আজ খবর ডেস্ক:
জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি থেকে দুপুর ১টায় শুরু হয়েছিল মিছিল (Puja Rally2022)। গন্তব্য, রাণী রাসমণি রোড। সেখানে একটি অনুষ্ঠান, যার জন্য প্রশাসনের তরফে প্রায় পনেরশো চেয়ারের ব্যবস্থা করা হয়েছিল।
আর এভাবেই পুজোর আগে পুজো আবহে সামিল হল কলকাতা (Kolkata)।


১লা সেপ্টেম্বরের বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায় আবেগে ভাসল মহানগরী। ইউনেস্কোর (Unesco) ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজ অফ হিউম্যানিটির (Intangible Cultural Heritage Of Humanity) তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে বাঙালির দুর্গাপুজো।
বৃহস্পতিবার ইউনেস্কোর প্রতিনিধিদের শ্রদ্ধা জানিয়ে তাই আগাম উৎসবে মাতলো কলকাতা। শোভাযাত্রায় অংশ নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) সহ রাজ্যের বাকি মন্ত্রীরা, সচিব, আমলারা ও।
রেড রোডে মুখ্যমন্ত্রীর পাশের চেয়ারে দেখা মিলল ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Sourav Ganguly)।

সকাল থেকেই প্রস্তুতি শুরু হয়েছিল সেন্ট্রাল এভিনিউতে। পদযাত্রার নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন দময়ন্তী সেন। জোড়াসাঁকোর স্টার্টিং পয়েন্ট, সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ ও রেড রোড – এই তিনটি জোনে ভাগ করা হয় মূল পদযাত্রা। প্রতিটি জোনের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন ডেপুটি কমিশনার পদমর্যাদার আধিকারিক।
শহরজুড়ে মোট ৩০০০ পুলিশ কর্মী মোতায়েন করা হয়েছিল। ২২জন ডেপুটি কমিশনার (DCP) ও ৪০ জন অ্যাসিট্যান্ট কমিশনার (ACP) ছিলেন। ৩টি কুইক রেসপন্স টিম রাখা হয়েছিল। ৯টি পিসিআর (PCR) ভ্যান থেকে সরাসরি সম্প্রচার করা হয় এই শোভাযাত্রা।
শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারীদের নিরাপত্তার খেয়াল রাখার জন্য গিরিশ পার্ক থেকে ধর্মতলায় ডোরিনা ক্রসিং পর্যন্ত মোট ৫৫টি পুলিশ পিকেট রাখা হয়েছিল। কলকাতা ছাড়াও, সল্টলেক, রাজারহাট, নিউটাউন, হাওড়ার পুজো কমিটিগুলিও এই শোভাযাত্রায় অংশ নিয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রী। এই মিছিলকে রঙিন করে তোলার পরামর্শও দিয়েছেন তিনি। মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা কি ধরণের পোশাক পড়বে, বৃষ্টি থেকে বাঁচতে প্রয়োজনে কী রঙের ছাতা ব্যবহার করবে তারও গাইডলাইন বাতলে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

প্রসঙ্গত, এই শোভাযাত্রায় সকলকে যোগদানের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বলেছিলেন, “কলকাতার সাতটা ওয়ার্ডের মধ্যে দিয়ে মিছিল শুরু হবে। সকলকে অংশগ্রহণের জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। ব্যাক্তিগতভাবে সকলের কাছে আমন্ত্রণপত্র পৌঁছানো সম্ভব নয়, তাই সংবাদ মাধ্যমের মাধ্যমেই সকলকে মিছিলে আসার আর্জি জানাচ্ছি।দুপুর ২টোর মধ্যে সকলে জোড়াসাঁকোয় চলে আসুন। দল, মত নির্বিশেষে সকলে আসুন।”


বলাই বাহুল্য, রঙে-আবেগে-আনন্দে রীতিমত জমকালো হয়ে উঠেছিল এই শোভাযাত্রা। গত কয়েক দিন ধরে দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে চলতে থাকা তীব্র গরমের মধ্যেও আমজনতার উপস্থিতি ছিল যথেষ্ট।

তবে চমকে দিয়েছেন এসএসসি (SSC) বিক্ষোভকারীরা। একটানা ৫৩৩ দিন চলতে থাকা বিক্ষোভের পর এদিন প্রশাসনের অনুরোধে অবস্থান তুললেন তাঁরা।

ফাইল ছবি


যতদিন দাবি না মানা হবে, ততদিন অবস্থান চালিয়ে যাবেন, জানিয়েছিলেন এসএসসি চাকরি প্রার্থীরা। এদিন চাকরি প্রার্থী মঞ্চের তরফে জানানো হয়, কলকাতা পুলিশের থেকে একটি ই–মেল করে ২৯ শে আগস্ট ও ১ লা সেপ্টেম্বর অবস্থান না করার অনুরোধ জানানো হয়েছিল। সরকারি কাজে বাধা দিতে চান নি, তাই পুলিশের অনুরোধ মেনে এই সাময়িক অবস্থান বিরতি।
চলতি সপ্তাহের সোমবার অর্থাৎ ২৯ তারিখ ছিল তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (TMCP) জমায়েত। আর এদিন ছিল ইউনেস্কোকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে মেগা মিছিল। এই এলাকা হাই সিকিওরিটি জোন, তাই এই দু’‌দিন চাকরিপ্রার্থীদের অবস্থানে না বসার অনুরোধ করা হয়েছিল ময়দান থানার তরফে।

এই পদযাত্রার জন্য বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকেই যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়। সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টে পর্যন্ত সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ দিয়ে কোনও বাস, ছোট গাড়ি চলাচল করে নি। ভূপেন বোস অ্যাভিনিউ বন্ধ ছিল সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৩টে পর্যন্ত। সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৩টে পর্যন্ত বিধান সরণি থেকে কোনও গাড়িকে বিডন স্ট্রিট হয়ে আসতে দেওয়া হয় নি। মানিকতলা ক্রসিং থেকে বিবেকানন্দ রোড হয়ে কোনও গাড়ি সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৩টে পর্যন্ত চলাচল করে নি। মহাত্মা গাঁধী রোডে চলাচলকারী গাড়িগুলিকে শিয়ালদহ থেকে এপিসি রোড হয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়।
তবে তাতে কুছ পরোয়া নেই। পুজোর আগে পূজোর আমেজ পেতে রাস্তায় নেমে পড়েছিল প্রায় অর্ধেক কলকাতা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *