আজ খবর ডেস্ক:
ঝাড়খণ্ডের (Jharkhand) তরুণী। বিয়ের পর থাকতেন মালদায়। আছে দু বছরের এক সন্তান। মদ্যপ স্বামীর গুলি গলা ফুঁড়ে বেরিয়ে যায়। উড়ে যায় চোয়াল সহ মুখের নিচের অংশ।
কোনক্রমে প্রাণে বেঁচে যান তরুণী।
ঘটনার পরে তরুণীর ভাই ও প্রতিবেশীরা নিয়ে যান মালদা মেডিক্যাল কলেজে (Malda medical College) নিয়ে যান তাঁকে। কিন্তু, গুলি বের করা ছাড়া আর কিছু চিকিৎসা হয় নি সেখানে। বরং রেফার (Refer) করা হয় কলকাতায় (Kolkata)।
বৃহস্পতিবার দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে সফল অস্ত্রোপচার (Surgery) হল ওই তরুণীর।
শিউরে ওঠার মত ঘটনাই বটে! গলায় গর্ত। চোয়াল বলে কার্যত কিছু নেই। নেই নাকের একটা অংশ, ক্ষতিগ্রস্ত বাঁ চোখ এবং মুখের পুরো বাঁদিক।
তরুণীর পরিবারের অভিযোগ, মেয়েটির স্বামী আরপিএফের প্রাক্তন অফিসার। ১৯ লাখ টাকা পণ বিয়ে হয়েছিল মেয়েটির। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই শুরু হয় অসহ্য শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। দু’বছর আগে একটি সন্তানের জন্ম হয়। কিন্তু তারপরেও থামেনি স্বামীর অত্যাচার। নিয়মিত নেশা করে এসে স্ত্রীকে মারধর করতেন ওই ব্যক্তি। দশেরা উপলক্ষে ঝাড়খন্ড থেকে তরুণীর ভাই এসেছিলেন দিদির কাছে। দিন কয়েক আগেই একদিন সকালে সম্পূর্ণ মদ্যপ অবস্থায় হাতে দেশি কাট্টা বন্দুক নিয়ে প্রথমে মেয়েটির ভাইয়ের ওপর হামলা চালায় ওই ব্যক্তি। পরে নিজের স্ত্রীয়ের গলা লক্ষ্য করে গুলি চালায়।
বৃহস্পতিবার কলকাতার মেক্সিলোফেসিয়াল শল্য চিকিৎসক (Maxillofacial Surgeon) ডাঃ শমীক গোপ অস্ত্রোপচার করেন। প্রথমে ফেসিয়াল রিকনস্ট্রাকশন, তারপরে প্লাস্টিক সার্জারি। আপাতত মুখের ওপর বেশ কয়েকটি সেলাই করা হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে ডাঃ গোপ aajkhobor.com কে বলেন, “মেয়েটির পুরনো ছবির সঙ্গে মিলিয়ে যথাসাধ্য চেষ্টা করা হয়েছে আগের চেহারা দেওয়ার।
কাজটি যথেষ্ট কঠিন ছিল কারণ মানুষের মুখ দিয়েই তাঁর পরিচিতি তৈরি হয়। ওই তরুণীর মুখের একটা অংশ কার্যত ছিলই না। সেটাই আমরা চেষ্টা করেছি ফিরিয়ে দেওয়ার। দিন চারেক পরে সেলাই কাটা হবে।”
জানা গিয়েছে এরপরে মেয়েটির কাউন্সেলিং হবে মনোবিদের সঙ্গে। এখনও ট্রমায় (Trauma) রয়েছেন ওই তরুণী। মুখে অস্ত্রপচার পরবর্তী যে চিহ্নগুলি রয়েছে, তার জন্য আলাদাভাবে স্কিন স্পেশালিস্টের কাছে চিকিৎসা করতে হবে।।
চিকিৎসকদের একাংশের মতে, কলকাতায় এ ধরনের অস্ত্রোপচার নিঃসন্দেহে একটি ব্যতিক্রমী ঘটনা।