আজ খবর ডেস্ক:
২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক আগের বছর মহা ধুমধামে EZCC-তে প্রথম দুর্গাপুজোর আয়োজন করেছিল বঙ্গ বিজেপি (BJP Bengal)।
করোনা আবহে সেই পুজোয় দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ ছিল। কিন্তু ২১এর ভোটের পর থেকেই উৎসাহে খামতি নজরে পড়েছিল অনেকেরই। মুকুল রায় (Mukul Roy), সব্যসাচী দত্ত (Sabyasachi Dutta) সহ অনেকেই তৃণমূলে ফিরে যান। উৎসাহ হারান বিজেপি নেতাদের একাংশ।


চলতি বছর মাত্র কয়েক সপ্তাহের প্রস্তুতিতে পুজোর আয়েজন হয়েছে। বিজেপি সূত্রের খবর, পুজো করলে পর পর তিন বার করতেই হয়। এবার এই পুজোর তৃতীয় বর্ষ।
কিন্তু এখানেই ইতি টানার ঘোষণা করে দিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।

এদিকে আবার এই বছরের পুজোতেই ছক ভেঙেছে বিজেপি। আগেই মহিলা পুরোহিত দিয়ে পুজো করিয়ে “চমক” দেওয়ার কথা বলেছিলেন সুকান্ত মজুমদার। সেই মত নিয়ম ও নিষ্ঠা মেনে পুজো করছেন দক্ষিণ দিনাজপুরের সুলতা।


তবে গেরুয়া শিবিরের পুজো আয়োজনের শুরু থেকেই চোখে পড়েছে ফাঁকা মন্ডপ, অনারম্বর বোধন। উদ্বোধনে সুকান্ত ছাড়া দলের উল্লেখযোগ্য নেতৃত্বের মধ্যে দেখা গিয়েছিল মাত্র তিন জনকে।

ছিলেন সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী, প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি রাহুল সিনহা এবং বিধায়ক তথা মহিলা মোর্চার রাজ্য সাধারণ সম্পাদক অগ্নিমিত্রা পাল। আসেননি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari), প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। দু’জনেই রইলেন কলকাতা থেকে অনেক দূরে। নিজের এলাকা নন্দীগ্রাম রয়েছেন শুভেন্দু আর সপ্তমীর সকালেই দিল্লি চলে গেলেন দিলীপ ঘোষ।

২০২০ সালে বিধানসভা নির্বাচনের (Assembly Election) আগে শুরু হওয়া বঙ্গ বিজেপির এই দুর্গাপুজোর মূল উদ্যোক্তা ছিলেন তখন বিজেপিতে থাকা সব্যসাচী দত্ত, মুকুল রায়রা। ভার্চুয়াল মাধ্যমে পুজোর উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। এসেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও (Amit Shah)।


গত বছর হবে না না করেও কোনও মতে বিজেপির দুর্গাপুজো হয়েছিল। এ বার অবশ্য পুজো নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়নি। সুকান্ত জানিয়ে ছিলেন, শেষ বারের দলীয় পুজো হবে। হিন্দু রীতি অনুযায়ী কোনও ব্রত বা পুজো এক বার শুরু করলে টানা তিন বার করতেই হয়। সেই রীতির বাধ্যবাধকতা মেনেই তৃতীয় ও শেষ বারের পুজোর আয়োজন।


সুকান্ত মজুমদার জানিয়েছেন, পুজো করার বিপুল খরচ বহন করার ক্ষমতা নেই দলের।
বিজেপির দুর্গাপুজোর উদ্বোধন করে সুকান্তবাবু বলেন, “আগামী বছর থেকে বিজেপি আর পুজো করবে না। পুজো করতে প্রতি বছর ১৫ – ১৬ লক্ষ টাকা খরচ হয়। এই বিপুল খরচ জোগাড় করা মুশকিল।”
পাল্টা তৃণমূলের কটাক্ষ, রাজ্য বিজেপির দম ফুরিয়ে এসেছে। তাই বন্ধ হচ্ছে পুজো।

তবে তৃতীয় তথা শেষ বছরের পুজোয় অন্য চমক দিয়েছে বিজেপি। মহিলা পুরোহিত দিয়ে সম্পন্ন হচ্ছে পুজো। সুকান্ত মজুমদার পেশায় অধ্যাপক। দীর্ঘদিন অধ্যাপনা করেছেন গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে। সুলতা, সুকান্তর ছাত্রী ছিলেন।
সুলতা বলেন, ‘‘আমি স্যারকে (বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার) আগেই জানিয়েছি, সব রকম শাস্ত্রীয় রীতিনীতি মেনে পুজো করতে চাই। সে কারণেই যাঁরা আয়োজনের খুঁটিনাটি দেখবেন তাঁদের সঙ্গে আগেই কথা বলে নিয়েছি।’’


গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ছাত্রী সুলতা। বিজেপি রাজ্য সভাপতি নাকি আগেই ঠিক করেছিলেন, কোনও মহিলা পুরোহিতই দলের হয়ে পুজো করবেন।
তবে গেরুয়া শিবিরের অন্দরে অন্য গুঞ্জন চলছে। সুলতার পুরো নাম সুলতা মণ্ডল । একে মহিলা, তায় আবার তিনি ‘অব্রাহ্মণ’ ৷ সুকান্ত মজুমদারের জেলার মেয়ে সুলতার বাস দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুর থানার বাতাসকুড়ি গ্রামে। আর তাতেই আপত্তি বিজেপি নেতাদের একাংশের।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *