আজ খবর ডেস্ক:
সকাল ১১ টার পর থেকেই দশমী তিথি শেষ। ফলে, আজ অর্থাৎ বুধবার শুরু হয়ে যাচ্ছে প্রতিমা বিসর্জন (Idol Immersion)। চলবে আগামী শনিবার পর্যন্ত। কলকাতা পুলিশ (Kolkata Police) এলাকার অন্তর্গত পুজো কমিটিগুলি বিসর্জন দিতে পারবেন চলতি সপ্তাহের শনিবার পর্যন্ত। করোনা (Corona) কাটিয়ে বছর দুই বাদে পুরনো ছন্দে ফিরেছে কলকাতা পুজো গুলি (Durga Puja 2022)।
বিসর্জন ঘিরে যাতে কোনও সমস্য না হয় তা নিয়ে যথেষ্ট কড়া কলকাতা পুলিশ। লালবাজার জানিয়েছে, নিরঞ্জন শোভাযাত্রায় যাতে ডিজে (DJ) বা পেল্লায় বক্সে গান বাজানো না হয়, তা দেখবেন পুলিশ আধিকারিকরা।
পুলিশ সূত্রে খবর, শহরে বাড়ির পুজো এবং বারোয়ারি পুজো মিলিয়ে মোট সংখ্যা প্রায় ৪০০০। এর মধ্যে বারোয়ারি পুজো ২৭৫৭টি। বিসর্জনের জন্য থাকছে মোট ৬৮টি ঘাট। তারমধ্যে গঙ্গার ঘাট ২৪টি। বাকিগুলো ঝিল বা পুকুর অথবা আদিগঙ্গার ঘাট। সব ঘাটেই থাকবে পুলিশি ব্যবস্থা। এছাড়াও অধিকাংশ ঘাটে থাকবেন স্বেচ্ছ্বাসেবক এবং বিপর্যয় মোকাবিলা কর্মীরা (Disaster Management Group)।

সব মিলিয়ে ডিএমজি’‌র মোট ৬২টি দল মোতায়েন থাকছে। পুলিশের লঞ্চ দিনভর টহল দেবে গঙ্গায়। ৭টি ঘাটে ওয়াচ টাওয়ার (Watch Tower) থাকছে কলকাতা পুলিশের। ৪টি ব্যস্ততম ঘাটে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন ৩ জন ডিসি পদমর্যাদার পুলিশ অফিসার। মোতায়েন থাকছে মোট ২৫টি স্পিড বোট। গঙ্গায় টহল দেবে রিভার ট্র্যাফিক পুলিশের জেট স্কি।
দশমীতে সাধারণত বাড়ির ঠাকুর বেশি বিসর্জন হয় কলকাতায়। একাদশী থেকে ক্লাবগুলির নিরঞ্জন পর্ব চলতে থাকে। কলকাতা পুরসভা (KMC) সূত্রে খবর, প্রতিমা নিরঞ্জনের জন্য গঙ্গার বিভিন্ন ঘাটে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ক্রেন থেকে স্বেচ্ছাসেবক, সবকিছুর বন্দোবস্ত রাখা হচ্ছে। কোথাও কোনও খামতি রাখতে নারাজ পুরকর্তৃপক্ষ।

প্রতিমা নিরঞ্জনে যাতে গঙ্গা দূষণ না হয় সেদিকেও নজর রাখা হচ্ছে। কলকাতা পুরসভার একাধিক স্বেচ্ছাসেবক একদিকে প্রতিমা নিরঞ্জনে সাহায্য করবেন, অন্যদিকে গঙ্গার দূষণ রুখতে পদক্ষেপ নেবেন। প্রতিমা গঙ্গার ফেলার সঙ্গে সঙ্গে সরিয়ে নেওয়া হবে ফুলমালা সহ নানান উপকরণ। অন্যদিকে প্রতিমার মূল কাঠামো ক্রেন দিয়ে সরিয়ে ফেলা হবে অন্য আরেকটি জায়গায়।

পুলিশ সূত্র অনুসারে, ২৪টি গঙ্গাঘাটে থাকবে রিভার ট্র্যাফিক পুলিশের (River Traffic Police) বাহিনী। বিসর্জন উপলক্ষে আজ, বুধবার থেকেই শহরের ২৩০টি জায়গায় থাকবে বিশেষ পুলিশ পিকেট। বাজেকদমতলা ঘাট এবং রিভার ট্র্যাফিক পুলিশের জেটিতে নৌকা নিয়ে প্রস্তুত থাকবে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর দু’টি অতিরিক্ত দল। ১৫টি ঘাটে চলবে সিসি ক্যামেরার নজরদারি।
বাগবাজার, নিমতলা, বাঁজা কদমতলা এবং গোয়ালিয়র ঘাটে স্পিড বোটে ২টি ডিএমজি টিম মোতায়েন থাকবে। এই টিমগুলি আবার সাঁতারে বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত।

এদিন থেকেই বিসর্জন শুরু হচ্ছে উত্তর ২৪ পরগণার টাকীতেও। ভারত-বাংলাদেশের সীমান্তে ইছামতী নদীর তীরে বহু দর্শনার্থীর ভিড় হয় প্রতিমা বিসর্জন দেখতে। দুই বাংলার মানুষের মধ্যেই উন্মাদনা তুঙ্গে থাকে। তাই বিসর্জন ঘিরে যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে ইতিমধ্যেই দফায় দফায় বৈঠক করেছে বিএসএফ (BSF) ও বিজিবি (BGB)।


টাকী পুরসভা-সহ বসিরহাট পুলিশের তত্ত্বাবধানে গোটা এলাকা নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে। ইছামতীর রাজবাড়ি ঘাট, ঘোষবাবুর ঘাট, সৈয়দপুরের ঘাটে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা। ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী ও বাংলাদেশ সীমান্ত রক্ষী বাহিনী ইছামতীর মাঝ বরাবর পেট্রলিং করবে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে রাজ্য পুলিশের বিশেষ বাহিনী ও মেডিক্যাল টিম।
ইছামতী নদীর মাঝখান থেকে একটি দড়ি দিয়ে সীমারেখা চিহ্নিত করা হয়েছে।


বাংলাদেশের (Bangladesh) প্রতিমা বাংলাদেশের সীমান্তে বিসর্জন হবে। ভারতীয় প্রতিমা ভারতের সীমান্তে বিসর্জন হবে। দুই দেশের প্রতিমার নৌকা ও দর্শনার্থীরা কেউ কারও সীমান্ত অতিক্রম করবে না। সেই সংক্রান্ত নির্দেশিকাও জারি করা হয়েছে বসিরহাট জেলা পুলিশের তরফে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *