আজ খবর ডেস্ক:
অপেক্ষার ৫ বছর। খরচ ৪১০ কোটি, প্রচার ব্যয় আলাদা। ৪দিন কেটে গেলেও রণবীর (Ranbir Kapoor)-আলিয়ার (Alia Bhatt) ব্রহ্মাস্ত্র (Brahmastra) নিয়ে বিতর্ক চলছেই।
একেক জায়গায় একেক রকমের বক্স অফিস ফিগার (Box Office Figure) সামনে আসছে।
কেউ বলছেন ১৪৬ কোটি আয় করেছে এই ফিল্ম, কেউ জানাচ্ছে ১০৫ কোটি! কোথাও লেখা হচ্ছে দেশে সুপারহিট ব্রহ্মাস্ত্র। কোথাও আবার দেখা যাচ্ছে, বিদেশের মাটিতে নাকি রেকর্ড কালেকশন এই ছবির। কেন এই পার্থক্য?

বক্স অফিসে ব্রহ্মাস্ত্র ঝড়ের কথা সবাই শুনেছে। ছবি দুর্দান্ত ব্যবসা করছে এমন কথাও কানে আসছে। কিন্তু ‘ব্রহ্মাস্ত্র’র কালেকশন ঠিক কত কোটি? এই নিয়ে নির্দিষ্ট উত্তর হাজার খুঁজেও মিলছে না। প্রশ্ন উঠেছে, ছবির কালেকশনে এত ফারাক কেন? বিষয়টি নিয়ে অনেকেই কনফিউসড।
অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাওয়াত (Kangana Ranaut) সরাসরি অভিযোগের আঙুল তুলেছেন প্রযোজক করণ জোহরের (Karan Johar) দিকে। ‘ব্রহ্মাস্ত্র’-র কালেকশন নিয়ে ঘাপলা করছেন করণ, অভিযোগ কঙ্গনার।


ভারতে এবং বিদেশের মাটিতে বক্স অফিস কালেকশন নির্ণয় করার একাধিক পদ্ধতি রয়েছে, সেই কারণেই একটি ছবির ভিন্ন ভিন্ন রকমের কালেকশন সামনে আসছে। বিষয়টিকে এভাবেও ব্যাখ্যা করছেন করণের ঘনিষ্ঠ মহলের কেউ কেউ।

গত ৯ই সেপ্টেম্বর মুক্তি পেয়েছে পরিচালক অয়ন মুখোপাধ্যায়ের (Ayan Mukerji) ব্রহ্মাস্ত্র। শুধু হিন্দি নয়, তামিল, তেলেগু, কন্নড়, মালায়ালম ভাষাতেও মুক্তি পেয়েছে এই ছবি। ভারতের পাশাপাশি বিদেশেও মুক্তি পেয়েছে এই ছবি। তাই দেশের এক, বিদেশের আরেক কালেকশন রিপোর্ট আসছে।
করণের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগে কঙ্গনা বলেছেন, কেন করণ জোহর ছবির গ্রস কালেকশনের ডেটা দিচ্ছেন, কেন নেট আয়ের কথা জানাচ্ছেন না?


একটি ফিল্মের বাণিজ্যিক দিকটি নিয়ে যারা চর্চা করেন, তাঁদের মতে বক্স অফিসে গ্রস আয় বলতে কোনও ছবির টিকিট বিক্রি করে যে টাকা আয় হয় সেই অঙ্কটা বোঝায়। নেট বক্স অফিস কালেকশনের অর্থ হল সরকারের তরফে বিভিন্ন ট্যাক্স (যেমন-সার্ভিস ট্যাক্স, এন্টারটেনমেন্ট ট্যাক্স) কেটে নেওয়ার পর যে টাকা কোনও ছবি আয় করে। গ্রস ফিগার সবসময় নেট ফিগারের চেয়ে বেশি হয়। যেহেতু রাজ্য ভেদে ট্যাক্সের পরিমাণ আলাদা, তাই কোনও ছবির গ্রস ফিগার সারা দেশে এক হলেও নেট ফিগারের বিরাট মাত্রায় হেরফের হতে পারে।
সেই সঙ্গে যুক্ত আআরেকটি বিষয় হল, বক্স অফিসের নেট ফিগারে ডিস্ট্রিবিউটারদের শেয়ার যুক্ত থাকে। একটা ছবি থিয়েটারে যারা চালাচ্ছেন তাঁরাও একটা লভ্যাংশ পান।

‘ব্রহ্মাস্ত্র’-র দুনিয়া জুড়ে গ্রস কালেকশন ২২৫ কোটি টাকা। কিন্তু তার মানে কখনই এটা নয়, এই ছবির প্রযোজক ২২৫ কোটি টাকা আয় করেছে।
ছবির কালেকশন দেশের এক এক জায়গায় এক এক রকমভাবে জানানো হয়। বলিউডে মূলত কোনও ছবির নেট কালেকশনই সামনে আনা হয়। তবে দক্ষিণ ভারতের ছবিগুলোর গ্রস কালেকশন রিপোর্ট প্রকাশ্যে আনা হয়।
সোমবার বক্স অফিস ইন্ডিয়ার (Box Office India) তরফে জানানো হয় ‘ব্রহ্মাস্ত্র’র কালেকশন প্রথম ৩ দিনে দাঁড়িয়েছে ১০৫ কোটি, অন্যদিকে বক্স অফিস ট্রাকার ওয়েবসাইট Sacnilk জানায়, ‘ব্রহ্মাস্ত্র’র কালেকশন দেশের বক্স অফিসে তিনদিনে ১৪৬ কোটি টাকা। টাকার অঙ্কে ৪১ কোটির পার্থক্য। এখানে প্রথমটি হল ‘ব্রহ্মাস্ত্র’র হিন্দি ভার্সনের নেট আয়। দ্বিতীয়টি সব ভাষার গ্রস আয়ের পরিমাণ।

এদিকে ইন্ডাস্ট্রির অন্দরে গুঞ্জন, প্রযোজক সবসময়ই চায় সেরা নম্বরটা দেখাতে। যাতে দর্শক আকৃষ্ট হয়। যে যতই কারসাজি করুক, একটা মার্জিনের বাইরে করা সম্ভবপর নয়, আর সেটা ৫-১০%। কারণ সেটা হলে তোমার মিথ্যােটা সবাই জেনে যাবে। যখন কোনও ছবি এতটাই খারাপ ব্যবসা করে যে তা প্রযোজকের লজ্জার কারণ হয়ে দাঁড়ায় তখন তাঁরা ছবির কালেকশন জানানো বন্ধ করে দেয়। ঠিক যেমনটা হয়েছিল প্রভাসের রাধে-শ্যাম বা কঙ্গনার ধাকড়’ ছবির ক্ষেত্রে।
সেই সঙ্গে এই অভিযোগ ও উঠেছে যে, ব্রহ্মাস্ত্র’র অগ্রিম বুকিং নিয়ে কিছু “কারসাজি” হয়েছে। অনেকেই ঠারেঠোরে বোঝাতে চাইছেন, অগ্রিম বুকিংয়ের (Advance Booking) একটা বড় অংশের টিকিট প্রযোজকদের তরফে কেটে রাখা হয়েছিল ছবিটি হিট দেখানোর জন্য।
রবিবার দেশ জুড়ে এই ছবির নেট আয় ছিল ৪০ কোটি, সেখানে সোমবার ছবি আয় করল মাত্র ১৬ কোটি টাকা। চার নম্বর দিন ছবির হিন্দি ভার্সনের আয় মাত্র ১৪.২৫ কোটি টাকা।


একটি তথ্য বলছে ছবির নেট আয় শুক্রবার- ৩১.৫০ কোটি+
শনিবার- ৩৭.৫ কোটি+
রবিবার- ৩৯.৫০ কোটি+
কিন্তু সোমবার থেকেই এক ধাক্কায় তা অনেকটাই নিচে নেমে গিয়েছে। ছবির হিন্দি ভার্সনের কালেকশন সোমবার প্রায় ৫৫% কমেছে, কোনও কোনও রাজ্যে ছবির টিকিট বিক্রির হার ৬০% কমেছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *