand) থেকে এবার অতি গভীর নিম্নচাপ (Depression) এগোবে ছত্তীসগঢ়, মধ্য প্রদেশের দিকে। দফায় দফায় শক্তিও হারাবে।
দক্ষিণ ২৪ পরগণা ও পূর্ব মেদিনীপুরের সমুদ্র উপকূলে শনিবার ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার বেগে দমকা ঝোড়ো হাওয়া বইবে।
শনিবার কলকাতা ও আশেপাশের জেলাগুলিতে হাল্কা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকলেও পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতে বিক্ষিপ্তভাবে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পশ্চিম বর্ধমানে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। অন্যদিকে উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার ও জলপাইগুড়িতে হাল্কা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

অতি গভীর নিম্নচাপের জেরে আজও দিনভর ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা বাংলার উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে।
কাঁথিতে প্রবল ঝড়-বৃষ্টির ফলে গত ১২ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন। পানীয় জলের সমস্যা বাড়ছে। বিদ্যুতের অভাবে হাসপাতালগুলিতে রোগী পরিষেবার সমস্যা ও হচ্ছে।
দক্ষিণ ২৪ পরগণার উপকূলবর্তী এলাকায় সমস্ত ফেরি চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মৌসুমী অক্ষরেখা সুলতানপুর হয়ে বিহারের গয়ার উপর দিয়ে রাজ্যের পশ্চিমের জেলা বাঁকুড়ার ওপর দিয়ে বঙ্গোপসাগর অবধি চলে গেছে।


পর্যটকদের সমুদ্র স্নানে আজও জারি রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। গার্ডওয়ালের ধারে যেতেও নিষেধ করা হয়েছে। নিম্নচাপের প্রভাবে বৃহস্পতিবার রাত থেকেই সৈকত শহর দিঘায় প্রবল বৃষ্টির সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া বইছে।
গতকাল থেকেই উপকূরবর্তী জায়গায় ঘূর্ণিঝড় সংক্রান্ত সতর্কতামূলক প্রচার হয়। মাঝ সমুদ্র থেকে তীরে ফিরতে গিয়ে ঘটে যায় ভয়াবহ ট্রলার দুর্ঘটনা। ১৮ জন মৎস্যজীবী এই ট্রলার দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন বলে খবর।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *