আজ খবর ডেস্ক:
অপরাধের প্রবণতা কমছে। এই মুহূর্তে দেশের মধ্যে মহিলাদের জন্য নিরাপদতম শহর কলকাতা (Kolkata)।
স্বীকৃতি মিলেছে কেন্দ্রীয় সরকারের রিপোর্টে।
ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর (NCRB) সর্বশেষ রিপোর্ট অনুযায়ী, গত বছর ভারতের ১৯টি মেট্রোপলিটন (Metropolitan) শহরের মধ্যে কলকাতায় সবচেয়ে কম ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে।
এনসিআরবি রিপোর্ট অনুযায়ী, গত সাত বছর ধরে কলকাতায় উল্লেখযোগ্য ভাবে কমেছে অপরাধের হার।
ভারতের যে বড় শহরগুলির জনসংখ্যা ২০ লক্ষের বেশি, একমাত্র সেই শহরগুলির থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে এই রিপোর্ট বানায় এনসিআরবি।
এর আগে ২০২০ সালেও এই তকমা পেয়েছিল কল্লোলিনী তিলোত্তমা।
এনসিআরবির রিপোর্ট বলছে, কলকাতার প্রতি লক্ষ জনসংখ্যার মধ্যে দেশের বাকি শহরের তুলনায় সব থেকে কম অপরাধের ঘটনা ঘটেছে।
কেন্দ্রীয় রিপোর্ট অনুযায়ী, কলকাতায় প্রতি লক্ষ মানুষে নথিভুক্ত অপরাধ ১০৩.৪। এই সংখ্যা গত বছরের তুলনায় আরও কমেছে। গত বছর এই সংখ্যা ছিল ১২৯.৫।
২০২১-এর তালিকায় কলকাতার পরই জায়গা পেয়েছে পুণে। এক লক্ষ মানুষের মধ্যে পুণেতে (Pune) নথিভুক্ত অপরাধের সংখ্যা ২৫৬.৮।
এর ভিত্তিতেই সব থেকে নিরাপদ শহরের তালিকার শীর্ষে উঠে এসেছে কলকাতার নাম।
পুণের পর যথাক্রমে রয়েছে হায়দরাবাদ (২৫৯.৯), কানপুর (৩৩৬.৫), বেঙ্গালুরু (৪২৭.২) এবং মুম্বই (৪২৮.৪)।
২০২০ এবং ২০২১ এর আগে ২০১৮ সালেও দেশের সব থেকে নিরাপদ শহর হওয়ার কৃতিত্ব মিলেছিল কলকাতার। ব্যতিক্রম ছিল ২০১৯ সালে। এনসিআরবির রিপোর্টে দাবি, ২০১৯ সালে কলকাতার অপরাধ সংক্রান্ত তথ্য তাদের কাছে এসে পৌঁছয়নি। গত চার বছরের মধ্যে তিন বারই প্রথম স্থানে রয়েছে কলকাতা।
কেন্দ্রীয় সরকারের এই রিপোর্ট অনুসারে ২০২১ সালে কলকাতায় ১১টি ধর্ষণের (Rape) ঘটনা ঘটেছে। যেখানে দিল্লিতে ১২২৬টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে, যা দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ।
দিল্লির পরে রয়েছে রাজস্থানের জয়পুর। যেখানে ৫০২টি ধর্ষণের মামলা নথিভুক্ত হয়েছে। মুম্বাইতে, IPC 376 ধারার অধীনে ধর্ষণের ৩৬৪টি মামলার রিপোর্ট করা হয়েছে।
কলকাতার পাশাপাশি অপরাধ প্রবণতার তালিকায় নীচের দিকে রয়েছে তামিলনাড়ুর কোয়েম্বাটুর। যেখানে ১২টি ধর্ষণের ঘটনা এবং বিহারের পাটনা, যেখানে ৩০টি ধর্ষণের ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে।
অন্যান্য মেট্রো শহরগুলির মধ্যে, মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরে ১৬৫ টি মামলা, বেঙ্গালুরুতে ১১৭টি মামলা, হায়দ্রাবাদে ১১৬ টি এবং মহারাষ্ট্রের নাগপুরে ১১৫ টি কেস রিপোর্ট করা হয়েছে।
NCRB রিপোর্ট অনুসারে এই ১৯টি শহরে ২০২১ সালে ৩,২০৮টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে।
NCRB রিপোর্ট এ-ও বলছে, কলকাতার বুকে অপরাধের হারও কমেছে। ২০১৬ সাল থেকে শুরু করে প্রতি বছরই কলকাতায় অপরাধ একটু একটু করে কমেছে।
২০১৬ সালে কলকাতায় অপরাধ ছিল প্রতি লক্ষে ১৫৯.৬। ২০১৭ সালে তা কমে হয় ১৪১.২। কলকাতার অপরাধ আরও কমে ২০১৮ এবং ২০২০ সালে। হয় যথাক্রমে ১৩৯.৫ এবং ১০৯.৯। ২০২১ সালে মহানগরীর অপরাধের হার ১০০-রও নীচে নেমেছে। সমীক্ষা অনুযায়ী, গত বছরে কলকাতায় অপরাধের হার ৯২.৬।
২০২০ সালে কলকাতায় মোট নথিভুক্ত অপরাধের মামলা ছিল ১৮ হাজার ২৭৭টি। ২০২১ সালে তা কমে হয়েছে ১৪ হাজার ৫৯১। ২০১৪ সালে এই সংখ্যা ছিল ২৬ হাজার ১৬১।
এক ঝলকে দেখে নেওয়া যাক:
গত এক বছরে কলকাতায় বিভিন্ন অপরাধের সংখ্যা কত;
১) খুনের ঘটনা ঘটেছে ৪৫টি। ২) পথদুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন ১৭৯ জন। পথদুর্ঘটনাতেও সব থেকে বেশি মানুষ মারা গিয়েছেন দিল্লিতে, সংখ্যা ১,১৭৮ জন।
৩) কলকাতায় গত বছরে নারী নির্যাতনের ১২৭টি ঘটনা ঘটেছে। নারী নির্যাতনের অপরাধের ক্ষেত্রেও তালিকার প্রথমে দিল্লির নাম আছে। গত এক বছরে দিল্লিতে নারী নির্যাতনের ১,০২৩টি ঘটনা ঘটেছে।
৪) তবে কলকাতায় গত এক বছরে ৩৪৬টি অপহরণের ঘটনা ঘটেছে, যা বাকি অনেক শহরের তুলনায় বেশি।
For the 5th consecutive year, @BJP4India ruled Assam recorded the HIGHEST RATE OF CRIMES AGAINST WOMEN in '21.
— All India Trinamool Congress (@AITCofficial) August 30, 2022
PM @narendramodi, when we said you should be the last one talking about 'Nari Shakti' & respecting women, we meant it. You are a proven failure! pic.twitter.com/x0DGLg9CzD
রাজ্যের শাসক দল সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস (AITC) একটি টুইটে বলেছে, “এনসিআরবি রিপোর্ট অনুযায়ী, এই নিয়ে টানা দু’বছর কলকাতা দেশের সব থেকে নিরাপদ শহর। এটি কেবল মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) কড়া নজরদারি এবং পুলিশের (Kolkata Police) অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলেই সম্ভব হয়েছে। দেশের একমাত্র মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে দেশের প্রধানমন্ত্রীর অনেক কিছু শেখার আছে।”