আজ খবর ডেস্ক:
“লিখে কিছু হয় না”! হয়ত এমন কথা নতুন কিছু নয়। লেখাকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করতে চাইলে পরিবারের তরফে আবহমান কাল ধরে এমন মতামত শোনা যায়। তবে এখানে বিষয়টা একটু অন্যরকম।
বাংলা ভাষায় যুব সাহিত্য (Sahitya Akademi Award) একাডেমি পুরস্কার পেলেন ত্রিপুরার (Tripura) তরুণ কবি সুমন পাটারি। “লিখে কিছু হয় না”– এই কাব্যগ্রন্থের জন্য। এই প্রথম ত্রিপুরার কোনও লেখক সাহিত্য একাডেমির যুব সাহিত্য পুরস্কার পেলেন।


এর আগেও সুমনের লেখা কাব্যগ্রন্থ , “তারা দেখার পাপ” যুব সাহিত্য একাডেমি পুরস্কারের জন্য মনোনীত (Short Listed) হয়েছিল।
মাত্র তিরিশ বছর বয়সেই সুমন ত্রিপুরার সাহিত্য জগতকে এনে দিলেন এই সম্মান । গোটা ত্রিপুরা জুড়ে অভিনন্দনের জোয়ার বইছে ।

তরুণ কবি সুমন পাটারির জন্ম ১৯৯২ সালে দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলার জোলাইবাড়ি ব্লকের বাইখোরার স্বদেশনগর গ্রামে। বাবা নারায়ণ পাটারি সাধারণ কৃষক । সুমন ছোটবেলা থেকেই কবিতা লিখতেন। চিন্তা ও চেতনায়, চাল-চলনে ব্যতিক্রমী প্রতিবাদী হিসেবে পরিচিত। সোজা কথা সোজাভাবেই বলতে পারদর্শী সুমন ধান, আলু চাষের সঙ্গে কবিতা চাষেও সিদ্ধহস্ত হয়ে উঠেছেন অল্প কয়েকদিনেই ।২০১৫ সালে ত্রিপুরার ইকফাই থেকে বি সি এ পাশ করে বাড়ি ফিরে বাবার অসুস্থতার দরুণ পড়াশোনা ছেড়ে মনোযোগ দেন কৃষিতে। লালনের ভাষায় বলা যেতেই পারে, “এমন মানবজমিন রইল পতিত আবাদ করলে ফলতো সোনা”!


২০১৬ সালে সুমনের প্রথম কবিতার বই – মাটির মানুষ প্রকাশিত হয়। এখন অবধি মোট চারটি কবিতার বই লিখেছেন সুমন। ২০১৯ সালে অক্ষর প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত কবিতার বইটির (লিখে কিছু হয় না) জন্য ২০২২ সালে যুব সাহিত্য একাডেমি পুরস্কার পেলেন সুমন ।সাহিত্য একাডেমি পুরস্কার পাওয়ার খবর নিজেই ফেসবুকে (Facebook) শেয়ার করে সুমন লেখেন, “আমি খুশি হয়েছি খুব, সবাই ভালবাসা দিয়েছেন দেখে।”

সুমনের এই পুরস্কার প্রাপ্তির খবরে বেজায় খুশি ত্রিপুরার সাহিত্য মহল। প্রায় প্রত্যেকেই নিজের নিজের ফেসবুকে সুমনে ছবি দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
বাংলার পড়শি রাজ্য ত্রিপুরার সাহিত্য জগতের একাংশের মতে, বাংলা ভাষার জন্য সাহিত্য একাডেমির পুরস্কারে এতদিন “ ব্রাত্য ” ছিল ত্রিপুরা । ত্রিপুরায় সাহিত্য চর্চা দেড়শ বছরের হলেও ভারতের সাহিত্য একাডেমি ত্রিপুরায় বাংলা ভাষার সাহিত্যচর্চাকে এতদিন সেভাবে গুরুত্ব দেয় নি।বস্তুত, ১৯৫৪ সালে সাহিত্য একাডেমি তৈরির পর থেকে পশ্চিমবঙ্গের বাইরে বাংলা ভাষাভাষী লেখকরা গুরুত্ব পায়নি।


ত্রিপুরা থেকে মোট তিনজনের নাম শর্টলিস্টেড হয়েছিল। বাংলায় কবিতা সুমন পাটারি ও কবি জেরি চন্দ, এবং মণিপুরী ভাষায় কবি কে সারিতা সিংহ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *