আজ খবর ডেস্ক:
আয়রন (Iron) আমাদের শরীরের একটি অপরিহার্য উপাদান। যা কোষে অক্সিজেন সরবরাহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আয়রনের অভাব শরীরের রক্তের পরিমাণ কমায় যাকে অ্যানিমিয়া (Anemia) বলা যেতে পারে।
শরীরে আয়রনের অভাব অথবা রক্তাল্পতার কারণে হামেশাই আমরা শারীরিকভাবে অসুস্থ বোধ করি। অথচ বুঝতে পারা যায় না কেন শারীরিক সমস্যা হচ্ছে!
প্রায় প্রত্যেকদিন আমাদের মধ্যে অনেকেই শারীরিক ক্লান্তি (Fatigue), দুর্বলতা (Weakness), বুক ধড়ফড় সহ একাধিক সমস্যায় ভোগেন। আয়রন মানবদেহের জন্য একটি অপরিহার্য উপাদান, এটি কোষে অক্সিজেন সরবরাহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দুর্ভাগ্যবশত, লৌহের অভাব একটি সাধারণ আধুনিক খাদ্যের মধ্যে পাওয়া সবচেয়ে সাধারণ সমস্যাগুলির মধ্যে একটি, পশ্চিমা বিশ্বের 8% পর্যন্ত লোকের অভাবের কারণে অনুমান করা হয়। এক ঝলকে জেনে নিন, শরীরের কোন কোন সমস্যা আসলে আয়রনের অভাবে হয়।
১) ক্রমাগত ক্লান্তি:
অত্যধিক ক্লান্তিবোধ আয়রনের অভাবের প্রাথমিক লক্ষণগুলির মধ্যে একটি। মাঝেমাঝেই শ্বাসকষ্ট, শক্তির অভাব এবং ‘মস্তিষ্কের কুয়াশা’ আসলে আয়রনের অভাবে হয়। অবশ্যই, ক্লান্তির জন্য আরও অনেক কারণ থাকতে পারে, তবে আপনার যদি ঘুমের কোনও বড় সমস্যা না থাকে এবং অন্য কোনও অসুস্থতা না থাকে, তবে আয়রনের অভাব সম্ভাব্য ব্যাখ্যাগুলির মধ্যে একটি।
২) পা নাড়ানোর অভ্যেস:
অস্থির পা সিন্ড্রোম হল (Restless leg syndrome) একটি অস্বস্তিকর অবস্থা যেখানে আপনি আপনার পা নাড়াতে অপ্রতিরোধ্য তাগিদ অনুভব করেন। এমনকী বিছানায় শুয়ে থাকা অবস্থাতেও। এটি ঊরু এবং কাফ মাসলে একটি অদ্ভুত অনুভূতি তৈরি করে। সন্দেহ করা হয় যে আয়রনের ঘাটতির জন্য এটি হয়। কারণ আয়রনের অভাব পেশীতে পৌঁছানো অক্সিজেনের পরিমাণ কমিয়ে দেয়।
৩) বুক ধড়ফড়
আপনি যদি অনুভব করেন যে আপনার হৃদপিণ্ড (Heart) অস্বাভাবিকভাবে দ্রুত বা অনিয়মিত ছন্দে স্পন্দিত হচ্ছে, বিশেষ করে যখন আপনি খুব একটা পরিশ্রমের কাজ না করেন। তাহলে আয়রনের ঘাটতি একটি সম্ভাব্য কারণ। যদি এই ধড়ফড়ানি একটি নিয়মিত ঘটনা হয়, তাহলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
৪) ত্বক ফ্যাকাশে:
রক্তে অক্সিজেনের অভাব ফ্যাকাশে ত্বকের কারণ হতে পারে। বিশেষ করে চোখের নিচের পাতার চারপাশে। আপনার মুখের বিভিন্ন অংশে ত্বকের স্তরে একটি উল্লেখযোগ্য পার্থক্য থাকে তবে এটি আরেকটি প্রমাণ যে আপনার আয়রনের মাত্রা খুব কম।
এরকম হলে রক্তের একটি চেকআপ করে নেওয়া ভাল। নিয়মিত যে খাবার আপনি খেয়ে থাকেন তাতেও পরিবর্তন আনা জরুরি। শরীরে রক্তের পরিমাণ বাড়াতে পারে এমন ধরণের খাবার বেছে নেওয়া উচিত। যেমন, যেমন লাল শাক, কুলেখারা পাতার রস, ডিম, বীজ এবং বাদাম খাওয়ার পরিমাণ বৃদ্ধি করা উচিত।
৫) চুল পড়া:
কম আয়রনের মাত্রা চুলের ফলিকলগুলির ক্ষতি করে। ফলে প্রতিদিন প্রাকৃতিকভাবে ঝরে পড়া চুলের নতুন চুল গজানোর ক্ষেত্রে সমস্যা হয়। দীর্ঘ সময়ের জন্য চুলের ক্ষতি হতে পারে।
৬) অদ্ভুত খাদ্য চাহিদা:
আয়রনের ঘাটতির ফলে আপনি মাটি বা ধাতুর মত অখাদ্য পদার্থের আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়। বাচ্চাদের অনেক সময় চক অথবা মাটি খাওয়ার প্রবণতা থাকে। যা আসলে একটি স্পষ্ট লক্ষণ যে ওই শিশুটির পুষ্টির চাহিদা পূরণ হচ্ছে না।
৭) ঘন ঘন ছোটখাটো অসুস্থতা:
আয়রন একটি স্বাস্থ্যকর ইমিউন সিস্টেমে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যদি প্রায় নিয়মিতভাবে জ্বর, পেট খারাপ, বমি, সর্দি কাশিতে ভুগতে থাকেন তাহলে একটি চেকআপ দরকার।
এই সমস্ত লক্ষণগুলির একাধিক কারণ থাকতে পারে। তবে আপনি যদি বেশ কয়েকটি লক্ষণ চিনতে পারেন তবে শরীরে আয়রনের ঘাটতি আছে কিনা, একবার পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া দরকার।