আজ খবর ডেস্ক:
দিনভর চর্চায় রইলেন তিনি। প্রাক্তন প্রসার ভারতী (Prasar Bharti) সিইও, অধুনা তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ (Rajya Sabha MP of AITC) জহর সরকার (Jawhar Sircar)।
দিনভর বিতরকের পর বিকেল গড়াতেই নতুন হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ (WhatsApp Group) তৈরি করে তাতে যুক্ত করা হল জহর সরকারকে৷ আজ সকালে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল এই প্রাক্তন আইএএসকে (IAS)৷

অনেকদিন ধরেই তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদদের নিয়ে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছিল৷ সাংসদ হওয়ার পর সেই গ্রুপে যুক্ত করা হয়েছিল জহর সরকারকে ৷ ওই গ্রুপের নাম ছিল এআইটিসি আরএস এমপি (Aitc RS MP)৷ কিন্তু শনিবার সকাল থেকে হঠাৎই ছড়িয়ে পড়ে একটি খবর যে ওই গ্রুপ থেকে জহর সরকারকে বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে৷
প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগেই দলের নেতাদের একাংশের দুর্নীতি নিয়ে সরব হয়েছিলেন জহর সরকার৷

সংবাদমাধ্যমে জহর বলেছিলেন, “এক পাশ পচা শরীর নিয়ে ২০২৪-এ বিজেপি-র মোকাবিলা করা কঠিন হবে তৃণমূলের পক্ষে৷”
এর পরেই জহর সরকারকে সাংসদ পদ ছেড়ে দেওয়ার ‘পরামর্শ’ দিয়েছিলেন সৌগত রায়, তাপস রায়ের মত তৃণমূল নেতারা৷ জহর সরকার অবশ্য জানিয়েছিলেন, তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) চাইলে তিনি সাংসদ পদে ইস্তফা দিতে তৈরি৷

এর পরেই দলের শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশে মাঠে নামেন আরেক প্রবীণ নেতা তথা তৃণমূলের রাজ্যসভার মুখ্যসচেতক সুখেন্দু শেখর রায়। দল যে তাঁর মন্তব্য ভাল ভাবে নেয়নি তা জানিয়ে সাংসদকে চিঠি দেন সুখেন্দু শেখার।
জহর সরকার দুর্নীতি নিয়ে সরব হওয়ার কারণেই তাঁকে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে বাদ পড়তে হয়েছে বলে জল্পনা ছড়ায়৷

তবে শনিবার বিকেল গড়াতেই তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদদের নিয়ে ফের নতুন হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি হয়৷ নতুন গ্রুপের নাম দেওয়া হয়েছে এআইটিসি এমপি রাজ্যসভা (AITC MP Rajya Sabha)৷ গ্রুপ তৈরির পর তাতে যোগ করা হয় জহর সরকারের মোবাইল নম্বরও৷
যদিও দিনভর এই বিতর্কের মধ্যে নিশ্চুপ ছিলেন জহর। তৃণমূল সূত্রে খবর, জহর নিজে থেকে পদত্যাগ করেন কীনা, সেদিকে নজর রাখছে তৃণমূল নেতৃত্ব৷ কারণ নিজের বক্তব্যের সপক্ষে সাংসদ যে ব্যাখ্যা দলকে দেন, তাতে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব অসন্তুষ্ট।
বস্তুত রাজ্যসভার সাংসদ ছাড়া, জহর কোনও দলীয় পদে নেই। তিনি মুখপাত্রও নন। তিনি যা বলেছেন, তা দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা অন্য কোনও নেতাকে জানিয়ে বলেননি। স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে বলেছেন। ফলে তিনি যা বলেছেন তা তাঁর নিজস্ব বক্তব্য।
অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের আরেকটি সূত্রের বক্তব্য, জহর সরকার প্রথম থেকেই নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) কঠোর সমালোচক। তাই তাঁকে আরেকটি সুযোগ দেওয়া হল।


আবার জহর সরকারের ঘনিষ্ঠ মহলের অভিযোগ, তাঁকে বলার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। যদিও এই অভিযোগ উড়িয়ে দিচ্ছে দল। তৃণমূল নেতৃত্বের বক্তব্য, হিসাব করে দেখা যাচ্ছে, দলের পক্ষ থেকে গত এক বছরে সবচেয়ে বেশি বলার সুযোগ পেয়েছে‌ন জহরই। তিনি রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন অথবা সুখেন্দুশেখরের থেকেও বেশি সময় বলেছেন।


সবমিলিয়ে রাজনৈতিক মহল মনে করছে আপাতত এই পর্ব মিটলেও, জহর বনাম তৃণমূলের “ঠান্ডা লড়াই” কোন দিকে মোড় নেয় সেটাই এখন দেখার।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *