আজ খবর ডেস্ক:
আদালতের রায়ে “স্বস্তি” মিলল রাজ্য সরকারের। মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) তরফে জানিয়ে দেওয়া হল,
পুজোয় রাজ্য সরকারের অনুদান দেওয়া নিয়ে হস্তক্ষেপ করা হবে না।
ফলে রাজ্য সরকারের অস্বস্তি কাটল আপাতত। তবে ৬টি নির্দেশিকা তৈরি করে দিয়েছে প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) রাজ্যের ৪৩ হাজার দুর্গাপুজো কমিটিকে ৬০ হাজার টাকা করে সরকারি অনুদান দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন। এর আগে দু’বছর পুজো কমিটিগুলিকে রাজ্যের দেওয়া অনুদানের অঙ্ক ছিল ৫০ হাজার। এ বার মুখ্যমন্ত্রী জানান, ৬০ হাজার টাকা অনুদানের পাশাপাশি পুজো কমিটিগুলি বিদ্যুৎ বিলেও বড় ছাড় পাবে।
সিইএসসি (CESC) এবং রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন পর্ষদকে (WBSEDCL) পুজো কমিটিগুলিকে বিদ্যুৎ বিলে ৬০ শতাংশ ছাড় দেওয়ার অনুরোধ জানান মমতা। এরপরেই দু’টি জনস্বার্থ মামলা (PIL) দায়ের হয়েছিল হাইকোর্টে।

মামলাকারীদের অভিযোগ ছিল, রাজ্য সরকার একদিকে যখন সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা (DA) দিতে পারছে না, তখন পুজো কমিটিগুলোকে এই অনুদান দেওয়া উচিত নয়।
পাল্টা হলফনামায় দিয়ে রাজ্য জানায়, রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের কোনও মহার্ঘ ভাতা বাকি নেই। তাই এই মামলার গ্রহণযোগ্যতা নেই।
আদালতে রাজ্য এও জানায়, ডিএ এবং পুজোর অনুদান আলাদা দু’টি বিষয়। এ ছাড়া রাজ্য সরকার পুজো কমিটিগুলোকে বিদ্যুৎ বিলে কোনও ছাড় দিচ্ছে না বলেও হলফনামায় জানানো হয়।

নিজেদের হলফনামায় অনুদান প্রসঙ্গে বেশ কয়েকটি যুক্তি দেয় রাজ্য। বলা হয়, সংবিধান অনুযায়ী, রাজ্য সরকার মনে করলে জনগণের জন্য অর্থ বরাদ্দ করতেই পারে। এতে কোনও বাধা নেই। তার পর ইউনেসকোর (Unesco) থেকে দুর্গাপুজোকে হেরিটেজ তকমা দেওয়ার কথা তুলে ধরে রাজ্য এ-ও জানায় এটা শুধু পশ্চিমবঙ্গের নয়, গোটা দেশের জন্য গর্বের বিষয়। সংবিধানের ৫১(এ) ধারা অনুযায়ী, হেরিটেজ রক্ষার দায়িত্ব দেশের প্রত্যেক নাগরিকের।

সেই মোতাবেক রাজ্য সরকারের কাছে প্রত্যাশা করা হয়, তারা যেন এগুলির সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ করে। দুর্গাপুজোর দিনগুলিতে উৎসবকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার স্বার্থেই অর্থ বরাদ্দ করা হয়। কোনও নির্দিষ্ট সম্প্রদায়কে উৎসাহিত করার জন্য নয়।


শেষ পর্যন্ত মঙ্গলবার আদালতের এই রায়ে, পুজো অনুদান নিয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস রাজ্য প্রশাসনের।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *