আজ খবর ডেস্ক: ২ দিন ৩ রাত কেটে গেছে জেলে। প্রেসিডেন্সিতে পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) আর আলিপুরে অর্পিতা মুখোপাধ্যায় (Arrpieta Mukherjee)। সিজিও কমপ্লেক্সে ইডি হেফাজতে দুজনের তবু দেখা হওয়ার সুযোগ টুকু ছিল। এখানে তা নেই। শরীর ও মর্জি, দুই’ই কিঞ্চিৎ বিগড়েছে প্রাক্তন মন্ত্রীর। জানা যাচ্ছে, প্রায় সারাদিন নিজের সেলে ঘুমোচ্ছেন পার্থ।
তবে খাবার দাবার নিয়ে আগের মতই হুকুম চালিয়ে যাচ্ছেন অর্পিতা। ব্ল্যাক কফি, ড্রাই ফ্রুটসের পর এবার তাঁর নয়া বায়না ফ্রুট জুস।


এদিকে নিজের সেল থেকে বেরোলেই লাগাতার কটুক্তি শুনতে হচ্ছে পার্থ চট্টোপাধ্যায় কে। শনি ও রবি দুদিনই স্নান খাওয়া থেকে ঠাকুরের পায়ে ফুল দেওয়া, যেখানেই গিয়েছেন অন্যান্য জেলবন্দীদের অশ্রাব্য গালিগালাজ শুনতে হয়েছে প্রাক্তন মন্ত্রীকে।

মূলত সেই কারণেই দুপুরে স্নানের জন্য পার্থ যখন সেলের বাইরে আসেন, সেই সময় ওয়ার্ডের অন্যান্য বন্দিদের নিজের নিজের কুঠুরিতে আটকে রাখা হচ্ছে।


পার্থ’র ওয়ার্ডের সামনে একটি বড় ড্রামে জল দেওয়া হচ্ছে। সেই ড্রাম থেকে প্লাস্টিকের মগে জল তুলে প্রাক্তন মন্ত্রী স্নান করছেন। একটি অতিরিক্ত তোয়ালে দেওয়া হয়েছে তাঁকে।
শুধু স্নানের সময়েই নয় পার্থকে যখনই ওয়ার্ডের বাইরে আসার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে, তার আগে ওয়ার্ডের অন্য বন্দিদের ঘরের ভিতরে বন্ধ করে রাখা হচ্ছে।
২৪ ঘণ্টা নজরদারির জন্য পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সেলে একটি সিসি ক্যামেরা (CC Camera) লাগানো হয়েছে। স্নানের সময় ছাড়া তিনি ওয়ার্ডের ভিতরেই থাকছেন।

প্রেসিডেন্সি জেলের এই ওয়ার্ডে দণ্ডিত ও বিচারাধীন বন্দিদের জন্য একটিই স্নানঘর। কিন্তু গত কয়েকদিনে বেশ খানিকটা পা ফুলেছে পার্থ’র। তাই সেল থেকে বেরিয়ে একটু দূরে স্নান ঘরে যেতে অসুবিধা হচ্ছে তাঁর।
তবে চিকিৎসকরা বলছেন, হাঁটাচলা কম হওয়ার কারণেই পায়ে ফোলা ভাব দেখা যাচ্ছে। তাই এখনও পর্যন্ত পার্থর শারীরিক অবস্থা পরীক্ষা করে তাঁকে জেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় নি।
জেলের খবর, প্রাক্তন মন্ত্রী প্রায় সারা দিনই ঘুমোচ্ছেন। সকালে তাঁকে দেওয়া হয় মাখন-টোস্ট, বিস্কুট। জেলের নিয়ম অনুযায়ী রবিবার আমিষ খাবারের ব্যবস্থা ছিল। দুপুরে ভাত, ডাল, তরকারি ও মাছের ঝোল খেয়েছেন পার্থ।
জেল সূত্রে খবর এইমস (AIIMS, Bhubaneswar) পার্থ’র জন্য যে-খাদ্যতালিকা নির্দিষ্ট করে দিয়েছে, তা মেনেই খাবার দাবার দেওয়া হচ্ছে।

আবার আলিপুর মহিলা জেল সূত্রের খবর, দিনের বেশির ভাগ সময়ই ঘুমিয়ে কাটাচ্ছেন অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ও। সেখানেও সকালে খাবার হিসেবে মিলছে চা-বিস্কুট মাখন-টোস্ট। দুপুরে ভাত, ডাল, তরকারি ও মাছ। তাঁকেও আলাদা একটি সেলে রাখা হয়েছে এবং আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী ২৪ ঘণ্টা কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
সিজিও কমপ্লেক্সে থাকাকালীন অর্পিতা সারাদিনে বারবার ব্ল্যাক কফি ও ড্রাই ফ্রুটস দিয়ে পেট ভরাতেন। তখন প্রথম দশ দিন ফলের রস, ভাত, রুটি, লিকার চা, ক্রিম ক্রেকার বিস্কুট পেয়েছেন, কিন্তু এখন? এই মুহূর্তে কিভাবে চলছে অর্পিতার গোটা দিন ও রাত?
গত শুক্রবার আদালতে শুনানি চলাকালীনই অর্পিতার প্রাণ সংশয়ের আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন তাঁর আইনজীবী৷ অর্পিতা ব্যাঙ্কশাল কোর্ট থেকে আসার পর থম মেরে গিয়েছেন।


প্রথম রাত না খেয়ে ঘুমোলেও শনিবার সকাল থেকে খেয়েছেন চা বিস্কুট। রাতে খেয়েছেন রুটি ডাল সবজি। আপাতত, ১৮ তারিখ পর্যন্ত জেলে ভাত রুটি খাবেন অর্পিতা। পাবেন না ড্রাই ফ্রুটস, ব্ল্যাক কফি, ফলের রস।

সিবিআই (CBI) সূত্রের দাবি, আদালতের নির্দেশে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত মূল মামলার তদন্ত করছে তারা। সেই মামলার যোগসূত্রেই বিশেষ আদালতে আবেদন করে পার্থ ও অর্পিতাকে কয়েকদিনের মধ্যেই সিবিআই হেফাজতে নেওয়া হবে।
সিবিআইয়ের এক পদস্থ কর্তা জানিয়েছেন, ‘‘ইডি-র মামলা এখন আছে প্রাথমিক পর্যায়ে। দু’জনকে হেফাজতে নেওয়া হবে দু’টি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আলোচনার ভিত্তিতেই।’’

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *