আজ খবর ডেস্ক:
বন্যার কবলে পাকিস্তান (Pakistan)। করাচি (Karachi) থেকে বালোচিস্তান (Balochistan), ভাসছে দেশের সব প্রদেশ। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা যাচ্ছে, এখনও পর্যন্ত মৃত কমপক্ষে ৫৫০ জন।
পাকিস্তান প্রশাসন বলছে, সে দেশে গত ৩০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা এটি। এত মানুষের মৃত্যু অতীতে হয়নি। ঘর ছাড়া কয়েক লক্ষ মানুষ।


পাকিস্থানের দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত বালোচিস্তান প্রদেশ সব থেকে বিপর্যস্ত। প্রায় ৭০০ কিলোমিটারের বেশি রাস্তা জলে ভেসে গেছে। চাষের জমি ধুয়ে মুছে সাফ। ৪৬ হাজার বাড়ি ভেঙেছে। যাতায়াত, যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত। বিদ্যুৎ নেই অধিকাংশ এলাকায়। চরম খাদ্য সঙ্কট তৈরি হয়েছে। বন্যার জলকেই পরিশ্রুত করে পানীয় জল হিসাবে খেতে হচ্ছে।
ভারী বর্ষার কারণে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় বলে একটি সরকারি সংস্থা জানিয়েছে।

গত কয়েক দশকের মধ্যে ভয়াবহ বন্যা। পেশোয়ারে (Peshawar) বালোচিস্তানের বন্যার্তদের জন্য শ্রমিকরা ত্রাণ সামগ্রীর বস্তা বোঝাই করছেন।
করাচিতে প্রবল বৃষ্টির পর প্লাবিত রাস্তাঘাট। ঘরবন্দী মানুষ।
প্রাণহানির পাশাপাশি, বন্যায় ৪৬,২০০টিরও বেশি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, শুক্রবার জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (NDMA) জানিয়েছে।


সরকারী সংস্থা এবং সেনাবাহিনী বন্যা কবলিত অঞ্চলে সাহায্য ও ত্রাণ শিবিরের করেছে এবং পরিবারগুলিকে স্থানান্তরিত করছে। খাদ্য ও ওষুধ সরবরাহের কাজও শুরু হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ (Shahbaz Sharif) দুর্গত এলাকা পরিদর্শন করে জানিয়েছেন, “বন্যা দুর্গতদের ব্যাপক ত্রাণ ও পুনর্বাসনের জন্য আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি।”
যদিও, বালোচিস্তান প্রাদেশিক সরকার বলেছে তাদের আরও তহবিলের প্রয়োজন। সহায়তার জন্য আন্তর্জাতিক সংস্থার কাছে আবেদন করেছে সরকার। প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী আব্দুল কুদুস বেজেঞ্জো বলেছেন, “আমাদের ক্ষতি ব্যাপক।”

ইতিমধ্যেই বন্যা ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিটি জেলায় খাদ্য সঙ্কট দেখা দিয়েছে। ৭০০ কিলোমিটারেরও বেশি রাস্তা ভেসে যাওয়ার কারণে কিছু কিছু প্রদেশের বাকি অংশ থেকে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে।
বস্তুত বিভিন্ন সূত্রে বলা হচ্ছে, বিগত ৩০ বছরের গড় থেকে ১৩৩শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে গত ৩ মাসে।
জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইরান ও আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী বালোচিস্তানে বার্ষিক গড় থেকে ৩০৫ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে।

পাকিস্তানের বৃহত্তম শহর করাচিতে আপাতত জন-পরিষেবাগুলি স্থগিত রাখা হয়েছে। ব্যবসা বন্ধ করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে, কারণ মুষলধারে বৃষ্টির কারণে মারাত্মক আকস্মিক বন্যা এবং পরিকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলেই আবহাওয়ার এই আকস্মিক বদল।


শুধু গত মাসেই বর্ষা শুরু হওয়ার পর থেকে জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা কর্তৃপক্ষের মতে, পাকিস্তান জুড়ে ভারী বৃষ্টিতে ৩০০ জনেরও বেশি মানুষ মারা গেছিলেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *