আজ খবর ডেস্ক:
ইউনেস্কোর (Unesco) স্বীকৃতি বাড়িয়ে দিল পুজোর বাজেট। ২০২২ এর দুর্গাপুজো (Durga Puja) কে সব দিক থেকে মনে রাখার মত করতে আগ্রহী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।
নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে এদিনের পুজো মিটিংয়ে যেন সব তারই আগাম ছবি মিলল।
ফি বছর রাজ্যের বিভিন্ন ক্লাবগুলিকে দুর্গাপুজোর জন্য বিশেষ অনুদানের দেয় রাজ্য সরকার। গতবছর দুর্গাপুজোর জন্য ক্লাবগুলিকে ৫০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া হয়েছিল।
এবছর এক লাফে বাড়ল অনুদানের অঙ্ক। ক্লাবপ্রতি ৬০ হাজার টাকা পুজো অনুদান দেবে রাজ্য সরকার। সঙ্গে ৫০ শতাংশ নয়, বিদ্যুৎ বিলে (Electric Bill) মিলবে ৬০ শতাংশ ছাড়।
এমনিতেই দেনার দায়। তার ওপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দীর্ঘদিনের অভিযোগ কেন্দ্র প্রকল্পের পুরো টাকা দিচ্ছে না। সম্প্রতি এই নিয়ে অভিযোগ জানাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) সঙ্গে দিল্লি গিয়ে বৈঠক করে এসেছেন মমতা।
তাই এদিন পুজো উদ্যোক্তাদের বার্তা দিলেন, “কম টাকাতে ভালো পুজো করা যায়। আবার বড় ক্লাবের বড় মেনু, বড় ভেনু (Venue) হয়। এমনভাবে পুজো করবেন যাতে পদপিষ্টের ঘটনা না ঘটে, গ্রামের শিল্পীরা আপনাদের ওখানে কয়েকদিন থেকে খুশি হয়, বিদেশীরা যেন কোনও সমস্যায় না পড়েন”।
মমতা বলেন, “আগের বার দিয়েছিলাম কত? আমার কাছে কিন্তু নেই, ভাঁড়ার শূন্য। মা দুর্গা ভাঁড়ার ভর্তি করে দেবেন, আমি আশা করি। তাই এবার আমরা আমাদের কষ্ট থাকা সত্ত্বেও ৫০ হাজার টাকাটা ৬০ হাজার টাকা করে দিলাম। খুশি তো?”
এই মুহূর্তে রাজ্যে মোট ৪০ হাজার ৯২ টি ক্লাব দুর্গাপুজোর সরকারি অনুদান পায়। সেই অনুযায়ী চলতি বছরে ২৪০ কোটি ৫৫ লাখ ২০ হাজার টাকা অনুদান দেওয়া হচ্ছে দুর্গাপুজোর জন্য। এর মধ্যে শুধু কলকাতাতেই পুজো হয় প্রায় ২৭০০ টি। আর গোটা রাজ্যে মহিলা পরিচালিত পুজো হয় ২ হাজার ১৪১ টি।
বিদ্যুতের বিলে অতিরিক্ত ছাড়ের ঘোষণা করে মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, “এবারের পুজো স্পেশাল। বিশ্বের গর্ব, বিশ্বসেরা মা দুর্গা, তাঁর পদার্পণে আমি ইলেকট্রিক সাপ্লাই এবং স্টেট ইলেকট্রিসিটি বোর্ডকে ছাড়ের পরিমাণ ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৬০ শতাংশ করার অনুরোধ করছি। দমকলে আপনাদের পয়সা লাগে না। উঠিয়ে দিয়েছি। ট্যাক্স লাগে না। বিজ্ঞাপনের ট্যাক্সও লাগে না।”
এই বছর রাজ্যে চারদিন ধরে দুর্গাপুজোর প্রতিমা নিরঞ্জন চলবে বলেও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ৫ই অক্টোবর থেকে ৮ই অক্টোবর পর্যন্ত চলবে প্রতিমা নিরঞ্জন। ৭ই অক্টোবর জেলাগুলিতে এবং ৮ই অক্টোবর কলকাতায় আয়োজিত হবে পুজোর কার্নিভাল।
আগেই ঘোষণা করা হয়েছিল আগামী ১লা সেপ্টেম্বর রাজ্যজুড়ে পুজো উপলক্ষে মহা মিছিল হবে। যেখানে পুজো সংক্রান্ত ট্যাবলো থেকে আরও নানান আকর্ষণীয় বিষয়, বাংলার কৃষ্টি সংস্কৃতি তুলে ধরা হবে।
১তারিখ বেলা ২টো থেকে কলকাতার মিছিল শুরু হবে। জোড়াসাঁকা ঠাকুরবাড়ি থেকে রানি রাসমণি অ্যাভিনিউ ধরে ধর্মতলা পর্যন্ত যাওয়ার কথা সেটির। তাতে সামিল হতেই পুজো উদ্যোক্তাদের আর্জি জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সঙ্গে আর্জি, একাদশ-দ্বাদশের পড়ুয়াদেরও যেন নিয়ে আসা হয় যাতে এই ঐতিহ্য তারাও পরে ধরে রাখতে পারে।
ওই দিন রাজ্যজুড়ে সব স্কুলের ছুটির ঘোষণা করা হয়েছে। বেলা একটার মধ্যে ছুটি দিয়ে দিতে অনুরোধ জানানো হয়েছে বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি সংস্থাকে।
মোট ৪-৫ কিলোমিটার রাস্তা হাঁটবেন মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা। যে যেমন চান, তেমন ভাবে আসতে পারেন। ‘রঙিন পোশাক-ছাতা নিয়ে মিছিল হতে পারে’, বলেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে শর্ত একটাই, মিছিল যেন রঙিন হয়। তাঁর কথায়, “কেমন ভাবে পুজো করেন, তা দেখতে বিদেশ থেকে প্রতিনিধিরা আসবেন। মিছিল দেখতে হাজির থাকবেন ইউনেস্কোর প্রতিনিধিরাও।”