আজ খবর ডেস্ক:
পঞ্চায়েত ভোটকে মাথায় রেখে পুজোর পরে রাজ্যজুড়ে বিজয়া সম্মেলনের (Bijoya Sammelan) আয়োজন করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু ইতিমধ্যেই বিভিন্ন জেলায় এই অনুষ্ঠানকে ঘিরে বিতর্ক দ্বারা বেধেছে। দিন কয়েক আগেই ইকো পার্কে মুখ্যমন্ত্রীর (Mamata Banerjee) বিজয়া সম্মিলনীতে আমন্ত্রণ পাননি বলে দাবি করে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন রাজারহাট-নিউটাউনের তৃণমূল বিধায়ক তাপস চট্টোপাধ্যায় (Tapas Chatterjee)। পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুরে চন্ডিপুরের বিধায়ক, অভিনেতা সোহম চক্রবর্তী (Soham Chakraborty) এবং তৃণমূল মুখপাত্র কুনাল ঘোষের (Kunal Ghosh) সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন এলাকার তৃণমূল কর্মীরা।


এবার ঠিক তেমনই হল প্রয়াত সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের (Subrata Mukherjee) কেন্দ্র বালিগঞ্জে (Ballygunje)। বালিগঞ্জের ফার্ন রোডে তৃণমূলের বিজয়া সম্মিলনী ঘিরে উত্তেজনা ছড়াল। রবিবার সন্ধেয়, কমলা চ্যাটার্জি গার্লস স্কুলে তৃণমূলের (TMC) তরফে বিজয়া সম্মিলনীর আয়োজন করা হয়। বালিগঞ্জের তৃণমূল (TMC) বিধায়ক বাবুল সুপ্রিয় (Babul Supriyo) আমন্ত্রিত ছিলেন। অভিযোগ, অনুষ্ঠান শুরুর আগেই স্কুল ঘিরে ফেলেন বেশ কয়েকজন তৃণমূল কর্মী। আসে পুলিশও। দাঁড় করিয়ে রাখা হয় প্রিজন ভ্যান।

এবার বিজয়া সম্মিলনীতে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ উঠল শহর কলকাতায়। অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ না পেয়ে রবিবার বালিগঞ্জের বিধায়ক বাবুল সুপ্রিয়কে ঘিরে বিক্ষোভ দেখানোর অভিযোগ উঠেছে শাসকদলের একাংশের বিরুদ্ধে। যার জেরে ভেস্তে যায় অনুষ্ঠান। তৃণমূল সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই দুই গোষ্ঠীকে সতর্ক করেছে দক্ষিণ কলকাতা জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।
এদিকে বিক্ষোভে সামিল তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের দাবি, বিধায়ক বাবুল সুপ্রিয়কে এলাকায় দেখতে পাওয়া যায় না। কমলা চ্যাটার্জি গার্লস স্কুলের একটু দূরে, রাস্তাতেই জড়ো হয়েছিলেন এলাকার বেশ কিছু তৃণমূল কর্মী।
বাবুল এসে পৌঁছোনো মাত্র স্লোগান দিতে শুরু করেন তাঁরা।
বাবুলকে ঘিরে “গো ব্যাক”, “দূর হটো” স্লোগান ওঠে।
স্কুলে ঢুকতে না পেরে রাস্তাতেই বিজয়া সম্মিলনী সারেন বিধায়ক-গায়ক। যদিও বাবুলের দাবি, ঘটনায় দলীয় দ্বন্দ্বের কোনও বিষয় নেই। আলোচনা করে বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়া হবে।

বিজেপি ছেড়ে এসে তৃণমূলের টিকিটে বালিগঞ্জের বিধায়ক নির্বাচিত হন বাবুল। প্রয়াত সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের কেন্দ্র বলেই আদতে পরিচিত ছিল বালিগঞ্জ।
জানা গিয়েছে, রবিবার কলকাতার ৬৮ নং ওয়ার্ডে ফার্ন রোডে তৃণমূলের বিজয়া সম্মিলনীর আয়োজন করা হয়েছিল।
এই অনুষ্ঠানের আয়োজন সম্পর্কে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বকে কিছুই জানানো হয়নি বলে অভিযোগ।
সূত্রের খবর, বিক্ষোভকারীদের একাংশ স্থানীয় কাউন্সিলর সুদর্শনা মুখোপাধ্যায়ের (Sudarshana Mukherjee) অনুগামী বলে দাবি করা হয়েছে।


প্রসঙ্গত, এর আগে কলকাতা পুরসভার নির্বাচনের সময় ৬৮ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী কে হবেন, তা নিয়েও দলের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছিল। পরে সুদর্শনা মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে নির্দল প্রার্থী হিসেবে লড়েছিলেন প্রয়াত সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের বোন, তনিমা চট্টোপাধ্যায়।

রবিবারের ঘটনা সম্পর্কে দক্ষিণ কলকাতা জেলা তৃণমূলের তরফে ৬৮ নম্বর ওয়ার্ডের দলীয় কর্মীদের সতর্ক করা হয়েছে বলে খবর।


ঘটনার দিন বিক্ষোভকারীরা নিজেদের কাউন্সিলর অনুগামী বলে দাবি করেন। সূত্রের খবর, সেই সময় বাবুলকে বলতে শোনা যায়, ‘‘এখানে কাউন্সিলরের অনুগামী বলে কেউ নেই। আমরা সকলেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুগামী।’’ যদিও রবিবার এলাকায় ছিলেন না কাউন্সিলর সুদর্শনা। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, তিনি কলকাতার বাইরে রয়েছেন। সোমবার তাঁর কলকাতায় ফেরার কথা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *