আজ খবর ডেস্ক:
দশমী থেকেই শুরু হয়েছে বিসর্জনের পালা। চলবে চলতি সপ্তাহের শনিবার পর্যন্ত। তবে একাদশীর দিন সকালে বাবুঘাটে উদ্ধার হল পচা গলা এক মৃতদেহ (Deadbody found at Babughat)। বাঁজা কদমতলা ঘাটের পাড়ে ভেসে এল মৃতদেহ। বিসর্জন দেওয়া প্রতিমার কাঠামোয় আটকে ছিল এক ব্যক্তির পচাগলা দেহ।


ঘটনার খবর পেয়ে পশ্চিম বন্দর থানার (Port West PS) পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের (Post Mortem) জন্য পাঠায়। ওই ব্যক্তির পরিচয় এখনও জানা যায়নি। গঙ্গায় কীভাবে দেহ ভেসে এল, তা নিয়েও রহস্য তৈরি হয়েছে।


জলপাইগুড়ির মালবাজারের প্রতিমা বিসর্জনের ঘটনা ঘিরে এখন ও পর্যন্ত আটজনের মৃত্যু এবং ৪০ জন আহত হওয়ার খবর মিলেছে। সেই ঘটনাকে মাথায় রেখেই প্রতিমা বিসর্জন (Idol Immersion) ঘিরে কড়া নিরাপত্তারয় মুড়ে ফেলা হয়েছে বাবুঘাট চত্বর। ঘাটে ঘাটে রয়েছে প্রচুর পুলিশ। বিসর্জন দিতে আসা কাউকেই গঙ্গার ধারে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। বিসর্জনের পরেই যত দ্রুত সম্ভব প্রতিমার কাঠামো সরিয়ে ফেলা হচ্ছে।

এই পরিপ্রেক্ষিতে নতুন সিদ্ধান্ত নিল কলকাতা পুরসভা (KMC)। গঙ্গা থেকে দ্রুত প্রতিমার কাঠামো তোলার জন্য আগামী বছর থেকে ব্যবস্থা করা হবে আরও বেশি সংখ্যক ভাসান কুলির। গঙ্গায় প্রতিমা বিসর্জনের পরে ক্রেনে করে মূর্টিত কাঠামো তুলে ফেলার সময় দৃশ্য দূষণ হয়। মত অনেকের। পদ্ধতি বদল করতে চাইছে কলকাতা পুরসভা ও বন্দর কর্তৃপক্ষ।


কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim) জানিয়েছেন, “আগামী বছর থেকে প্রতিমা নিরঞ্জনের সময় বেশি করে ভাসান কুলি নেওয়া হবে। তারাই প্রতিমার কাঠামো দ্রুত জল থেকে তুলে নেবেন। তারা সেটিকে পাড়ে তুলে দেবেন। সেখান থেকে পুরসভার কর্মীরা প্রতিমার কাঠামো নিয়ে যাবে অন্যত্র।”


বস্তুত গত কয়েক বছর ধরে ভাসানের যে ব্যবস্থা বাবুঘাট চত্বরে করা হয়েছে তার থেকে অনেকেই মনে করছেন, যে কাঠামোকে মাতৃ জ্ঞানে পুজো করা হয় সেই কাঠামোকে যে ভাবে তুলে ফেলা হয় তা অনেকেরই আবেগে আঘাত করে। ক্রেনে করে তুলতে সময় ও বেশি লাগে। তার থেকে অনেক কম সময়ে নতুন পদ্ধতিতে ভাসান কুলিরা এই কাজ করতে পারবেন। এতে গঙ্গায় জলের দূষণ এবং দৃশ্য দূষণ, দুইই কমবে।

রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের গাইডলাইন মেনে ফুল, মালা সহ পুজোর অন্যান্য সামগ্রী গঙ্গার তীরেই একটি নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলা হবে। এ জন্য কলকাতা পুরসভার পর্যাপ্ত কর্মী, পর্যাপ্ত পুলিশ এবং পর্যাপ্ত পরিকাঠামো রাখা হবে গঙ্গার ঘাটে ঘাটে। শহরের ভিতরে যে জলাশয়গুলি রয়েছে, সেখানে যাতে নিরঞ্জন প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে হয় তার জন্যও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা রাখা হবে বলে জানিয়েছে পুরসভা। একইসঙ্গে কলকাতা পুলিশকেই শুধু নয়, রাজ্য পুলিশকেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আগামী বছর থেকে প্রতিমা নিরঞ্জনের সময় নিয়মের কড়াকড়ি বাড়াতে হবে।


কলকাতায় বেশি বিসর্জন হয় জাজেস ঘাট, বাঁজা কদমতলা ঘাট এবং নিমতলা ঘাটে। কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, এই তিনটি ঘাটে মোট চারটি ক্রেন থাকবে। বাঁজা কদমতলা ঘাটে গঙ্গায় ভাসমান বার্জের উপর একটি ক্রেন থাকবে এবং পাড়েও একটি ক্রেন থাকবে। প্রসঙ্গত দশমীর দিন এই ক্রেন ফস্কে দুর্ঘটনা ঘটেছে। নিমতলা এবং জাজেস ঘাটে পারের ওপর একটি করে ক্রেন থাকবে। জলে প্রতিমা পড়লেই সেই ক্রেন দিয়ে কাঠামো টেনে তোলা হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *