আজ খবর ডেস্ক:
মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court of India) যোগগুরু বাবা রামদেবকে (Baba Ramdev) অ্যালোপ্যাথির মত আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে তাঁর “অপমানজনক” মন্তব্যের সমালোচনা করেছে।
প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহে দিল্লি হাইকোর্ট (Delhi High Court) বাবা রামদেবকে আয়ুর্বেদ নিয়ে বিভ্রান্তিকর মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকতে বলেছিল।
কোভিড-১৯ অতিমারীর সময় রামদেবের সংস্থা পতঞ্জলির “করোনিল” (Coronil Tablet) ব্যবহার সংক্রান্ত ভুল তথ্য ছড়ানোর অভিযোগে রামদেবের বিরুদ্ধে চিকিৎসকদের বিভিন্ন সংগঠনের দায়ের করা আবেদনের শুনানি চলছিল শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে।


এদিন ভারতীয় মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (IMA) একটি আবেদনের শুনানি চলাকালীন সুপ্রিম কোর্ট এই পর্যবেক্ষণ জানিয়েছে।
আইএমএ’র আবেদনের জবাব চেয়ে কেন্দ্রকে নোটিশও জারি করেছে বেঞ্চ।

প্রধান বিচারপতি এনভি রমান্নার নেতৃত্বে গঠিত বেঞ্চ বলেছে, রামদেব আয়ুর্বেদকে জনপ্রিয় করার জন্য প্রচার চালাতে পারেন। তবে অন্য চিকিৎসা ব্যবস্থার সমালোচনা করা উচিত নয়।


প্রধান বিচারপতি এনভি রমান্না এদিন প্রশ্ন তোলেন,
“বাবা রামদেব কেন অ্যালোপ্যাথি ডাক্তারদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন? তিনি যোগব্যায়ামকে জনপ্রিয় করেছেন। ভাল। কিন্তু তাঁর অন্য ব্যবস্থার সমালোচনা করা উচিত নয়। তিনি যা অনুসরণ করেন তাতেই সব ঠিক হয়ে যাবে তার নিশ্চয়তা কী?”

প্রসঙ্গত, কোভিড টিকার (Covid Vaccine) কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে জনসাধারণকে বিভ্রান্ত করার অভিযোগ এনে রামদেবের বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল চিকিৎসকদের সংগঠন ‘ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন। সেই মামলার শুনানি চলাকালীনই এই মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি রমান্না। আইএমএ-র আবেদনে কেন্দ্রের কী মত, সেই জবাব চেয়েও নোটিস পাঠিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।


গত বছর, কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ে যখন হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারাছিলেন তখন রামদেবকে একটি ভিডিওতে বলতে শোনা গিয়েছিল, “অ্যালোপ্যাথিক ওষুধের কারণে লক্ষ লক্ষ লোক মারা গেছে, যারা চিকিৎসা বা অক্সিজেন না পেয়ে মারা গেছে তাদের চেয়ে অনেক বেশি।” যোগ গুরু এমনকি কথিতভাবে অ্যালোপ্যাথিকে একটি “মূর্খ এবং দেউলিয়া” বিজ্ঞান বলে অভিহিত করেন।
এমনকি, তিনি দাবি করেছিলেন করোনা ভাইরাস ভ্যাকসিনের উভয় ডোজ পাওয়ার পরেও ভারতে বেশ কয়েকজন চিকিৎসক মারা গেছেন।

আইএমএ, এর আগে একটি মিডিয়া বিবৃতিতে বলেছিল, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের উচিত পদক্ষেপ নেওয়া এবং মহামারী আইনের অধীনে রামদেবের বিরুদ্ধে মামলা করা। কারণ তিনি বিবৃতি দিয়ে সেইসময় মানুষকে বিভ্রান্ত করেছিলেন এবং বৈজ্ঞানিক ওষুধের মানহানি করেছিলেন।
ভারতীয় চিকিৎসকদের এই সংগঠনের তরফে অভিযোগ করা হয়, রামদেব অ্যালোপ্যাথি এবং আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের সঙ্গে যুক্ত চিকিৎসকদের খ্যাতি নষ্ট করেছেন যখন তাঁরা অতিমারী চলাকালীন মানুষের জীবন বাঁচানোর চেষ্টা করেছেন। অতিমারী আবহে রামদেব দাবি করেছিলেন, তাঁর সংস্থার তৈরি আয়ুর্বেদিক ওষুধ “কোরোনিল” কোভিড-১৯ ভাইরাস থেকে পুরোপুরি ভাবে সুরক্ষা দিতে সক্ষম।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *