আজ খবর ডেস্ক:
নীতিশ কুমারের (Nitish Kumar) জনতা দল ইউনাইটেড (JDU) বিজেপির (BJP) সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার পরেই শুরু হল বিহার (Bihar) জুড়ে কেন্দ্রীয় দুই তদন্তকারী সংস্থার (ED/ CBI) হানা।


বুধবারই লালু প্রসাদ যাদবের (Lalu Prasad Yadav) রাষ্ট্রীয় জনতা দল (RJD) সমর্থিত নীতীশ কুমারের নেতৃত্বাধীন সরকার বিহার বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের পরীক্ষা দিচ্ছে। আর ঠিক সেই দিনটিকেই বেছে নেওয়া হল কেন্দ্রীয় এজেন্সির হানা দেওয়ার জন্য।

সিবিআইয়ের আধিকারিকরা এদিন সকাল ৮টা নাগাদ RJD-র রাজ্যসভার সাংসদ আহমেদ আশফাক করিম, ডঃ ফাইয়াজ আহমেদ এবং বিহারের আইন পরিষদের সদস্য সুনীল সিংয়ের বাড়িতে পৌঁছন।
বস্তুত আজ সকাল থেকে বিহার এবং ঝাড়খণ্ডের (Jharkhand) নানা জায়গায় অভিযানে নেমেছে দুই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সুনীল সিং আরজেডির কোষাধক্ষ্য। তিনি অভিযোগ করেন, এদিন সকালে সিবিআই আধিকারিকরা তাঁর বাড়িতে ঢুকে তাঁকে ঘর থেকে বের করে দিয়েছে।
সূত্রের খবর, সব মিলিয়ে ৪২ জায়গায় হানা দিয়েছে দুই সংস্থা। একই মামলায় ইডির অভিযান চলছে দিল্লি ও তামিলনাড়ুতেও।

প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও তেজস্বী যাদবের (Tejaswi Yadav) মা রাবড়ি দেবী বলেন, “ওরা ভয় পাচ্ছে। নীতীশ কুমারের নেতৃত্বে নতুন সরকার গঠিত হয়েছে। বিজেপি ছাড়া সব দল আমাদের সঙ্গে আছে। আমাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে। সিবিআই (অভিযান) শুধু আমাদের ভয় দেখানোর জন্য। আমরা ভয় পাব না। এটা প্রথমবার হচ্ছে না।”


বিজেপির সঙ্গ ছাড়ার পর থেকেই গেরুয়া শিবিরের নেতারা হুঁশিয়ারি দিচ্ছিলেন বলে আগেই অভিযোগ জানিয়েছিলেন নীতীশ কুমার। নিজের দলের নেতাদের এই বিষয়ে প্রস্তুত থাকতে বলেছিলেন তেজস্বী যাদবও।
এমনকি, লালুপ্রসাদের পুত্র তেজস্বীকে অচিরেই জেলে যেতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন বিজেপি নেতা সুশীল মোদী। তারপরেই দেখা গেল, বিহার বিধানসভায় আস্থা ভোটের দিনই ইডি-সিবিআইয়ের হানা। যাকে বিজেপি বিরোধীরা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বলে দাবি করছে।

বিহারে সিবিআই শাসক জোটের প্রধান শরিক লালুপ্রসাদ যাদবের দল রাষ্ট্রীয় জনতা দলের পাঁচ নেতার বাড়িতে হানা দিয়েছে। আরজেডি’কে আর্থিক সাহায্য করে এমন একজন ব্যবসায়ীর বাড়িতেও হানা দিয়েছে তারা। এছাড়া, আরজেডির দুই রাজ্যসভার সাংসদ এবং একজন প্রাক্তন বিধায়কের বাড়িতে তল্লাশি চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
খবর মিলেছে, গুরুগ্রামে (Gurugram/Gurgaon) শপিং মল তৈরির একটি কনস্ট্রাকশন কোম্পানিতেও তল্লাশি চালাচ্ছে ইডি। সেটি তেজস্বী যাদবের বেনামি কোম্পানি বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
বিহারে কেন্দ্রীয় এজেন্সির এই অভিযানের নেপথ্যে রেলের জমি বেআইনিভাবে লিজ দেওয়ার মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে। ওই মামলার এফআইআর-এ (FIR) নাম আছে বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী তথা লালুপ্রসাদের পুত্র তেজস্বী যাদব ও বড় মেয়ে মিসার। তেজস্বীর বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই চার্জশিট জমা দিয়েছে তদন্তকারী সংস্থা। তেজস্বী ও মিসা, দু’জনেই এখন জামিনে মুক্ত।


এদিকে, ঝাড়খণ্ডে অভিযানের কারণ খনি কেলেঙ্কারি (Mine Scam)। রাঁচিতে মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সরেনের (Hemant Soren) প্রতিবেশী এক ব্যবয়াসীর বাড়িতে তল্লাশি চলছে যিনি ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার (JMM) ঘনিষ্ঠ। খনি কেলেঙ্কারিতে সন্দেহের তালিকায় রয়েছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত। দাবি, গেরুয়া শিবিরের।


আবার এদিনই সাংবাদিক সম্মেলন করে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের (Arvind Kejriwal) দল (AAP) দাবি করেছে, দিল্লির সরকারকে ফেলে দেওয়ার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে বিজেপি। বিধায়কদের টাকার টোপ দেওয়া হচ্ছে। তাতে কাজ না হওয়ায় সিবিআইয়ের ভয় দেখানো হচ্ছে। আপের দাবি, তাদের এক একজন বিধায়ককে কুড়ি কোটি টাকার লোভ দেখাচ্ছে বিজেপি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *