আজ খবর ডেস্ক:
দুুপুর ২টো ৪০ মিনিটে “নবান্ন অভিযান শেষ হল”, জানিয়েছিলেন বিজেপির (BJP) সর্বভারতীয় সহ-সভাপতিদিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)।
কিন্তু তার ২ঘণ্টা পরেও একাধিক জায়গায় পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ চালিয়ে গেলেন বিজেপি নেতা কর্মীরা। ফলত কলকাতা ও হাওড়ার আইন-শৃঙ্খলার অবনতি, দাবি পুলিশের একাংশের ।
রাজ্য প্রশাসন সূত্রেও অভিযোগ করা হচ্ছে, এলাকার পর এলাকা লন্ডভন্ড। একেবারেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে হাওড়া এবং কলকাতার আইন-শৃঙ্খলার পরিস্থিতি (Law and Order Situation)। বিকেল চারটে নাগাদ খবর পাওয়া গিয়েছে? হাওড়ার কিছু এলাকায় ক্রমশ পিছু হটছে পুলিশ।


এদিকে রাজনৈতিক মহল মনে করিয়ে দিচ্ছে, প্রায় দেড় দশক আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সিঙ্গুর আন্দোলন ও বিক্ষোভের পরে কলকাতা এবং রাজ্য পুলিশ এই প্রথম ম্যারাথন রাজনৈতিক উত্তেজনার সামনাসামনি হল।

বিজেপির নবান্ন অভিযান ঘিরে সাঁতরাগাছির পর ধুন্ধুমার হাওড়া ময়দান। পুলিশের ব্যারিকেড ভাঙলেন বিজেপি কর্মীরা। পরিস্থিতি সামলাতে জলকামান ব্যবহার করে পুলিশ।


বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের (Sukanta Majumdar) নেতৃত্বে হাওড়া ময়দানে (Howrah Maidan) বিজেপির মিছিলে উত্তেজনা ছড়ায়। পুলিশের লাগানো ব্যারিকেড ভাঙেন বিজেপি কর্মীরা। পাল্টা কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়ে পুলিশ।

আবার রবীন্দ্র সরণিতে (Rabindra Sarani) দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশের পিসিআর ভ্যানে আগুন ধরিয়ে দেয় বিজেপি কর্মী সমর্থকেরা, অভিযোগ কলকাতা পুলিশের।


আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে ছুটে আসে দমকল। আগুন যাতে ছড়িয়ে না পড়ে তারই চেষ্টা চালানো হয় দীর্ঘক্ষণ ধরে।
স্থানীয়দের দাবি, একদল লোক পুলিশের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। প্রথমে গাড়ির কাচ ভেঙে দেওয়া হয় তারপর গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। সঙ্গে সঙ্গে দাউ দাউ করে জ্বলতে শুরু করে গাড়িটি। আতঙ্ক ছড়ায় এলাকায়। আশেপাশের সমস্ত দোকান বন্ধ করে এলাকা ছাড়েন ব্যবসায়ীরা।

দুপুরে বিজেপির রাজ্য দপ্তরের সামনেও উত্তেজনা ছড়ায়। লালবাজারে বিজেপির নেতা-কর্মীরা আটক করার প্রতিবাদে রাজ্য বিজেপির সদর দপ্তর ৬ নম্বর মুরলীধর সেন লেনের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বিজেপি কর্মীরা। সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউয়ের সামনে বিক্ষোভ ও পথ অবরোধ তুলতে লাঠি চালায় পুলিশ।
লালবাজারের সামনেও উত্তেজনা ছড়ায়।
আগাম ঘোষণা ছাড়াই ওই এলাকায় যায় বিজেপির মিছিল। তার পরই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়।

এদিন সকাল থেকেই পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকেন শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। কলকাতা পুলিশের মহিলা বাহিনীকে ‘গুন্ডি’ বলেন তিনি। লালবাজার থেকে অভিযোগ করেন, ‘‘আমার দায়িত্ব ছিল সাঁতরাগাছি থেকে মিছিলকে নেতৃত্ব দেওয়া। আমার সঙ্গে থাকার কথা ছিল লকেট চট্টোপাধ্যায় ও রাহুল সিনহার। আমরা যখন মুভ করছিলাম, তখন দ্বিতীয় হুগলি সেতুর কাছে আমাদের আটক করে। শুধু আটকানো নয়, বলা হয়, হেস্টিংসে চলে যান। আমরা বলি নদী পেরোব কী করে?এর পর আইপিএসরা সরে গিয়ে মহিলা এসআই ও
কনস্টেবলদের এগিয়ে দেয়। সকালবেলায় যে পোশাক পরে লোকে জগিং করে, সেই পোশাক পরেছিলেন। আমি পোশাক নিয়ে কিছু বলছি না। ওদের জ্ঞানবন্ত সিং ইশারা করেন। সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়কে একেবারে ক্রিমিনালের মতো নিয়ে যাওয়া হল। রাহুল সিনহাকে তো আচঁড়ে দিয়েছে ওই গুন্ডিরা। শেষে আমাকে ধাক্কা দিয়ে নিয়ে যাওয়া হল। চেয়েছিল আমি কাউন্টার করি। আমি অত বোকা লোক নই।’’


ফেসবুক লাইভে শুভেন্দু কর্মীদের উদ্দেশে বার্তা দিয়ে বলেন, ‘‘আমাদের নবান্ন অভিযানে অনেক অত্যাচার করেছে। ট্রেনে উঠতে দেয়নি। দেড় লক্ষ কর্মীকে আটকে দিয়েছে। জলকামান মারা হচ্ছে, টিয়ার গ্যাস ছোঁড়া হচ্ছে। আমি কর্মীদের বলব কোনও প্ররোচনার ফাঁদে পা দেবেন না।”

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *