আজ খবর ডেস্ক:
গত বেশ কয়েকদিন ধরে প্রেসিডেন্সির জেলই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) ঠিকানা। আবার তাঁকে আদালতে হাজিরার জন্য নিয়ে যাওয়া হবে আগামী ২১শে অগাস্ট।
গ্রেপ্তারের পর থেকেই নিজের শারীরিক অবস্থা নিয়ে একাধিক অনুযোগ করেছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন এই মন্ত্রী। এমনকি শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য তাঁকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ভুবনেশ্বর এইমসেও (AIIMS)।
তবে অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal) গ্রেপ্তার হওয়ার পরে পার্থ চট্টোপাধ্যায় কে নিয়ে আমজনতার কৌতুহল কিঞ্চিৎ কমেছে।
প্রেসিডেন্সি জেলে পার্থ চট্টোপাধ্যায় কখনও চপ মুড়ি খাচ্ছেন, কখনও আবার খাসির মাংস খাচ্ছেন এমন বহু খবর বাইরে এসেছে গত কয়েক দিন ধরেই।
কিন্তু সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে অন্য খবর। গত দিন কয়েক ধরে পার্থ চট্টোপাধ্যায় নাকি রয়েছেন প্রেসিডেন্সি জেলের হাসপাতালে।
জেলের চিকিৎসকদের প্রধান প্রণব ঘোষ প্রাথমিক রিপোর্টে উল্লেখ করেন, পার্থর সব চিকিৎসা জেলে সম্ভব নয়। তাঁরা জেল সুপারকে রিপোর্টও দেন। জেলে কীভাবে পার্থকে রাখতে হবে, কী কী বিষয়ে পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে।
জেল সূত্রে খবর, সুপার রিপোর্টটি পাঠান জেসপ বিল্ডিংয়ে কারা দপ্তরে। সেই রিপোর্ট কারা দপ্তরের কর্তারা পাঠান নবান্নে। তারপরে তা যায় দক্ষিণ ২৪ পরগনা সিএমওএইচ-এর (CMOH) কাছে। শনিবার সিএমওএইচ নির্দেশে এসএসকেএম থেকে চিকিৎসক দল জেলে যান।
জেল সূত্রেই জানা যাচ্ছে, মূলত পা ও কোমরের ব্যথা এবং মানসিক অবসাদের কারণে ঠিকমত ঘুম না হওয়া! এতে শারীরিকভাবে কিছুটা বিধ্বস্ত পার্থ চট্টোপাধ্যায়। জেলের চিকিৎসকদের নির্দেশ মত আপাতত তাঁকে রাখা হয়েছে জেল হাসপাতালে।
শনিবার সকালে ৮ সদস্যের এক চিকিৎসক দল এসএসকেএম (SSKM) হাসপাতাল থেকে প্রেসিডেন্সি জেলে গিয়েছেন পার্থকে দেখতে। পুরো বিষয়টি কার্যত গোপনে করা হয়েছে যাতে এই নিয়ে অযথা সংবাদমাধ্যমের হুড়োহুড়ি না হয়। এমনটাই জানিয়েছেন এসএসকেএমের এক স্বাস্থ্যকর্তা।
পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের প্রকৃত কী সমস্যা হচ্ছে তা এখনও স্পষ্ট নয়। শুধু জানা গিয়েছে, তাঁকে জেল হাসপাতালে রাখা হয়েছে। এই প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত পার্থকে দেখে জেল থেকে বেরোননি চিকিৎসকরা। তাঁরা বেরোলে কিছু খবর জানা যেতে পারে।
প্রসঙ্গত, পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে পরীক্ষা করে ভুবনেশ্বর এইমস থেকে জানানো হয়েছিল, এখনই তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করার প্রয়োজন নেই। মূলত ক্রনিক অসুখে ভুগছেন তিনি। শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার হাল্কা সমস্যা রয়েছে, কিডনিতে ও পুরনো কিছু সমস্যা রয়েছে। যা দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকার ডায়াবেটিস এবং ওবেসিটির কারণে হয়েছে।
নিয়মিত রুটিন মেনে খাওয়া দাওয়া এবং হাঁটাচলা করলে এইসব সমস্যা অনেকটাই কমবে। ভুবনেশ্বরের চিকিৎসকরা বারবার জোর দিয়েছিলেন পার্থর ওজন কমানোর দিকে। গত কয়েক দিন ধরে সে কারণেই নাকি? নিজের ছেলের বাইরে অল্প হাঁটাহাঁটি শুরু করেছিলেন পার্থ।
তবে ডাক্তারদের অনেকের মতে, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পুরো ব্যাপারটাই মানসিক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাড়িতে একরকম ভাবে ছিলেন। জেলে যতই চৌকি বা কম্বল দেওয়া হোক না কেন, একাকিত্ব-হতাশা গ্রাস করেছে তাঁকে। সেই মানসিক যন্ত্রণা থেকে শরীর খারাপ লাগতেই পারে।
রাজনৈতিক একটি সূত্র অবশ্য বলছে, পার্থ চট্টোপাধ্যায় জেলের হাসপাতালে রয়েছেন এই খবর বাইরে এলে বিরোধীরা হইচই করতে পারে। তাই কিছুটা গোপনীয়তা রাখা হয়েছে।