আজ খবর ডেস্ক:
পাঁচতারা রিসর্টে পাঁচতারা চিন্তন শিবির। শুরু হয়েছিল সোমবার। প্রধান বক্তা ছিলেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফে এই রাজ্যে (West Bengal) বিজেপির (BJP) নয়া পর্যবেক্ষক সুনীল বনশল (Sunil Bansal)।
বছর ঘুরলেই বাংলায় পঞ্চায়েত ভোট। তার পরে ২০২৪ লোকসভা৷ মহা আড়ম্বরে তিন দিনব্যাপী চিন্তন শিবির হলেও বেশ কয়েকজন বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীর অনুপস্থিতি কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের।
গেরুয়া শিবির সূত্রে খবর, সুনীল বনশলের বক্তব্যের অনেকটাই জুড়ে ছিল অন্তর্কলহ ভুলে এক হয়ে থাকার বার্তা।
সুকান্ত মজুমদার, শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari), দিলীপ ঘোষদের সামনে ভাষণ দিতে গিয়ে বনশল বললেন, ” দলের বিস্তার করতে হবে। তার জন্য দরজা খোলা রাখতে হবে। দরজা, জানালা বন্ধ করে কোন রাজনৈতিক দল চলে না। রাজনৈতিক দলে আসা যাওয়ার দরজা বন্ধ করা যায় না। “
রাজনৈতিক মহলের মতে, পূর্বসূরী কৈলাশ বিজয়বর্গীয়কে দিয়ে অমিত শাহরা (Amit Shah) তৃণমূল (TMC) থেকে নেতা ভাঙিয়ে, বাংলা দখলের যে কৌশল নিয়েছিলেন, নীতিগত ভাবে তার কোনও পরিবর্তন হচ্ছে না।
তবে এসব তো নিছক শুকনো রাজনৈতিক কথা। রাজারহাটে ৩ দিনের শিবির এদিনই শেষ হচ্ছে। রীতিমত জমকালো শিবিরের থাকা খওয়ার জন্য অংশগ্রহণকারী প্রতিনিধিদের জন্য মাথাপিছু শুধু খাওয়া বাবদ খরচ হয়েছে
প্রায় ২০০০ টাকা৷ সবমিলিয়ে এই চিন্তন শিবিরের বাজেট প্রায় ২.৫ কোটি টাকা বলে বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে৷
গোটা চিন্তন শিবিরের আয়োজনের জন্য ওই রিসর্টের তিনটি ক্যাটাগরির মোট ১৫০টি ঘর ভাড়া নেওয়া হয়েছিল বিজেপির পক্ষ থেকে ৷ চিন্তন শিবিরের বিপুল খরচ নিয়ে তাই কটাক্ষও শুনতে হচ্ছে বিজেপি নেতাদের৷
বাংলার শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস যেমন বলছে, দলের কার্যকর্তাদের সন্তুষ্ট করতেই এই এলাহি চিন্তন শিবিরের আয়োজন করা হয়েছে।
বুধবার শিবির শেষের আগে, রাজ্য বিজেপি-র চিন্তন শিবিরের রাজকীয় আয়োজনের যে বিবরণ পাওয়া যাচ্ছে তা এইরাজ্যে অন্তত এর আগে চোখে পড়েনি। বিজেপি নেতাদের থাকা, খাওয়ার জন্য যে বিলাসবহুল আয়োজন করা হয়েছিল তা স্পষ্ট৷
জানা গিয়েছে, সোমবার সকালে রিসর্টে (Resort) ঢোকার পর প্রতিনিধিদের ওয়েলকাম ড্রিঙ্ক (Welcome Drink) হিসেবে দেওয়া হয় সরবৎ ৷ সঙ্গে ছিল দই বড়া৷
এমনিতে বিজেপির অধিকাংশ অনুষ্ঠানে খাদ্য তালিকায় আমিষ পদ বর্জন করা হয়। তবে এই চিন্তান শিবিরে তা হয়নি। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, বাংলার নেতাদের কথা মাথায় রেখেই হয়ত গেরুয়া শিবির মাছ ভাতেরই শুধু নয়, বিভিন্ন রকমের মাংসের পদও রেখেছিল।
৩দিন ঘুরিয়ে ফিরিয়ে লাঞ্চের মেনুতে ছিল:
দেরাদুন/ তুলাইপঞ্জি চালের ভাত, শুক্তো, ডাল ফ্রাই, পোটাটো ফ্রাই, বেগুন ভাজা, ফিশ ফ্রাই, আলু ফুলকপির তরকারি, পনির মশলা, মাটন কষা, ফিশ কারি, মশালা৷ বেগুন ভর্তা, রুই কারি, দই কাতলা, চিকেন মশালা কারি, গ্রিন স্যালাড, ৩ রকমের ফ্রুট জুস৷
রাতের মেনুতে ছিল নান/বাটার নান, ভেজ /নন বেজ তন্দুরি, তুলাইপঞ্জি চালের ভাত, ডাল ফ্রাই, বেগুন ভাজা, ফিশ ফ্রাই, আলু ফুলকপির তরকারি, পনির মশলা, মাটন কষা, ফিশ কারি।
কৈলাশ বিজয়বর্গীয়র জায়গায় দায়িত্ব নেওয়ার পর, রাজ্যে প্রথম পা রাখলেন সুনীল বনশল। যোগী রাজ্যে দলের নির্বাচনী সাফল্যের পেছনে সুনীলের অবদানের কথা মাথায় রেখেই তাঁকে বাংলায় পাঠানো হয়েছে বলে গেরুয়া শিবিরের দাবি।