আজ খবর ডেস্ক:
শহরের ঝলমলে ভিড়ের পাশে স্নিগ্ধ মাটির প্রদীপ হয়ে জ্বলে গ্রাম বাংলার বাড়ির পুজো। সে দিন আর নেই। সেই যৌথ পরিবার এক হয়ে পুজো করার যে ঘরানা, তাও এখন অনেকটাই ফিকে। তবু কিছু পুজো এখনও টিকে আছে।
ঠিক যেমন মেদিনীপুরের (Medinipur) জেলার দাসপুরে খেপুত চক্রবর্তী বাড়ির দুর্গাপূজা (Durga Puja 2022)। এবছর ৩২০তম বছরে পড়লো।


এই পুজো শুরু করেছিলেন শ্রী কৃষ্ণ চক্রবর্তী। খেপুত দক্ষিণ পাড়া গ্রামের দাসপুর ২ নম্বর ব্লকে এই চক্রবর্তী পরিবারের বাস। এই পূজোর বিশেষত্ব হল, মহালয়ার দিন থেকেই শুরু হয়ে যায় চন্ডী মেয়ে পুজো। বলি প্রথার প্রচলন আছে এই পরিবারের পুজোয়। প্রতিমাকে দেওয়া হয় আমিষ ভোগ।

নবমীর দিন ঠাকুরকে দেওয়া হয় বিশেষ ভোগ পান্তা ভাত, সঙ্গে শোল মাছ পোড়া। এই বাড়িতে অখন্ড হোম প্রথারও প্রচলন আছে।
হোম কুণ্ড জ্বালানো হয় সপ্তমীর দিন। একটানা জ্বলতে থাকে আগুন। নবমী তিথির অবসানে তা নেভানো হয়। অষ্টমীতে পরিবারের মহিলারা বিশেষ ব্রতে সামিল হন সকলে মিলে।


চক্রবর্তী পরিবারের সদস্যদের দাবি, মাতৃমুর্তির আরাধনা হলেও এখানে প্রতিমাকে বাড়ির মেয়ের দৃষ্টিতে দেখা হয়। আর সেই কারণেই সম্ভবত মায়ের ভোগে তুলে দেওয়া হয় শোলপোড়া আর পান্তা ভাত।
পরিবারের অষ্টম প্রজন্মের হাত ধরে এবারেও পুজো হচ্ছে এখানে।

আশেপাশের এলাকার মানুষদের কাছে এই পুজোর আকর্ষণ একেবারেই অন্যরকম।
একসঙ্গে বসে পুজো দেখা, পূজোর ভোগ খাওয়া, এবং দশমীর সিঁদুর খেলা। এই সব কিছুতেই অংশগ্রহণ করেন স্থানীয় মানুষজন। পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা সারা বছর বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকলেও পুজো উপলক্ষে বাড়ি হয়ে ওঠে জমজমাট।
মেদিনীপুরের দাসপুরে এমনিতেই প্রচুর মন্দির রয়েছে।
ইতস্তত ছড়িয়ে রয়েছে ভগ্ন মন্দিরের অংশ, ঐতিহাসিক পুরাকীর্তির ধ্বংসাবশেষ।


সেখানে এই চক্রবর্তী বাড়ির পুজো উল্লেখের দাবি রাখে। কারণ এক পা এক পা করে ৩২০বছরে পড়েছে এই বাড়ির পুজো।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *