আজ খবর ডেস্ক:
ধনতেরাস 2022 (Dhanteras) গত কয়েক বছর ধরে বাংলাতেও ট্রেন্ডিং। শুধু কলকাতা নয়, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বিশেষত উত্তরবঙ্গে এই সময় গয়নার দোকানে উপচে পড়া ভিড় চোখে পড়ে। হাঁড়ি করাই খুন্তি নিলেন পক্ষে একটা চামচ হলেও এই সময় কেনেন গৃহিণীরা। কিন্তু কেন? কারণ জানেন কি?
জ্যোতিষ পঞ্জিকা অনুসারে, এই বছর কার্তিক কৃষ্ণ ত্রয়োদশী তিথি ২২শে অক্টোবর শনিবার সন্ধে ৬:০৩ মিনিট থেকে শুরু হচ্ছে। ত্রয়োদশী তিথি শেষ হবে ২৩শে অক্টোবর সন্ধে ৬:০৪ মিনিটে। আবার উদয় তিথি অনুসারে ২৩শে অক্টোবর ধনতেরাস উদযাপিত হবে। তাই কেনাকাটার জন্য দুটি দিনই শুভ।

পঞ্চাঙ্গ অনুসারে, এই বছর সর্বার্থ সিদ্ধি যোগ ২৩ শে অক্টোবর সকাল ৬.৩২ মিনিটে শুরু হবে এবং দুপুর ২:৩৩ মিনিটে শেষ হবে। সর্বার্থ সিদ্ধি যোগকে বৈদিক জ্যোতিষশাস্ত্রে অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয়। কারণ অনেকেই বিশ্বাস করেন, এতে সমস্ত সিদ্ধি বাস করে। এছাড়াও, এই যোগে রাহুকালের কোনও প্রভাব থাকে না। তাই কেনাকাটার জন্য এটাই সেরা সময়।
জ্যোতিষশাস্ত্র অনুযায়ী, এই দিনে ধন দেবতা কুবের এবং ধন্বন্তরীর পুজো করা হয়। এবার ধনতেরাসের দিন বিশেষ যোগ তৈরি হচ্ছে। ২৭ বছর পর সেই যোগ তৈরি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জ্যোতিষীরা।

হিন্দু ধর্ম (Hinduism) অনুযায়ী, প্রতি বছর কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষের ত্রয়োদশীতে ধনতেরাস পালন করা হয়। সেদিন সোনা (Gold) এবং রুপো (Silver) কিনে থাকেন মানুষ। কারণ ধনতেরাসে সোনা ও রুপো কেনার বিষয়টিকে অত্যন্ত শুভ বলে বিবেচনা করা হয়। যা সুরক্ষা প্রদানের প্রতীক হিসেবে মনে করেন অনেকেই।
ধনতেরাসে, কেউ রুপোর গয়না বা রুপোর তৈরি পাত্র কেনেন। রুপোকে চাঁদের প্রতীক (Symbol of Moon) মনে করা হয়। অন্যদিকে সোনা কিনলে ঘরে অধিষ্ঠান করেন দেবী লক্ষ্মী (Devi Laxmi)।

শাস্ত্র অনুসারে, সমুদ্র মন্থনের সময় ভগবান ধন্বন্তরী এই দিনে তাঁর হাতে অমৃতের কলস নিয়ে আবির্ভূত হন। তাই এই দিনে তাঁর পুজো করা হয়। এছাড়াও, ধনতেরাসে অনেকেই নিজের নিজের বাড়িতে কুবের যন্ত্র, শ্রীযন্ত্র স্থাপন করেন।
বিশ্বাস করা হয়, এতে কুবের দেবতা ও মা লক্ষ্মীর আশীর্বাদ পাওয়া যায়। এছাড়াও, ঝাড়ু এবং ধনে বীজ কেনা শুভ বলে মনে করা হয়। ধনতেরাসের দিন সন্ধেবেলা বাড়ির প্রধান ফটক ও উঠোনে প্রদীপ জ্বালানো হয়। অনেকেই রঙ্গোলি (Rangoli) দিয়ে বাড়ি সাজান। সেই সঙ্গে এই দিনে শুভ সময়ে লক্ষ্মী ও কুবেরের পুজো করলে ধন-সম্পদ ও পরিবারের সমৃদ্ধি বৃদ্ধি পায়।


দীপাবলির (Diwali) দুই দিন আগে ধনতেরাস আসে এবং এই দিনে সোনা ও রুপো, বাসনপত্র, গয়না, জমি এবং যানবাহন কেনাকে শুভ বলে মনে করা হয়।

পুরাণ অনুযায়ী, বিয়ের চতুর্থ দিনে রাজা হিমার পুত্র মারা যাবেন বলে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছিল। তা ভুল প্রমাণ করার প্রতিজ্ঞা করেছিলেন রাজা হিমার পুত্রের স্ত্রী। যমরাজের হাত থেকে স্বামীকে রক্ষার জন্য এক বিশেষ উপায় অবলম্বন করেছিলেন রাজা হিমার পুত্রবধূ। ভবিষ্যদ্বাণী মত রাজা হিমার পুত্রের বিয়ের চতুর্থ দিনে সাপের বেশে এসেছিলেন যমরাজ। সেইসময় ঘরের দরজা কাছে যাবতীয় সোনা ও রুপোর অলঙ্কার এবং প্রদীপ রেখে দিয়েছিলেন। সেই ঔজ্জ্বল্যের জেরে অন্ধ হয়ে গিয়েছিল সাপটি।
শাস্ত্র, পুরাণ, জ্যোতিষ ছেড়ে এবার আসা যাক সোনা-রুপোর দামের বিষয়ে।


কলকাতার খুচরো বাজারে সোনার দাম থাকবে ১০ গ্রাম পাকা সোনার (২৪ ক্যারাট, ১০ গ্রাম) দাম ৫০,৮৫০ টাকা। অন্যদিকে, ১০ গ্রাম গয়না সোনা (২২ ক্যারাট) কিনতে ৪৮,২৫০ টাকা খরচ পড়বে। ১০ গ্রাম হলমার্ক সোনার গয়নার (২২ ক্যারাট) দাম ৪৯,২০০ টাকা থাকবে। অতিরিক্ত হিসেবে জিএসটি দিতে হবে।


কলকাতার খুচরো বাজার রুপোর দাম, এক কিলোগ্রাম রুপোর বাটের জন্য ৫৫,২০০ টাকা খরচ হবে। সঙ্গে জিএসটি (GST) যোগ হবে। এক কিলোগ্রাম খুচরো রুপো কিনতে খরচ পড়বে ৫৫,৩০০ টাকা। তাতেও জুড়বে জিএসটি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *