আজ খবর ডেস্ক:
নিঃসন্দেহে অভিনব উদ্যোগ! অথবা প্রতিবাদ ও বলা যেতে পারে। প্রতিবাদ মানেই সাধারণ ভাবে মাথায় আসে বিক্ষোভ বা ধর্ণা কর্মসূচি। তার বাইরে বেরিয়ে এসে এদিনের প্রতীকী প্রতিবাদ নজর কেড়েছে অনেকেরই।
আপার প্রাইমারী (Upper Primary) চাকরিপ্রার্থীদের রক্তদান শিবির চলছে।
কলকাতার মৌলালী যুবকেন্দ্রের লাগোয়া স্টুডেন্টস হেলথ হোমে।
এদিন সকাল ১১ টা থেকে সেখানে চাকরি প্রার্থীদের ভিড়। তাঁরা কেউ স্লোগান দিচ্ছেন না। বরং সুশৃংখল ভাবে একের পর এক রক্ত দিয়ে যাচ্ছেন মুখ বুঁজে। এটাই তাঁদের প্রতিবাদ।
আপার প্রাইমারী শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা হয়েছিল ২০১৫ সালের ১৬ আগষ্ট।
৭ বছর হলেও নিয়োগ নেই।
দ্রুত নিয়োগের দাবি তে এই রক্তদান শিবির।
সম্প্রতি শিক্ষক নিয়োগে (SSC) দুর্নীতি কাণ্ডে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) গ্রেপ্তার হয়েছেন। গোটা রাজ্য জুড়ে চলছে তুমুল হৈ চৈ। শাসক বনাম বিরোধী তরজা চরমে।
স্কুলের শিক্ষক নিয়োগের প্রতিটি ধাপে বেনিয়মের অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা। প্রতিবাদে শুধু মিটিং মিছিল নয়, কার্যত পথে বসে রয়েছেন চাকরি প্রার্থীরা। ৫৫০ দিন অতিক্রান্ত।
বস্তুত ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের অভিযোগ, চাকরির নোটিফিকেশন, পরীক্ষা এবং ফল প্রকাশ! গোটা প্রক্রিয়া মিলিয়ে একেকটি ধাপে সময় লেগেছে দুই থেকে তিন বছর।
এভাবেই বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হচ্ছে চাকরিপ্রার্থীদের। এদিকে বিরোধীদের অভিযোগ এসএসসি দুর্নীতিতে অর্থ নয়ছয়ের পরিমাণ ৩হাজার কোটি টাকা।
আদালতের নির্দেশে গোটা বিষয়ের তদন্তভার কেন্দ্রীয় এজেন্সির (CBI/ ED) হাতে যাওয়ার বহু আগে থেকেই রাজ্য জুড়ে চলেছে চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলন, বিক্ষোভ, ধর্ণা।
অভিযোগ, ২০১৪ বা তৃণমূল সরকার দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পরে একটু একটু করে শুরু হয়েছিল দুর্নীতি।
২০১৪ লোকসভা নির্বাচনের পর আপার প্রাইমারিতে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ্যে আসে। এই সময় কেন্দ্রীয় সংস্থার তরফে জানানো হয়, আপার প্রাইমারি পরীক্ষায় বসার ক্ষেত্রে B.ED বাধ্যতামূলক।
নির্দিষ্ট এই ডিগ্রি না থাকা থাকার পরেও চাকরিপ্রার্থীদের পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে। কোর্টে মামলা হয়। রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়েছিল, শিক্ষকতার এই বিশেষ ট্রেনিং নেওয়া চাকরিপ্রার্থীর সংখ্যা রাজ্যে যথেষ্ট নয়।
তখন আরেকটি মামলা হয়েছিল যাতে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি কান্নান রায় দিয়েছিলেন, পরীক্ষায় পাশের ক্ষেত্রে প্রথম সুযোগ দিতে হবে DLED/ B. ED প্রার্থীদের। তারপরেও সিট ফাঁকা থাকলে সুযোগ পাবেন যাদের এই নির্দিষ্ট ডিগ্রি নেই, তাঁরা।
২০১৫সালের ১৬ই আগস্ট আপার প্রাইমারি পরীক্ষা হয়। প্রায় ১৮ হাজার চাকরিপ্রার্থী ইন্টারভিউতে ডাক পেয়েছিলেন। সিট ১৪ হাজার। এখানেও একাধিক মামলা হয়েছে এবং নিয়োগ প্রক্রিয়া থমকে রয়েছে।
৭ বছর ধরে কোনও নিয়োগ নেই।
দ্রুত নিয়োগের দাবিতে এই রক্তদান শিবির।