আজ খবর ডেস্ক:
“ডিজিটাল ভারত” (Digital India) কি অন্য ক্ষেত্রেও এগিয়ে চলেছে? ক্রমশ সাহসী হচ্ছেন ভারতীয় মহিলারা। সংসার, কেরিয়ার তো আছেই! কিন্তু নিজের শারীরিক সুখ (Physocal Pleasure), যৌন সুখ (Sexual Pleasure) নিয়ে ভাবছেন এ দেশের মেয়েরা।
মনে পড়ে যায় নেটফ্লিক্সের (Netflix) মিনি সিরিজ The Lust Stories এর অন্তর্গত Karan Johar পরিচালিত সেই ছবিটির কথা।
যেখানে নতুন বিয়ের পর স্ত্রী Kiara Advani দিনের পর দিন Orgasm বঞ্চিত। স্বামী Vicky Kaushal সে নিয়ে মোটেও ভাবিত নয়। এদিকে পরিবারের দাবি, এবার একটা সন্তান হোক এই দম্পতির।
ঠিক যেন আর পাঁচটা ভারতীয় পরিবারের ছবি উঠে এসেছিল এই মিনি ফিল্মে (Mini Film)।

“The Lust Stories”- কিয়ারা আদভানি

এবার কেন্দ্রীয় সরকারের এক সমীক্ষায় উঠে এল চমকে ওঠার মত তথ্য।
জাতীয় পারিবারিক স্বাস্থ্য সমীক্ষায় (National Family Health Survey) দেখা যাচ্ছে, ভারতের ১৪টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে গড়ে পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের শয্যাসঙ্গীর সংখ্যা বেশি!
এই সমীক্ষায় আর ও জানা গেছে —- রাজস্থান, হরিয়ানা, চণ্ডীগড়, জম্মু ও কাশ্মীর, লাদাখ, মধ্যপ্রদেশ, আসাম, কেরল, লাক্ষাদ্বীপ, পণ্ডিচেরি ও তামিলনাড়ুতে গড়ে শয্যাসঙ্গীর নিরিখে পুরুষদের থেকে এগিয়ে রয়েছেন মেয়েরা। সবচেয়ে এগিয়ে রাজস্থানের মহিলারা। ওই রাজ্যের মহিলা পিছু শয্যাসঙ্গী প্রায় ৩.১ জন, পুরুষদের সেই সংখ্যা গড়ে ১.৮ জন। মোট ১ লক্ষ পুরুষ এবং ১ লক্ষ ১০ হাজার মহিলার ওপর সমীক্ষা করা হয়।

সমীক্ষায় উঠে আসা এই তথ্যের পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ খুঁজে পেয়েছেন মনোবিদরা। এক ঝলকে দেখে নেওয়া যাক সেগুলো:
১) অল্প বয়সে বিয়ে- আজকের দিনে জীবনে স্থায়িত্ব আসতে আসতে তিরিশ পেরিয়ে যায়। এ দিকে বিয়ে যদি কুড়ি বছরের আশে পাশে হয়, তবে সে ভাবে জীবন উপভোগ করা হয়ে ওঠে না। স্থায়িত্ব আসার পর তাই অনেক মহিলাই পরকীয়ার স্বাদ নিতে চান।
২) ভুল বিয়ে- যাঁর সঙ্গে বিয়ে হচ্ছে তাঁকে পছন্দ না হলেও বাড়ি, সমাজের চাপে বেশির ভাগ মেয়েই সেই পুরুষটিকে বিয়ে করতে বাধ্য হন। স্বাভাবিকভাবেই সেই বিয়ে প্রত্যাশিত শারীরিক ও মানসিক পরিতৃপ্তি দেয় না। তখন কোনও বন্ধুত্ব থেকে হঠাৎ প্রেম হয়ে যেতে পারে।

৩) মানিয়ে নিতে না পারা- জীবনে কঠিন পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে না পেরেও অনেকে পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়েন। পরিবারের সদস্যের অসুস্থতা, মৃত্যু, চাকরি চলে যাওয়া, আর্থিক অনটনে অনেকে পরিবারের বাইরে মুক্তি খোঁজেন। এই সময় কোনও কাছের বন্ধুর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার ঘটনা অস্বাভাবিক নয়।

৪) অভিভাবকত্ব- সন্তানের জন্মের পর জীবনে পরিবর্তন আসে। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে পরিবর্তন, স্পেসের অভাব, দায়িত্ব, কর্তব্যের জেরে অনেকে অবসাদে ভোগেন। কর্মরত মহিলাদের মধ্যে এই প্রবণতা বেশি দেখা যায়। মায়ের দায়িত্ব তাঁরা পালন করলেও বাইরের জগৎ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া, চেহারায় পরিবর্তন, ওজন বেড়ে যাওয়া, আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আগের মত দেখতে না লাগা;
মেয়েদের মধ্যে নিরাপত্তা হীনতা তৈরি করে।

৫) যৌন অতৃপ্তি- পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার অন্যতম কারণ বৈবাহিক জীবনে যৌন অতৃপ্তি।

৬) মনের অমিল- পারিবারিক স্টেটাসে মিল থাকলেও অনেক সময়ই সঙ্গীর সঙ্গে মনের মিল হয়ে ওঠে না। দু’জনের বেড়ে ওঠা, পছন্দ-অপছন্দের ফারাক অনেক সময়ই দূরত্ব গড়ে দেয়। শুধু সম্বন্ধ করে বিয়ের ক্ষেত্রেই নয়, নিজের পছন্দে বিয়ের ক্ষেত্রেও (Love Marriage vs Arranged Marriage) পরবর্তীকালে এটা হতে পারে। বহু দিন ধরে মনের মিল না হলে স্বাভাবিক ভাবেই বিয়ের বাইরে নিজের মনের মানুষটিকে খুঁজে নেওয়ার প্রবণতা দেখা যায়।

৭) গুরুত্বের পার্থক্য- বিয়ের আগে বা বিয়ের সময় অনেকেই নিজেদের জীবনের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেন না। এক সঙ্গে গোটা জীবন কাটাতে হলে একে অপরের গুরুত্ব (Priority of Life) সম্পর্কে স্পষ্ট ভাবে জানা ও সম্মান করা জরুরি। অধিকাংশ সময়ই দেখা দু’জনের জীবনের গুরুত্বের জায়গাগুলো আলাদা। সেখান থেকে শুরু হয় সমস্যা।

৯) কোনও কিছুতেই মিল নেই- ‘‘আমাদের কিছুই মেলে না’’। এমন অভিযোগ প্রায়ই শোনা যায় দম্পতিদের মুখে। এ দিকে হয়তো সব দিক দেখে শুনে, অথবা এক সময়ে একে অপরের প্রতি তীব্র ভাললাগাই আপনাদের এক করেছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ভাল লাগা-খারাপ লাগা সামনে আসতে শুরু করে। তখন বোঝা যায় দু’জন মানুষ আসলে কতটা আলাদা। এখান থেকে দূরত্ব বাড়তে থাকে। যা অনেক সময়ই বিবাহ বহির্ভূত সন্পর্কের জন্ম দেয়।
১০) উত্তেজনার অভাব- সম্পর্ক অনেক সময়ই একঘেয়ে হয়ে ওঠে। একে অপরের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। কেউ আবার সংগীত থেকে প্রত্যাশিত মনোযোগ পান না।

২০১৯ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে তৈরি হওয়া এই কেন্দ্রীয় রিপোর্টে আরও জানা যাচ্ছে, ভারতে বিবাহিত মহিলা পিছু সন্তানের সংখ্যাও যথেষ্ট কমেছে। এর কারণ হিসেবে উঠে আসছে, মহিলাদের পেশাদার কর্মব্যস্ততার কথা। ঘুম থেকে ওঠা থেকে ঘুমোতে যাওয়া পর্যন্ত পেশাগত দায়দায়িত্ব সামলাতেই কেটে যাচ্ছে বেশিরভাগ সময়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *